লগইন করুন
নিয়ামত দু‘ প্রকারঃ
১. সাধারণ নিয়ামত ও ২. শর্তযুক্ত নিয়ামত
সাধারণ নিয়ামত
যা স্থায়ী সৌভাগ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট। সে নিয়ামত হল ইসলাম ও সুন্নাতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। কেননা ইসলাম ও সুন্নাহ আল্লাহ প্রদত্ত সবচেয়ে বড় নিয়ামত।
ইহকালীন ও পরকালীন সৌভাগ্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর নির্ভরশীল- (ক) ইসলাম (খ) সুন্নাহ ও (গ) দুনিয়া ও আখেরাতে সুস্থতা। ইসলাম ও সুন্নাত এমন এক নিয়ামত যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি। আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা তাঁর নিকট সালাতের মাধ্যমে প্রার্থনা করি এবং এ পথের অনুসারীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করি, যাদের তিনি সর্বোত্তম বন্ধুর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেনঃ
وَ مَنْ يُطِعِ اللهَ والرَّسُولَ فَأُوْلَئٍٍِكَ مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النًبِيَيْنَ وَالصِّدِّيْقِينَ وَالشُّهدَآءِِ وَالصَالٍِحِيْنَ وَحَسُنَ أُوْلَئِكَ رَفِيْقًا. (النساء: 69)
অর্থঃ যারা আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত তারা ঐ ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেনঅ। তারা হলেন, নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলগণ এবং এরাই সর্বোত্তম সঙ্গী।[1]
কুরআনে বর্ণিত এ চার প্রকারের লোকই সাধারণ নিয়ামতের অধিকারী। যাদের উদ্দেশ্য করে আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন :
اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكَمْ نَعْمَتِيْ وَ رَضِيْتُ لَكُمْ الإِسْلامَ دِيْنًا (المائدة:3)
আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম। তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।[2]
এ আয়াতে দ্বীন ইসলাম নামক নিয়ামতকে পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ করে দেয়ার ঘোষণা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ্য। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ঈমানের নির্ধারিত সীমা (ফরজ, সুন্নাত ও আইন কানুন) রয়েছে। যে তা পরিপূর্ণ করল সে ঈমান পরিপূর্ণ করল।[3]
দ্বীন হল আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়ত, যা তাঁর আদেশ-নিষেধ ও ভালবাসার সমন্বয়কে বুঝায়। যে নিয়ামত দ্বারা মুমিনদের বিশেষিত করা হয়েছে, তা হল ইসলাম ও সুন্নাতের নিয়ামত। এটা এমন নিয়ামত যা অর্জিত হলে প্রকৃত সন্তুষ্ট ও খুশি হওয়া উচিত। আর আল্লাহর নিয়ামতের উপর খুশি হলে আল্লাহ খুশি হন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِِهِ فَبِذلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُوْنَ. (يونس:58)
আপনি বলে দিন, আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের উপর সকলেরই আনন্দিত হওয়া উচিত। এটা ঐ সম্পদ হতে বহুগুণ উত্তম যা তারা সঞ্চয় করছে।[4]
সালফে সালেহীনের মতে, আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ হল, ইসলাম ও সুন্নাহ। ঊভয়ের মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করার নামই হল অন্তরের সজীবতা। যখনই মানুষের মাঝে উভয়টা সুদৃঢ় হবে, তখনই হৃদয় অত্যধিক আনন্দিত হবে এবং সুন্নাতের সংস্পর্শে ধন্য হবে।[5]
শর্তযুক্ত নিয়ামত
যেমন, শারীরিক সুস্থতা, সম্মান বৃদ্ধি পাওয়া, অধিক সন্তান হওয়া ও পূণ্যবতী স্ত্রী লাভ করা ইত্যাদি।
আর এ জাতীয় নিয়ামত পাপী, পূণ্যবান, মুমিন, কাফির সকলেই পেয়ে থাকে। যখন এ কথা বলা হয় যে, কাফিরকে আল্লাহ তাআলা এ নিয়ামত দান করেছেন, তখন তা সত্য বলে গণ্য হবে। আর শর্তযুক্ত নিয়ামত কাফির ও পাপীকে আস্তে আস্তে দেয়া হয়।[6]
[2]মায়েদা : ৩
[3] বুখারী - কিতাবুল ঈমান :১/৯
[4] ইউনুসঃ ৫৮
[5]ইজতিমাউল জুয়ুশিল ইসলামিয়াহ আলা গাজওয়াল মুআত্তালা ওয়াল জাহমিয়া- ইবনে কাইয়্যিম (র): ২/৩৩-৩৬
[6] ইজতিমাউল জুয়ুশিল ইসলামিয়াহ আলা গাজওয়াল মুআত্তালা ওয়াল জাহমিয়া - ইবনে কাইয়্যিম (র): ২/৩৬