আল ইরশাদ-সহীহ আকীদার দিশারী خاتمة في التحذير من البدع - বিদআত থেকে সতর্ক করণার্থে একটি পরিশিষ্ট শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
حكم البدعة في الدين - দীনের মধ্যে বিদআতের বিধান

দীনের ব্যাপারে সকল প্রকার বিদআতই হারাম ও গোমরাহী। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَة»

‘‘তোমরা দীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাকবে, কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতের পরিণাম গোমরাহী বা ভ্রষ্টতা’’।[1] রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ»

‘‘যে ব্যক্তি আমাদের দীনের মধ্যে এমন নতুন বিষয় তৈরী করবে, যা তার অন্তর্গত নয়, তা প্রত্যাখ্যত হবে’’।[2] তিনি আরও বলেন,

«مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ»

‘‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে, যার মধ্যে আমাদের আদেশ নেই, তা আমলকারীর উপর প্রত্যাখ্যাত হবে’’।[3]

উপরের হাদীছগুলোর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয় যে, দীনের মধ্যে প্রতিটি নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতই হারাম ও গোমরাহী। তবে এ হারাম বিদআতের প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। বিদআতের কিছু কিছু প্রকার প্রকাশ্য কুফুরীর নামান্তর। যেমন কবরবাসীদের নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশ্যে কবরের চতুর্দিকে কাবা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় তাওয়াফ করা, কবরের উদ্দেশ্যে পশু যবাই করা, নযর-মান্নত পেশ করা, কবরবাসীর কাছে দু’আ করা, তাদের কাছে আশ্রয় চাওয়া ইত্যাদি। এমন কিছু বিদআতও রয়েছে, যা শিরক না হলেও মানুষকে শিরকের দিকে নিয়ে যায়। যেমন কবরের উপর গম্বুজ তৈরী করা, কবর উঁচু করা, পাকা করা, কবরের উপর কিছু লেখা, কবরের কাছে সালাত  আদায় করা, দু’আ করা ইত্যাদি। এমন কিছু বিদআতও আছে, যা শিরক বা তার মাধ্যমও নয়, তবে সঠিক আকিদার পরিপন্থী ও বহির্ভুত। যেমন খারেজী, কাদরীয়া ও মুর্জিয়াদের আকিদাহ সমূহ। তা ছাড়া এমন কিছু বিদআত রয়েছে, যা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত যেমন বৈরাগী হয়ে সংসার ত্যাগ করা, সূর্য্যের উত্তাপে দাড়িয়ে রোজা পালন করা এবং যৌন উত্তেজনা দমন করার জন্য খাসী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।


[1]. সহীহ: আবু দাউদ, হা/৪৬০৭।

[2]. সহীহ বুখারী, হা/২৬৯৭ ও সহীহ মুসলিম, হা/১৭১৮, সুনানে আবূ দাউদ ৪৬০৬।

[3]. সহীহ মুসলিম, হা/১৭১৮।