আল ইরশাদ-সহীহ আকীদার দিশারী الأصل الخامس: الإيمان باليوم الآخر - পঞ্চম মূলনীতি: শেষ দিবসের প্রতি ঈমান শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
صفة سؤال الملكين على ما وردت به الأحاديث - হাদীছের বর্ণনা মোতাবেক ফেরেশতা দু’জনের প্রশ্নের ধরণ-পদ্ধতি

বারা ইবনে আযিবের হাদীছে এসেছে, মৃত ব্যক্তির রূহ তার দেহে ফেরত দেয়া হয় এবং তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আগমন করে। সহীহ বুখারী ও মুসলিমের কাতাদার সূত্রে আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

      «إن الميت إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتُوُلِّيَ عنه أَصْحَابُهُ إِنَّهُ لَيَسْمَعُ خفق نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيقْعَدَانه، فَيَقُولانِ لَهُ: مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ مُحَمَّدٍ ؟ فأما المؤمن فَيَقُولُ: أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ، قال فَيقول انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قد أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الْجَنَّةِ» قَالَ رسول الله صلى الله عليه وسلم: «فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا، وَأَمَّا الْكَافِرُ و الْمُنَافِقُ، فَيَقُولان له ما كنت تقول في هذا الرجل فيقول لا أدري: كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ. فَيَقولان له: لا دَرَيْتَ وَلا تَلَيْتَ، ثمَّ يُضْرَبُ بِمِطارق مِنْ حَدِيدٍ بَيْنَ أُذُنَيْهِ، فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ عليها إِلا الثقَلَيْنِ» (بخارى:1338)

‘‘মৃত ব্যক্তিকে যখন কবরে রাখা হয় এবং তার সাথীগণ দাফনের কাজ শেষ করে যখন সেখান থেকে চলে যায় তখন মৃত ব্যক্তি তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। এ সময় তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আগমন করেন এবং তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করেন, এ ব্যক্তি অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তোমার ধারণা কী? মুমিন ব্যক্তি বলে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল। তখন তাকে বলা হয় তুমি তোমার জাহান্নামের ঠিকানা দেখো। আল্লাহ তা‘আলা তা পরিবর্তন করে জান্নাতে তোমার ঠিকানা নির্ধারণ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয় স্থানকেই দেখতে পায়।

আর মৃত ব্যক্তি যদি কাফের বা মুনাফেক হয়ে থাকে তাহলে তাকেও ফেরেশতাদ্বয় জিজ্ঞাসা করবেন, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার ধারণা কী? সে উত্তর দিবে আমি কিছুই জানি না। মানুষেরা যা বলত আমিও তাই বলতাম। অতঃপর তাকে বলা হবে, তুমি জান নাই এবং শিখো নাই। অতঃপর লোহার একটি মুগুর দিয়ে তার উভয় কানের মাঝখানে এমন জোরে আঘাত করা হয়, যাতে সে ভয়ানকভাবে চিৎকার করতে থাকে। জিন এবং মানুষ ব্যতীত পৃথিবীর অন্যান্য সকল বস্তুই সে চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পায়’’।

আবু হাতিমের সহীহ গ্রন্থে অন্য একটি হাদীছে এসেছে, নীল চোখ বিশিষ্ট দু’জন কালো আকৃতির ফেরেশতা আগমন করে। তাদের একজনের নাম নাকীর এবং অন্যজনের নাম মুনকার।

মুসনাদে আহমাদ এবং আবু হাতিমের সহীহ গ্রন্থে আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদীছে এসেছে, ‘‘মৃত ব্যক্তিকে যখন কবরে রাখা হয় এবং তার সাথীগণ দাফনের কাজ শেষ করে যখন সেখান থেকে চলে যায় তখন মৃত ব্যক্তি তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। সে মুমিন হয়ে থাকলে তার মাথার নিকট সালাত  এসে হাজির হয়, রোযা এসে উপস্থিত হয় ডান দিকে, যাকাত এসে উপস্থিত হয় বাম দিকে এবং সাদকা, সিলায়ে রেহেমী বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখার নেকী, সৎকাজ, সৃষ্টির প্রতি দয়া-অনুগ্রহ ইত্যাদি এসে উপস্থিত হয় তার দু পায়ের নিকট। এ সময় তার মাথার দিক থেকে কবরের ফেরেশতা আগমন করতে চাইলে সালাত  বলে আমার দিক থেকে আসার কোনো রাস্তা নেই, ডান দিক থেকে আসতে চাইলে রোযা আমার দিক থেকে আসার কোনো সুযোগ নেই, বাম দিক থেকে আসতে চাইলে যাকাত বলে আমার দিক থেকে আসার কোনো পথ নেই, অতঃপর তার দুই পায়ের দিক থেকে আসতে চাইলে দান-খয়রাত, সিলায়ে রেহেমী, সৎকাজ, মানুষের প্রতি সুন্দর আচার-আচরণ, দয়া-অনুগ্রহ ইত্যাদি বলে আমার দিক থেকে আসার কোনো রাস্তা নেই। অতঃপর তাকে বলা হয়, তুমি বসো। মৃত ব্যক্তি তখন উঠে বসে। এ সময় তার সামনে সূর্যাস্তের ছবি উপস্থিত করা হয়। অতঃপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়, তোমাদের নিকট এই যে ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছিল, তার সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তার সম্পর্কে তুমি কী সাক্ষ্য প্রদান করতে? মৃত ব্যক্তি তখন বলে, আমাকে ছাড়ো, আমি সালাত  পড়বো। ফেরেশতা তখন বলেন, অচিরেই তোমাকে সালাত  পড়তে দেয়া হবে। তবে তোমাকে এখন যে প্রশ্ন করা হচ্ছে, তার জবাব দাও। তোমাদের নিকট যে ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছিল, তার ব্যাপারে তুমি কী বলতে? তার ব্যাপারে তুমি কী সাক্ষ্য দিতে? মুমিন ব্যক্তি তখন বলে তিনি হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি হলেন আল্লাহর রসূল, আল্লাহর পক্ষ হতে তিনি সত্য দীন নিয়ে এসেছেন। তাকে তখন বলা হয়, এ আকীদা-বিশ্বাসের উপর তুমি জীবিত ছিলে, এর উপরই তুমি মৃত্যু বরণ করেছো এবং এর উপরই তোমাকে পুনরুত্থিত করা হবে ইনশা-আল্লাহ। অতঃপর তার জন্য জান্নাতের একটি দরজা খোলা হবে এবং বলা হবে, এ হলো তোমার ঠিকানা। এসব নেয়ামত তোমার জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাতে তৈরি করে রেখেছেন। এতে তার আনন্দ, খুশি ও সুখ-শান্তি আরো বৃদ্ধি পায়।

অতঃপর তার সামনে জাহান্নামের একটি দরজা খুলে দেয়া হয় এবং তুমি আল্লাহর নাফরমানী করতে তাহলে এটি হতো তোমার ঠিকানা। এতে তার আনন্দ ও খুশি আরো বৃদ্ধি পাবে। অতঃপর তার কবরকে সত্তর হাত প্রশস্ত করা হবে এবং তাকে আলোকিত করা হবে। পরিশেষে যা দিয়ে তার দেহ সৃষ্টি করা হয়েছে, তা দিয়ে পুনরায় তাকে সৃষ্টি করা হবে এবং তার রূহকে পবিত্র রূহসমূহের মধ্যে স্থান দেয়া হবে। ফলে সে পাখির আকৃতিতে জান্নাতের বৃক্ষসমূহের মধ্যে বিচরণ করতে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ وَيُضِلُّ اللَّهُ الظَّالِمِينَ وَيَفْعَلُ اللَّهُ مَا يَشَاءُ﴾

‘‘আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদারদেরকে ইহকাল ও পরকালে মজবুত কথার উপর প্রতিষ্ঠিত রাখবেন এবং যালেমদেরকে করবেন পথভ্রষ্ট। আর আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন’’। (সূরা ইবরাহীম: ২৭)

আর কাফেরের ব্যাপারে কথা হলো, ফেরেশতা যখন তার মাথার নিকট থেকে আসবে, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতা পাবেনা, ডান দিক থেকে আসলেও কোনো বাধা থাকবে না, বাম দিক থেকে আসলেও না এবং তার দুই পায়ের দিক থেকে আসলেও কোনো বাধা থাকবে না। অতঃপর বলা হবে, বসো। সে তখন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে উঠে বসবে। অতঃপর বলা হবে যেই ব্যক্তিকে তোমাদের নিকট পাঠানো হয়েছিল, তার ব্যাপারে তুমি কী বলতে? কাফের তখন বলে, কোন্ ব্যক্তি? ফেরেশতা বলবে, যিনি তোমাদের মধ্যে ছিলেন। সে তার নাম বলতে পারবেনা। অতঃপর তাকে বলা হবে, তিনি তো ছিলেন মুহাম্মাদ। কাফের তখন বলবে, জানিনা, লোকদেরকে কিছু একটা বলতে শুনেছি। আমিও মানুষের মত বলেছি। অতঃপর তাকে বলা হবে, এ অবস্থাতেই তুমি জীবিত ছিলে, এ অবস্থাতেই তুমি মৃত্যু বরণ করেছো এবং এর উপরই তোমাকে পুনরুত্থিত করা হবে, ইনশা-আল্লাহ।

অতঃপর তার জন্য জাহান্নামের একটি দরজা খোলা হবে। বলা হবে, এটি তোমার ঠিকানা এবং এ শাস্তিগুলো আল্লাহ তোমার জন্য তাতে প্রস্ত্তত করে রেখেছেন। এতে তার দুঃখ-দুর্দশা আরো বৃদ্ধি পাবে। অতঃপর জান্নাতের একটি দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তাতে যেসব নিয়ামত প্রস্তত করা হয়েছে, তা দেখিয়ে তাকে বলা হবে, তুমি যদি আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করতে তাহলে এ হতো তোমার ঠিকানা। এতে তার দুঃখ-কষ্ট ও দুর্দশা আরো বেড়ে যাবে। অতঃপর তার কবরকে এমন সংকীর্ণ করে দেয়া হবে যে, কবরের চাপে তার এক পার্শ্বের পাজরের হাড্ডী অন্যপার্শ্বের পাজরের হাড্ডীর মধ্যে ঢুকে যাবে। এটিই হবে তার সংকীর্ণ জীবন, যে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيرًا قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَٰلِكَ الْيَوْمَ تُنسَىٰ﴾

‘‘আমার পক্ষ হতে তোমাদের কাছে সৎ পথের নির্দেশ আসলে যে ব্যক্তি আমার সেই নির্দেশ মেনে চলবে সে বিভ্রান্ত হবে না এবং দুঃখ-কষ্ট পাবে না। আর যে ব্যক্তি আমার যিকির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য হবে দুনিয়ায় সংকীর্ণ জীবন এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, হে আমার রব! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? দুনিয়ায় আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। তিনি বলবেন, এভাবেই তো আমার আয়াত তোমার কাছে এসেছিল। কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে। এভাবেই আজ তোমাকেও ভুলে যাওয়া হচ্ছে’’। (সূরা তোহা: ১২৩)[1]

উপরোক্ত হাদীছগুলো এবং অনুরূপ অর্থে অন্যান্য হাদীছ থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়:

(১) মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সাথে সাথে প্রশ্ন করা হয়। এতে আবুল হুযাইল, মির্রিসী এবং তাদের অনুরূপ ঐসব বিদআতীদের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা বলে উভয় ফুৎকারের মধ্যবর্তী সময়ে প্রশ্ন করা হবে।

(২) কবরে প্রশ্ন করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা দু’জনের নাম নাকীর ও মুনকার। এতে ঐসব মু‘তাযিলার প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা বলে এ নামে ফেরেশতাদের নামকরণ করা ঠিক নয়। তারা হাদীছে বর্ণিত منكر শব্দের ব্যাখ্যা এভাবে করেছে যে, তা দ্বারা প্রশ্ন করার সময় ফেরেশতাদের বিকট আওয়াজ উদ্দেশ্য। আর نكير দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ফেরেশতাদের তিরস্কার করা ও ধমক দেয়া।

(৩) কবরে প্রশ্ন করার সময় মৃত ব্যক্তির রূহ তার দেহে ফেরত দেয়া হয়। তাকে বসানো হয় এবং কথা বলানো হয়। এতে যাহেরী মাযহাবের অন্যতম ইমাম আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযমের প্রতিবাদ করা হয়েছে। কেননা তিনি উপরোক্ত বিষয়গুলো অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি যদি তার কথা দ্বারা দুনিয়ার জীবনের অনুরূপ হায়াত ফেরত দেয়ার কথা নাকোচ করে থাকেন, তাহলে ঠিক আছে। কেননা মৃত ব্যক্তির রূহ তার দেহে রূহ ফেরত দেয়া পার্থিব জীবনে দেহের মধ্যে রূহ ফিরে দেয়ার অনুরূপ নয়। তবে কোনো কোনো দিক বিবেচনায় মৃত্যুর পর দেহের মধ্যে রূহ যখন ফিরে আসবে তখন দুনিয়ার জীবনে দেহের মধ্যে তা যে অবস্থায় ছিল এবং দেহের সাথে তার সম্পর্ক যত গভীর ছিল ফিরে আসার পর তার অবস্থা পূর্বের চেয়ে পূর্ণতম হবে। অনুরূপ পুনরূত্থান দিবসে নতুনভাবে মানুষের পুনর্বার সৃষ্টি এ পার্থিব জীবনের সৃষ্টির মতো নয়। যদিও তা হবে দুনিয়ার জীবনের চেয়ে পূর্ণাঙ্গতর; বরং এ নশ্বর জগৎ, বারযাখী জগৎ এবং কিয়ামত দিবসের প্রত্যেকটি স্থানের হুকুম ও অবস্থা হবে ভিন্ন ভিন্ন। এ জন্যই নবী করীম সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, কারো কারো কবর প্রশস্ত করে দেয়া হবে, প্রশ্ন করা হবে এবং অনুরূপ অন্যান্য বিষয়ের সংবাদ দিয়েছেন। যদিও যমীন পরিবর্তন হয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে চলে যায় না। মোটকথা রূহ সমূহ দেহে ফেরত দেয়া হয় এবং দেহ থেকে তা বিচ্ছিন্নও হয়।


[1]. ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ হাদীছটিকে হাসান বলেছেন, দেখুন: আহকামুল জানায়েয, (১৯৮-২০২)।