লগইন করুন
উত্তর : আমাদের দীন কোন বিশৃঙখলার দীন নয়। বরং আমাদের দীন হলো শৃঙখলা, ন্যায়-নীতি, ও শান্তি-নিরাপত্তার দীন। মিছিল-লংমার্চ করা মুসলিমদের কাজ নয়। মুসলিমগণ কোনদিন এ কাজকে চিনতো না। ইসলাম ধর্ম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির ধর্ম। এতে বিশৃঙখলা, গোলযোগ ও ফিতনা-ফাসাদের কোন স্থান নাই।
এসকল ভ্রান্ত পদ্ধতি ছাড়াই শারঈ পন্থায় আবেদন করার মাধ্যমে অধিকার আদায় করা সম্ভব।
মিছিল-লংমার্চ করার দ্বারা বিভিন্ন ফিতনা-ফাসাদ ছড়িয়ে পড়ে, হতে থাকে খুনা-খুনি ও জান-মালের ক্ষতি। সুতরাং এ কাজগুলো জায়েয নয়।[1]
[1]. জাযায়েরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেওয়ার পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে কিছু প্রসিদ্ধ অতি উৎসাহীর প্রভাব রয়েছে।
‘শারহুত ত্বহাবী’ সিরীজের লেখক ২/১৮৫ তে জাযায়েরের জাবহাতুল ইনফাযের (মূলতঃ তা হলো জাবহাতুল দিমার বা ইসলাম ধ্বংসের ফ্রন্ট) প্রশংসায় বলেন, ‘যখন উলামা মাশায়খগণ বললেন, আমরা লংমার্চ করব। তখন ত্রিশ লক্ষ লোক তাদের সাথে একমত হয়ে রাস্তায় বের হলো। তারা বলল আল্লাহর হুকুমত চাই। সাত লক্ষ মহিলাও বের হলো যাদের দাবি ছিল ‘তোমরা কুরআনী আইন দ্বারা শাসন করো। আমরা হিজাবের প্রবর্তন চাই এবং নারী পুরুষের অবাধ মেলমেশার প্রথা নিপাত যাক।’’ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
বলো তোমরা সত্যবাদী হলে প্রমাণ পেশ করো। (সূরা আল-বাক্বারাহ ২: ১১১)
যে সকল দাঈ ও নামধারী মাশায়খরা নারীদের মিছিল-লংমার্চ করার অনুমোদন দিয়েছে তাদের নাম আমাদের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে, আমরা তাদেরকে সতর্ক করছি এবং তাদের থেকে সতর্ক করছি। তারা তো ফিতনা ও মুছিবাতেরই দাঈ।
তার অপর একটি কথা শুনুন তিনি এক জুম‘আর খুত্ববায় বলছেন, (যার হাতে আমার জীবন তার শপথ করে বলছি, জাযাইরে এক দিনে হিযাব পরিহিতা সাত লক্ষ মুসলিম মহিলা রাস্তায় বের হয়েছিল তাদের দাবি ছিল যেন আল্লাহর শারী‘আত অনুযায়ী বিচার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।’’ দেখুন ‘মাদারিকুন নাযার পৃ. ৪৭৬। নিঃসন্দেহে তার এই কথাগুলো বিশৃঙ্খলার প্রতি সমর্থন ও সাহায্যই বুঝায়। নতুবা কোথায় তার পক্ষ থেকে এসবের বিরোধিতা।
আমি বলছি : কীভাবে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের পরিসংখ্যান করা হলো? আল্লাহর পথ বাদ দিয়ে এভাবে বাড়াবাড়ি-কঠোরতার মাধ্যমে কোথায় যাচ্ছ?
তোমারা মহিলাদেরকে বের হওয়ার অনুমতি দাও কীভাবে?
কীভাবে মুসলিমদের মাঝে ফিতনা ও বিশৃঙ্খলার অনুমোদন প্রদান করো?
অথচ তোমাদের দাবিতে তোমরাই সে সকল দাঈ, মুরুববী এবং পথনির্দেশক যারা বাস্তবতা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখো!
তোমরা কি আল্লাহ তা‘আলার এই কওল বা কথা পড়ো না? আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الأُولَى
তোমরা (মহিলারা) ঘরে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়্যাতের (যুগের) মত বের হয়ো না।
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে সলিহ আল উছায়মিন (রহ.) এর ‘জারীদাতুল মুসলিমীন’ নামক ম্যাগাজীনের ৫৪০ সংখ্যা প্রকাশ ১১ মুহাররাম হিজরী ১৪১৬ সাল। তিনি বলেন ‘জাযায়িরে বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহে অনেক সংখ্যক মুসলিম নিহত হলো এবং এ ঘটনায় বহু সংখ্যক মুসলিম ক্ষতিগ্রস্থ হলো।
আমাদের দায়িত্ব হলো সাধ্যমত উপদেশ প্রদান করা। আপনারা এখন এটাও খুব ভালো করে জানেন যে, এসকল বিশৃংখলা বিদ্রোহের সাথে ইসলামী শারী‘আত এবং সংশোধন বা কল্যাণের কোন দূরতম সম্পর্কও নাই। এসকল বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলাতে আমরা মোটেও কোন সাহায্য সহযোগিতা করব না। এ পথ ছাড়াও সংশোধনের অনেক পথ রয়েছে। তবে হাঁ, এসকল বিশৃঙ্খলাতে নেপথ্যে অনেক বিদেশী (মুসলিমদের শত্রুরা) কলকাঠি নাড়ছে।
বি.দ্র: শায়খ উছাইমিন (রহ.) এর ফাতওয়া উল্লেখিত বিশৃঙ্খলায় তাদের সাহায্য প্রদান করার পরে। জাযায়িরে বিদ্রোহে তারা সাহায্য করেছিল হিজরী ১৪১১ সনে। আমার জানা মতে তারা এরপর এ মত থেকে আর প্রত্যাবর্তন করেনি।
সুতরাং কোন দুই ফিরকার মাঝে কোন ফিরকহ উত্তম? তারা যে দাবি করে সেই ফিকহুল ওয়াকি‘র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা নাকি বিদগ্ধ আলিমগণ।
কেমন হবে তাদের এবং তাদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ লোকদের অবস্থা কি ভয়াবহ হবে! আল্লাহ তা‘আলা তাদের গল্পকারদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন। তারা তাদের সকল অনুসারীদের পাপরাশি পিঠে বহন করে নিয়ে যাবে ।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
مَنْ دَعَا إِلَى ضَلَالَةٍ، كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الْإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ، لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا
যে ব্যক্তি কোন ভ্রষ্ট পথে আহবান করবে তাহলে তার উপরও উক্ত ভ্রষ্ট কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ পাপ তারও হবে। পূর্বোক্ত ব্যক্তিদের থেকে কোন পাপ কমানো হবে না। (সহীহ মুসলিম হা/২৬৭৪ তে আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীছের অংশ বিশেষ।)