লগইন করুন
উত্তর : সাধারণ জনগণের অন্তরে শাসকদের ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করা চোগলখোর লোকদের কাজ: যারা বিশৃঙখলা সৃষ্টি করে মুসলিম সমাজে ভাঙন সৃষ্টি করতে চায়।[1]
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগের মুনাফিকেরাও নাবী ছল্লাবল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মুসলিম সমাজ তথা ছাহাবী (রা.) দের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করার জন্য এরকম অপচেষ্টা চালাতো। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন’’
{ لا تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنْفَضُّوا }
যারা আল্লাহর রাসূলের কাছে আছে তোমরা তাদের জন্য খরচ করো না যতক্ষণ না তারা সরে যায়। (সূরা আল-মুনাফিকুন ৭)
সুতরাং শাসক ও প্রজার মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টির অপতৎপরতা বিশৃঙখলা সৃষ্টিকারী মুনাফিকদের কাজ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন.
{ وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ }
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না, তারা বলে, আমরা তো কেবল সংশোধনকারী। (সূরা আল-বাকবারাহ আয়াত নং ১১)
মুসলিম শাসক এবং জনগনের জন্য কল্যাণ কামীগণ এর বিপরীত। তারা প্রচেষ্টা করেন শাসক এবং প্রজার পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টিা করতে, ঐক্য সংহতি প্রতিষ্ঠা করতে এবং সকল প্রকার মতানৈক্য মতপার্থক্য থেকে নিরাপদ থাকতে।
[1]. এরা হলো ঐ শ্রেণির লোক যারা নিজেরা আনুগত্য পরিহার করুক বা না করুক ইমামের আনুগত্য পরিত্যাগ করার জন্য জনগনকে প্ররোচনা দেয়। ইসলামী বিদ্বানগণ এ প্রকার লোকদেরকে ‘‘আল-ক‘দীয়্যাহ’’ মতবাদের অনুসারী বলেছেন। ইবনু হাজার আল-‘আসক্বালানী (রহ.) ভ্রষ্ট ফিরকা সমূহের পরিচয় প্রদানের ক্ষেত্রে এ ফিরকা প্রসঙ্গে বলেন, আল- কব’দীয়্যাহ ‘‘ফিরকা হলো ঐ সকল লোক যারা সরাসরি ইমামদের আনুগত্য পরিহার করেনা কিন্তু অন্যদের নিকট ইমামদের আনুগত্য পরিহার করাকে শোভনীয় ভাবে উপস্থাপন করে। (হাদইউস সারি মুক্বাদাদামা ফাতহুল বারী পৃ. ৪৫৯)
‘‘আল-ক’ দীয়্যাহ’’ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ক’ দীয়্যাহ খারিজী হলো ঐ সকল লোক করা শাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে বৈধ মনে করে না। তবে তাদের সাধ্যানুযায়ী তারা শাসকদের বিরোধিতা করে, লোকজনকে তাদের মতের দিকে আহবান করে এবং জনগনকে শাসকের আনুগত্য পরিত্যাগ করার প্রতি প্ররোচিত করে। (তাযিবুত তাহযীব খ. ০৮ পৃ. ১১৪)
‘‘আল-ক’দীয়্যাহ’’ হলো একটি খারিজী ফিরকা। সুতরাং আপনারা মনে করবেন না যে শাসকের বিরুদ্ধে যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে শুধু তারাই খারেজী’’।
ইবনু হাজার (রহ.) ‘‘হাদইউস সারী’’ নামক গ্রন্থের ৪৬০ নং পৃষ্ঠায় আকীদাগত দিক থেকে নিন্দিত ও সমালোচিত কিছু ব্যক্তি প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি উক্ত আলোচনায় ইমরান ইবনে হাওয়ানে সম্পর্কে বলেন যে, তিনি কদীয়্যাহ খারিজী ছিলেন।
ক’দীয়্যাহ সম্পদায় অন্যান্য খরিজীদের থেকে বেশী মারাত্মক। কেননা শাসকদের বিরুদ্ধে সমালোচনা জনসাধারণের মাঝে তাদের ব্যাপারে হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানো বেশি প্রভাব সম্পন্ন হয়। বিশেষত যদি কোন বাগ্মী ব্যক্তি আহলুস সুন্নাহর মুখোশ পরে মানুষকে ধোঁকা দেয়, তাহলে তা আরো বেশি মারাত্মক হয়।
ইমাম আবু দাউদ (রহ.) ‘‘মাসাইলুল ইমাম আহমাদ (রহ.)’’ নামক গ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আয যঈফ (রহ.)র প্রসঙ্গে বলেন, তিনি বলেছেন যে ক’দিয়্যাহ খারিজীরা অন্যান্য খারিজীদের থেকে বেশি নিকৃষ্ট। পৃ. ২৭১।