লগইন করুন
উত্তর : এটি ঘৃণ্য, নিন্দিত গোঁড়ামীপূর্ণ (অন্ধ অনুকরণ)। (ইসলামে এ কাজ) জায়েয নয়।[1]
আল-হামদুলিল্লাহ আমরা আলিম ও দাঈগণকে ভালোবাসি। কিন্তু তাদের কেউ কোন মাসআলায় ভুল করলে আমরা তা দলীল প্রমানসহ বর্ণনা করি। দলীল সহ মতামত খণ্ডন করার দ্বারা মহববত ভালোবাসার কোন ত্রুটি হয় না। মর্যাদা ও ব্যাক্তিত্বকেও খাটো করা হয় না। ইমাম মালিক (রহ.) বলেন,
ما مِنَّا إلا رادٌ ومردودٌ عليه؛ إلا صاحب هذا القبر
একমাত্র এই কবরবাসী অর্থাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া আমাদের প্রত্যেকের মতামতই খণ্ডনযোগ্য।[2]
আমরা যদি কোন আলিম বা বিদ্বানের মতামত খণ্ডন করি তাহলে এর অর্থ এই নয় যে আমরা তার সাথে শত্রুতা পোষণ করছি বা তার সম্মানহানী করছি। আমরা শুধু হক বর্ণনার উদ্দেশ্যে তাদের দালীলিক পর্যালোচনা করি। এই জন্য জনৈক আলিম তার সহযোগীদের সমালোচনা করার সময় বলতেন ‘‘অমুক ব্যক্তি আমাদের বন্ধু তবে হক আমাদের নিকট তার চেয়েও ঘনিষ্টতর বন্ধু। এটাই সমালোচনার সহীহ পদ্ধতি।[3]
কোন আলিম কোন মাসআলায় ভুল করলে তার মতামত খণ্ডন করাকে আপনারা শত্রুতা পোষণ বা মানহানী করণ মনে করবেন না। বরং প্রত্যেক যুগেই পরস্পর বন্ধুত্বের সূত্রে আবদ্ধ আলিমগণও একে অপরের মতামত খণ্ডন করেছেন। আমাদের জন্য কোন আলিমের ভুল শুদ্ধ সবই অন্ধের মত গ্রহণ করা জায়িজ নয়। বরং এটা তা তা‘আছছুব বা অন্ধ অনুকরণের শামিল।
একমাত্র রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই এমন ব্যক্তি যার প্রত্যেক কথাই গ্রহণযোগ্য, কোন কথা অগ্রহণযোগ্য নয়। এর কারণ হলো তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত দাঈ। তিনি প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে কোন কথা বলেননি। আর অন্য দাঈ বা আলিমের অবস্থা হলো তারা ভুলও করেন আবার সঠিকও করেন। উম্মাহর সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তিবর্গ, মুজতাহীদিনদের অবস্থাও এমনই তারা ভুলও করেন আবার সঠিক মতেও উপনিত হন।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া আমাদের কেউই মাছুম বা নিষ্পাপ নয়।
আমাদের এটা জানা উচিত। কোন ব্যক্তির মহববতে ভুল, বিষয়ে সাপোর্ট করা উচিত নয়। আমাদের উপর ওয়াজিব হলো ভুল সম্পর্কে বর্ণনা করা।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (দীন হলো কল্যাণ কামিতা। আমরা (সাহবীগণ বললাম) কার জন্য? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন আল্লাহ, তার কিতাব তার রসূল মুসলিম নেতৃবর্গ ও মুসলিম জনসাধারণের জন্য।[4]
ভুল উল্লেখ করা সকলের জন্য কল্যাণ কামিতার শামিল। পক্ষান্তরে ভুল ত্রুটি উল্লেখ না করা নছীহত বা কল্যাণকামিতার নীতি বিরুদ্ধ।
[1]. মুহাম্মাদ সুলতান আল-খুজানদী তার ‘হালিল মুসলিম মুলযামুন বিইত্তিবায়ি মাযহাবিম মু’আইয়্যান মিজাল মাযাহিবিল আরবা’আহ’ বা মুসলিমদের উপর কি ৪ মাযহাবের যে কোন একটি অনুসরণ করা ওয়াজিব? নামক গ্রন্থে মোল্লা আলী আল-কারী আল হানাফী (রহ.) এর থেকে উল্লেখ করেন’’ মুসলিম উম্মাহর কোন ব্যাক্তির জন হানাফী, মালিকী শাফিঈ বা হাম্বালী হওয়া ওয়াজিব নয়। বরং আলিম নন এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব হলো কোন আহলুয যিকির বা আলিমের নিকট জিজ্ঞাসা করে জেনে নেওয়া। আর প্রসিদ্ধ ৪ ইমাম আহলুয যিকিরের অন্তর্ভুক্ত হবে। বলা হয়ে থাকে যে ব্যক্তি আলিমের অনুসরণ করবে সে মৃত্যু পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে। প্রত্যেক ব্যক্তিই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করার জন্য আদীষ্ট। (পৃ. ৫৮, তাহকীক : আল-হেলালী)
আমি বলেছি : শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমীয়া (রহ.) এর নিকট থেকে এরকম একটি মত রয়েছে। (৩৫নং প্রশ্ন সংশস্নীষ্ট টীকা দ্রষ্টব্য)
ইমাম শাফি‘ঈ (রহ.) বলেন ‘‘কারো সামনে সুন্নাহ স্পষ্ট হয়ে গেলে কোন ব্যক্তির কথায় তার জন্য সুন্নাহকে পরিত্যাগ করা জায়েয নয় (ইবনুল কইয়্যিম, ই‘লামুল মুওয়াকিঈন খ.০১,পৃ. ০৭)।
[2]. (আলবানী, ছিফাতু সলাতিন নাবিইয়িন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পৃ. ২৬ টীকা নং ০৩ প্রকাশনায়, আল মাকতাবাতুল ইসলামী হিজরী ১৪০৩। এবং আজলূনী এটি বর্ণনা করেছেন কাশফুল খফা পৃ. ১৯৬১)
[3]. আবু ইসমাঈল আল হিরাবীর মতমত খন্ডণে শাখুল ইসলাম ইমাম ইবনুল কায়্যিম আল-জাওয্যিাহ (রহ.) এ কথা বলেন (মাদারিজুস-সালিকীন খ. ০৩ পৃ. ৩৯৪)।
[4]. সহীহ, মুসলিম হা/৪৪।