লগইন করুন
সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ লাগার সাথে সাথে এ সালাত শুরু করতে হয়। সূর্য গ্রহণ এবং চন্দ্র গ্রহণ -এর সালাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, কোন লোকের মৃত্যুর কারণে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহ তাআলার দু’টি কুদরতী নিদর্শন। তাই তোমরা যখন সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ হতে দেখবে তখন তোমরা দাঁড়িয়ে যাবে এবং সালাত আদায় করবে। (বুখারী: ১০৪১)।
এ সালাত আদায় করার পদ্ধতি: আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল (স)-এর সময় একবার সূর্য গ্রহণ হলো। তখন আল্লাহর রাসূল (স.) লোকদেরকে নিয়ে (দু'রাকআত) সালাত আদায় করলেন। সালাতে তিনি দীর্ঘ সময় কিয়াম করলেন, অতপর দীর্ঘক্ষণ রুকুতে থাকলেন। এরপর তিনি আবার উঠে (সালাতে) দাঁড়ান এবং দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য (দ্বিতীয়বারের কিয়াম) প্রথমবারের কিয়ামের চেয়ে অল্প স্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকু করলেন এবং এ রুকুও দীর্ঘ করেন। তবে তা প্রথম রুকর চেয়ে অল্প স্থায়ী ছিল। অতপর তিনি সিজদা করেন এবং সিজদায়ও দীর্ঘক্ষণ থাকেন। এরপর তিনি প্রথম রাকআতে যা যা করেছিলেন দ্বিতীয় রাকআতেও তাই করেছিলেন। সূর্য যখন প্রকাশিত হয় তখন তিনি সালাত শেষ করেন। এরপর তিনি (স.) লোকজনের উদ্দেশ্যে খুৎবা দেন। (বুখারী: ১০৪৪)। সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্র গ্রহণের সালাতের আদায়ের এটিই পদ্ধতি।
এ সালাতের বিধিবিধানের সারসংক্ষেপ:
(১) সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের সময় আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা উচিত, সাথে সাথে দু'আ ও যিকির এবং তওবা ইস্তিগফার করা আবশ্যক,
(২) এ সালাত মসজিদে জামাআতের সাথে আদায় করবে,
(৩) সূর্য গ্রহণ লাগার সাথে সাথে লোকজনকে ডেকে সালাতে নিয়ে যাবে,
(৪) এ সালাতে আযান ও ইকামত নেই,
(৫) এ সালাত দু'রাকআত,
(৬) প্রথম রাকআতে সূরা ফাতিহার পর একটি লম্বা সূরা পড়বে,
(৭) কিরাআত উচ্চৈঃস্বরে পড়া সুন্নাত,
(৮) রুকু, সিজদা, রুকূ থেকে উঠার পর এবং দুই সিজদার মাঝে লম্বা সময় কাটাবে,
(৯) প্রথম রাকআতে রুকূ থেকে উঠে সামিআল্লাহ হুলিমানহামিদা এবং রাব্বানা লাকাল হামদ্ বলার পর আবারো সূরা ফাতিহা পড়বে এবং আরো একটি দীর্ঘ কিরআত পড়বে,
(১০) প্রথম রাকআতের তুলনা দ্বিতীয় রাকআতের সময় একটু কম লাগাবে,
(১১) প্রথম রাকআতে সূরা আনকাবূত এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা রূম কিংবা সূরা লুকমান পড়া সুন্নাত,
(১২) এ সালাতে দুই রাআতে চারটি রুকূ ও চারটি সিজদা রয়েছে,
(১৩) সালাম ফেরানোর পর লোকজনকে একটি হৃদয়গ্রাহী খুৎবা শোনাবে, যতক্ষণ সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণ শেষ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সালাত এবং খুৎবায় মশগুল থাকা উচিত।