লগইন করুন
ব্যক্তি নবী ও তাঁর মর্যাদা এবং হুরমতের ওসীলা গ্রহণকে যারা বৈধ মনে করেন তারা নিম্নে বর্ণিত দলীলসমূহ দ্বারা তাদের ধারণার সত্যতা প্রমাণ করার চেষ্টা করে থাকেন।
প্রথম দলীল:
কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে ইয়াহূদীদের অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন:
﴿ وَلَمَّا جَآءَهُمۡ كِتَٰبٞ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ مُصَدِّقٞ لِّمَا مَعَهُمۡ وَكَانُواْ مِن قَبۡلُ يَسۡتَفۡتِحُونَ عَلَى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ فَلَمَّا جَآءَهُم مَّا عَرَفُواْ كَفَرُواْ بِهِۦۚ فَلَعۡنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ ٨٩ ﴾ [البقرة: ٨٩]
‘‘যখন তাদের (ইয়াহূদীদের)নিকট আল্লাহর এমন কিতাব এসে পৌঁছলো, যা তাদের নিকট থাকা কিতাবে (বর্ণিত বিষয়) এর সত্যায়ন করে, অথচ তারা ইতোপূর্বে তাদের কিতাবে বর্ণিত নবীর শুভাগমনের কথা ব’লে (অদূর ভবিষ্যতে আওছ এবং খযরজ গোত্রীয়) কাফিরদের উপর বিজয় কামনা করতো। অতঃপর যখন তাদের কাছে সেই পরিচিত কিতাব এসে পৌঁছলো, তখন তারা তা অস্বীকার করে বসলো। অতএব অস্বীকারকারীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত’’।[1]
রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ বৈধ বলার দাবীদারগণ বলেন: উক্ত আয়াতে বর্ণিত {وَ كَانُوْا مِنْ قَبلُ ...عَلَى الَّذِيْنَ كَفَرُوْا} এ-অংশ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের পূর্বে মদীনার আওছ ও খযরজদের সাথে ইয়াহূদীদের যুদ্ধ বাধলে তারা রাসূলের মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ করে ওদের উপর বিজয়ী হওয়ার জন্য দো‘আ করতো। অত্র আয়াতে আল্লাহ তাদের এ-ওসীলা গ্রহণের বিষয়টিকে প্রশংসামূলকভাবে বর্ণনা করায় এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম, মর্যাদা ও হুরমতের ওসীলা গ্রহণ করে দো‘আ করা বৈধ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়।[2]
তাদের এ-দলীলের জবাব:
বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থে এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে মোট দু’টি ব্যাখ্যা বর্ণিত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে:
أن يهودا كانوا يستفتحون على الأوس و الخزرج برسول الله صلى الله عليه وسلم
‘‘ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাধ্যমে আওস ও খযরজদের উপর বিজয় কামনা করতো’’।[3] অপরটি হচ্ছে:
يستنصرون بخروج محمد صلى الله عليه و سلم على مشركي العرب
‘‘ইয়াহূদীরা নবী মুহাম্মদ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনের মাধ্যমে আরবের মুশরিকদের উপর বিজয় কামনা করতো’’।[4]
এ-দু’টি ব্যাখ্যার মধ্য হতে প্রথমটির দ্বারা বাহ্যত সমাজে প্রচলিত ওসীলার বৈধতা প্রমাণিত হলেও দ্বিতীয়টি দ্বারা তা প্রমাণিত হয় না, কেননা, দ্বিতীয়টিতে রয়েছে-তারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের ওসীলায় বিজয়ের জন্য দো‘আ করতো, তাঁর মর্যাদার ওসীলায় নয়। যার অর্থ দাঁড়ায়: তিনি আগমন করলে তারা তাঁর অনুসারী হয়ে ভবিষ্যতে তাদের শত্রুদের উপর বিজয়ী হবে। আর প্রথমটির দ্বারা মর্যাদার ওসীলার কথা বাহ্যত বুঝা গেলেও সাহাবা, তাবেঈ ও তাফসীরকারকগণ তা বুঝেন নি। কেননা, এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় আনসারদের বরাতে ইয়াহূদীদের যে-সব বক্তব্য বর্ণিত হয়েছে, তাতে দ্বিতীয় অর্থেরই সমর্থন পাওয়া যায়। আনসারদের বর্ণনানুযায়ী তারা তাদের শত্রুদের বলতো:
(أن نبيا سيبعث الأن نتبعه قد أظل زمانه فنقتلكم معه قتل عاد و إرم...)
‘‘একজন নবী অচিরেই প্রেরিত হবেন, আমরা তাঁর অনুসরণ করবো, যার আগমনের সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে, তখন আমরা তাঁর সাথে হয়ে তোমাদেরকে ‘আদ’ ও ‘ইরম’ জাতির ন্যায় পাইকারীভাবে হত্যা করবো’’।[5]
বিশিষ্ট তাবেঈ আবুল ‘আলিয়া (রহ.) এর দৃষ্টিতে তারা তাদের এ ওসীলায় বলতো:
اللهم ابعث هذا النبي الذي نجده مكتوبا عندنا حتى نعذب المشركين ونقتلهم
‘‘হে আল্লাহ! আমরা যাতে মুশরিকদেরকে শাস্তি দিতে ও হত্যা করতে পারি, সে-জন্যে আমাদের কিতাবে আমরা যে নবীর বর্ণনা পাই, আপনি তাঁকে প্রেরণ করুন’’।[6]
উক্ত উদ্ধৃতিসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, উক্ত আয়াতের এ অংশ দ্বারা কোনোভাবেই রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ বৈধ হওয়ার অর্থ গ্রহণ করা যায় না। আর ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার প্রথম ব্যাখ্যার দ্বারা বাহ্যত এটি বুঝা গেলেও আসলে এর দ্বারা বাহ্যিক সে অর্থ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। বরং তিনি যে কথাটি বলতে চেয়েছেন তা হলো: ইয়াহূদীরা আওস এবং খযরজ বংশের লোকদেরকে বলতো: আজ হয়তো আমরা তোমাদের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছি, তবে অচিরেই একজন নবীর আগমন ঘটবে, তখন আমরা তাঁর অনুসরণ করে তোমাদের উপর যুদ্ধে বিজয়ী হবো। আমাদের অনেকের মাঝে ব্যক্তি রাসূল বা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার ওসীলায় দো‘আ করে কিছু কামনা করার যে রীতি রয়েছে, ঠিক সেভাবে তারা সমাগত ব্যক্তি রাসূল বা তাঁর মর্যাদার ওসীলা করে আল্লাহর নিকট তাঁর আগমনের পূর্বে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো বিজয় কামনা করে কোনো দো‘আ করে নি। সে-জন্য ইমাম ইবনে কাছীর এ-আয়াতের অর্থ বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন:
(أي وكانوا من قبل مجيء هذا الرسول بهذا الكتاب يستنصرون بمجيئه على أعدائهم من المشركين إذا قاتلوهم يقولون إنه سيبعث نبي في آخر الزمان نقتلكم معه قتل عاد و إرم.)
‘‘অর্থাৎ এ কিতাবসহ এ নবীর আগমনের পূর্বে যখন মুশরিকদের সাথে তাদের যুদ্ধ হতো তখন তারা সে নবীর আগমনের ওসীলা করে (ভবিষ্যতে) বিজয় কামনা করতো। তারা বলতো: নিশ্চয় অচিরেই শেষ যুগে একজন নবী প্রেরিত হবেন, তাঁকে সাথে করে আমরা তোমাদেরকে ’আদ’ ও ‘ইরম’ জাতিকে আল্লাহ যেমন ধ্বংস করেছিলেন সেভাবে ধ্বংস করবো’’।[7]
উল্লেখ্য যে, তারা যে তাদের কিতাবে বর্ণিত কিতাব ও নবীর আগমনের প্রতি ঈমান আনয়নের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, সে জন্য অত্র আয়াতে আল্লাহ তাদের প্রশংসা করেছেন। সে নবীর ওসীলায় দো‘আ করার জন্য মূলত তাদের প্রশংসা করা হয় নি। প্রতিক্ষিত সে কিতাব ও নবীর আগমনের পর তারা যখন ঈমান আনয়ন করে নি, তখন আল্লাহ অত্র আয়াতে তাদের সমালোচনাও করেছেন।
উক্ত বর্ণনাসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আসলে উক্ত আয়াত দ্বারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণের বৈধতা প্রমাণিত হয় না। কাজেই যারা এর দ্বারা তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, তারা ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছেন[8]।
দ্বিতীয় দলীল:
মক্কার কাফিরগণ সত্যের প্রতি হিংসা ও শত্রুতাবশত বলেছিল: ‘‘হে আল্লাহ মুহাম্মদের দ্বীন যদি আপনার নিকট থেকে প্রদত্ত সত্য দ্বীন হয়ে থাকে, তা হলে আপনি আমাদের উপর আকাশ থেকে পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করুন অথবা আমাদের উপর মর্মন্তুদ শাস্তি নাযিল করুন।’’[9]
আল্লাহ তাদের এ দো‘আর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ বলেন :
﴿ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِيهِمۡۚ ﴾ [الانفال: ٣٣]
‘‘আপনি তাদের মাঝে থাকাবস্থায় আল্লাহ কখনই তাদেরকে শাস্তি দেবেন না ’’।[10] যারা ব্যক্তি রাসূল বা তাঁর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ বৈধ বলে মনে করেন তারা বলেন: এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মক্কার কাফিররা ব্যক্তি রাসূল বা তাঁর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ না করেও তিনি মক্কায় থাকার ওসীলায় তারা আল্লাহর সমূহ শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাঁর কারণে আল্লাহ তাদের উপর আযাব নাযিল করা থেকে বিরত রয়েছেন। কাফিররা যদি রাসূলের ওসীলা গ্রহণ না করেও তাঁর মর্যাদার ওসীলায় বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারে, তা হলে আমরা তাঁর ওসীলা গ্রহণ করে বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারবো না কেন?
তাদের এ-দলীলের জবাব:
কতিপয় কারণবশত এ আয়াত দ্বারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওসীলায় দো‘আ করা জায়েয বলে প্রমাণ করা যায় না। কারণগুলো নিম্নরূপ:
১. কাফিররা যদি রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামের ওসীলা গ্রহণ করার ফলে আযাব থেকে রক্ষা পেতো, তা হলে এমন কথা বলা যেতো। কিন্তু তারাতো তা করে নি। এতে প্রমাণিত হয় যে, তাদের আযাব থেকে রক্ষা পাবার মূল কারণ রাসূলের মর্যাদার ওসীলা নয়। বরং অন্য কোনো কারণবশত তারা আযাব থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
২. তাদের উপর আজাব নাজিল না হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলা পূর্ব থেকে এ মর্মে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন যে, কোনো জনপদের অস্বীকৃতির কারণে তাদের মাঝে তাদের নবী থাকাবস্থায় তাদেরকে পাইকারী আযাব দ্বারা ধ্বংস করবেন না। আল্লাহর এই পূর্ব সিদ্ধান্ত না হলে অবশ্যই তিনি কাফিরদের দো‘আ কবুল করে তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দিতেন। রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদাই যদি কাফিরদের আজাব থেকে বাঁচার মূল ওসীলা হতো, তা হলে তো তিনি মক্কা থেকে চলে আসার পরপরই তাদের উপর শাস্তি এসে যেতো। কিন্তু তা তো আসে নি। এতে প্রমাণিত হয় যে, তাদের শাস্তি থেকে রক্ষা পাবার মূল কারণ রাসূলের ওসীলা নয়, বরং আল্লাহর উপর্যুক্ত পূর্ব সিদ্ধান্ত এবং আল্লাহর এ-জাতীয় সিদ্ধান্ত যে শুধু আমাদের রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যাপারেই ছিল, তা নয়, বরং এটি ছিল সকল নবীদের উম্মতের ব্যাপারে আল্লাহর একটি চিরাচরিত নিয়ম।[11] কাওমে ‘আদ, ছামূদ ও লূত্ব ইত্যাদি জাতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও দেখা যায় তাদের নবীগণ যতদিন তাদের মাঝে ছিলেন, ততদিন তাদের উপর আজাব আসে নি। তাঁরা তাদের জাতি থেকে দূরে চলে যাওয়ার পর তাদের উপর আল্লাহর আজাব নাজিল হয়েছিল।
৩. আল্লাহর এ কর্মকে আমরা যদি ওসীলা হিসেবে গণ্য করি, তবুও এতে রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সত্তা বা তাঁর মর্যাদার ওসীলা গ্রহণ করা আমাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে না। কেননা, কোনো কর্ম আল্লাহর জন্য বৈধ হয়ে থাকলেও তা আমাদের জন্য বৈধ হয়ে যাওয়া জরুরী হয়ে যায়না। উদাহরণস্বরূপ শপথের কথা বলা যায়। আল্লাহর পক্ষে তাঁর যে কোনো সৃষ্টির নাম নিয়ে শপথ করা জায়েয; কিন্তু আমাদের জন্য তা জায়েয হওয়া তো দূরের কথা, তা শির্কে আকবার হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
উক্ত কারণসমূহের দিক লক্ষ্য করলে প্রমাণিত হয় যে, কোনো ভাবেই এ-আয়াত দ্বারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম, হুরমত ও মর্যাদার ওসীলা গ্রহণের বৈধতা প্রমাণ করা যায় না।
তৃতীয় দলীল:
‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-বলেন:
«لَماَّ اقْتَرَفَ أَدَمُ الْخَطِيْئَةَ قَالَ : يَا رَبِّ أَسْأَلُكَ بِحَقِّ مُحَمَّدٍ لِمَا غَفَرْتَ لِيْ...»
‘‘আদম-আলাইহিস সালাম-যখন অন্যায় করলেন তখন তিনি বলেন: হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার নিকট মুহাম্মদের অধিকারের ওসীলায় ক্ষমা ভিক্ষা করছি...’’।[12]
রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকার, মর্যাদা ও জাতের ওসীলা গ্রহণ করে দো‘আ করা বৈধ বলে দাবীদারগণ বলেন:এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওসীলা গ্রহণ করে দো‘আ করা বৈধ। আর সে-জন্যেই আদম (আলাইহিস সালাম) তাঁর অধিকারের ওসীলা গ্রহণ করে দো‘আ করেছিলেন।
তাদের এ দলীলের খণ্ডন:
এ-হাদীসটি যদিও রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকারের ওসীলা গ্রহণের বৈধতা প্রমাণ করে, তবে দু’টি কারণে এ-হাদীসটি গ্রহণযোগ্য নয়:
প্রথম কারণ:
ইমাম হাকিম (রহ.) এ-হাদীসটিকে বিশুদ্ধ বলে দাবী ক’রে থাকলেও অন্যান্য হাদীস বিশেষজ্ঞগণ এ-হাদীসটিকে মিথ্যা ও বানোয়াট হাদীস বলে মন্তব্য করেছেন। যেমন প্রখ্যাত হাদীস বিশেষজ্ঞ ইমাম যাহাবী বলেন:
(إنه حديث موضوع ؛لأن في سنده عبد الله بن مسلم ، و لا أدري من ذا ؟ و عبدالرحمن واه.)
‘‘এ-হাদীসটি মাওদু‘ বা জাল। কারণ, এর সনদে ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মুসলিম নামে এক বর্ণনাকারী রয়েছে, এ লোকটি কে? তা আমি জানিনা। এর সনদে ‘আব্দুর রহমান নামে অপর এক ব্যক্তি রয়েছে, যার ব্যাপারে কিছুই জানা যায় নি’’।[13]
ইমাম ইবনে হাজার ‘আসক্বালানী বলেন:
‘‘এ-হাদীসটি বাতিল হাদীসের অন্তর্গত।[14] তিনি বলেন:এ-হাদীসের বর্ণানাকারীদের মধ্যে একজনের নাম হচ্ছে ‘আব্দুল্লাহ, যিনি ইমাম লাইছ, মালিক ও ইবনে লাহী‘আঃ এর নামে হাদীস তৈরীর অভিযুগে অভিযুক্ত, এ ব্যক্তির হাদীস লেখার যোগ্য নয়। ইমাম হাকিমের ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ হয় যে, তিনি তাঁর মুসতাদরাক গ্রন্থে (৩/৩৩২) ‘আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ এর অপর একটি হাদীস বর্ণনা করে সেটিকে সহীহ বলেন নি, বরং সেখানে বলেছেন: ইমাম বুখারী ও মুসলিম এ ব্যক্তিকে গ্রহণযোগ্য মনে করেন নি। এটি তাঁর একটি পরস্পর বিপরীতমুখী বক্তব্য। একস্থানে এ ব্যক্তিকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন এবং অপর স্থানে তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করেছেন’’।[15]
দ্বিতীয় কারণ:
এ হাদীসের বক্তব্য কুরআনের সম্পূর্ণ বিপরীত। এ হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, আদম আলাইহিস সালাম মুহাম্মদ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকারের ওসীলায় স্বীয় গুনাহ থেকে মার্জনা পেয়েছিলেন, অথচ কুরআন বলছে যে,
﴿ فَتَلَقَّىٰٓ ءَادَمُ مِن رَّبِّهِۦ كَلِمَٰتٖ فَتَابَ عَلَيۡهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ ٣٧ ﴾ [البقرة: ٣٧]
‘‘অতঃপর আদম স্বীয় রবের নিকট থেকে কিছু বাক্য শিখে নিলেন, ফলে আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিলেন, নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত তাওবা গ্রহণকারী ও দয়ালু’’।[16] আদম -আলাইহিস সালাম- আল্লাহর নিকট থেকে যে বাক্যসমূহ শিক্ষা করেছিলেন তা সূরা আ‘রাফের ২৩ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। সে আয়াতটি নিম্নরূপ:
﴿ قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٢٣ ﴾ [الاعراف: ٢٣]
‘‘আদম ও হাওয়া বলেছিলেন: হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নিজেদের উপর অত্যাচার করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা করে রহম না কর, তা হলে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্গত হয়ে যাবো’’।[17] ইমাম যমাখশারীর (মৃত ৫২৯হি:) মতে উক্ত এ দো‘আ পাঠের ওসীলা করেই আদম-(আলাইহিস সালাম)-আল্লাহর নিকট দো‘আ করেছিলেন।[18] ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মাওকূফ সনদে বর্ণিত অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, আদম আলাইহিস সালাম অন্যায় করার পর নিম্নোক্ত দো‘আ পাঠ করে আল্লাহর নিকট মাগফেরাত কামনা করেন:
[سبْحانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكُ وَ تَعَالَى جَدُّكَ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْلِيْ إِنَّهُ لاَ يَغْفِرَ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ.][19]
উক্ত দু’টি আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আদম আলাইহিস সালাম উক্ত এ দো‘আ শিক্ষা করে এর ওসীলায় আল্লাহর কাছে তাঁর কৃত অপরাধ মার্জনার জন্য দো‘আ করেছিলেন। মুহাম্মদ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকারের ওসীলায় তিনি তাঁর অপরাধ মার্জনার জন্য দো‘আ করেন নি। আর ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত মাওকূফ হাদীস দ্বারা উক্ত দো‘আ পাঠ করার কথা প্রমাণিত হয়। তাই সনদের দিক থেকে রাসূলের নামের ওসীলা গ্রহণ সংক্রান্ত হাদীসটি দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি কুরআনের উক্ত আয়াত দু’টির মর্ম এবং ইবনে মাসউদের হাদীসের বিপরীতমুখী হওয়ায় সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, উক্ত হাদীসটি মিথ্যা। এ-জাতীয় হাদীস দ্বারা রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকার, মর্যাদা ও সত্তার ওসীলা গ্রহণ করার বৈধতা প্রমাণ করা যায় না।
চতুর্থ দলীল: রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- বলেছেন:
«تَوَسَّلُوْا بِجَاهِيْ فَإِنَّ جَاهِيْ عِنْدَ اللهِ عَظِيْمٌ»
‘‘তোমরা আমার মর্যাদার ওসীলা কর, কেননা আল্লাহর কাছে আমার বড় ধরনের মর্যাদা রয়েছে’’।[20]
এ দলীলের খণ্ডন:
এ হাদীসটি ইমাম ত্বাবরানী ও হাকিম সহীহ বলে সত্যায়ন করলেও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণের মতে তা সহীহ নয়। এ হাদীসের সনদে রওহ ইবনে সালাহ নামে একজন দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছেন। আবু নাঈম বলেছেন: ‘‘রওহ ইবনে সালাহ এ হাদীসটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাকে ইমাম ইবনে আদী দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন’’।[21] ইমাম ইবনে ইউনুস বলেছেন: ‘‘এ ব্যক্তি থেকে অনেক মুনকার (নির্ভরযোগ্য রাবীদের বর্ণনার বিপরীতমুখী) হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইমাম দারকুত্বনী তার ব্যাপারে বলেছেন: হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে লোকটি দুর্বল’’।[22]
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাঃ স্বীয় ‘আলকাওয়াইদুল জালীলাঃ’ গ্রন্থের ১৩২ ও ১৫০ পৃষ্ঠায় বলেন:
[إنه لا يوجد لهذا الحديث أصلا في أي كتب الحديث ، و لا يذكره كحديث إلا من هو جاهل ، وليس لديه أدنى معرفة بعلم الحديث".]
‘‘কোন হাদীসের কিতাবে এ হাদীসের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়না। জাহেল ও হাদীস সম্পর্কে যার কোনো জ্ঞান নেই কেবল সে ব্যতীত আর কেউই এটিকে হাদীস হিসেবে বর্ণনা করতে পারে না’’।[23]
তিনি আরো বলেন: ‘‘অবশ্যই আল্লাহর কাছে রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদা অন্যান্য রাসূলদের চেয়ে অধিক রয়েছে, তবে আল্লাহর কাছে তাঁর মর্যাদা মানুষের পারস্পরিক মর্যাদার মত নয়। কারণ, কারো পক্ষে আল্লাহর পূর্বানুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে কারো জন্যে শাফা‘আত করা সম্ভবপর নয়, পক্ষান্তরে একজন মানুষ তার মর্যাদার ওসীলায় অপর মানুষের কাছে তার অনুমতি ব্যতীতই শাফা‘আত করতে পারে, এটা এ-জন্য যে, শাফা‘আতকারী ও শাফা‘আত গ্রহীতা উভয়ই উদ্দেশ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সমভাবে শরীক। (অর্থাৎ এখানে শাফা‘আত দ্বারা তাদের উভয়ের উদ্দেশ্যই হাসিল হবে, উভয়েই উপকৃত হবে) কিন্তু আল্লাহর ব্যাপারটি এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। কেননা, কারো উদ্দেশ্য অর্জিত হওয়া বা না হওয়া এককভাবে আল্লাহর ইচ্ছার উপরেই সম্পূর্ণ নির্ভরশীল, এ-ক্ষেত্রে কেউ তার শাফা‘আত দ্বারা তাঁর সাথে শরীক হতে পারে না’’।[24]
উক্ত হাদীসটি সহীহ না হওয়াতে এবং রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার বিষয়টি ব্যবহারযোগ্য কোনো বিষয় না হওয়াতে এ হাদীস দ্বারাও রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার ওসীলায় দো‘আ করা বৈধ বলে প্রমাণিত হয় না।
পঞ্চম দলীল :
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর মাতা ফাতেমা বিনতে সা‘দ মৃত্যুবরণ করলে রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-তাঁর নিজের এবং তাঁর পূর্ববর্তী নবীগণের অধিকারের ওসীলায় আল্লাহর কাছে তার জন্য মাগফিরাত কামনা করেন’’।[25]
এ হাদীস দ্বারাও রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকার ও মর্যাদার ওসীলা গ্রহণের বৈধতা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়।
এ দলীলের খণ্ডন:
এ হাদীসটি ইমাম হাকিম ও ইবনে হিববান বিশুদ্ধ বলে মতামত দিয়ে থাকলেও আসলে তা বিশুদ্ধ নয়। কারণ, হাদীসের সহীহ ও দুর্বল পরিচয়ের ক্ষেত্রে এ দু’জনের চেয়েও অধিক অভিজ্ঞ ইমাম ইবনে ‘আদী, দারাকুত্বনী ও ইবনে মা’কূলা এ হাদীসের সনদে ‘রওহ ইবনে সালাহ’ নামক দুর্বল বর্ণনাকারী থাকায় এটাকে তাঁরা দুর্বল হাদীস বলে মন্তব্য করেছেন। হাদীস বর্ণনাকারীদের নির্ভরযোগ্য ও দুর্বল বলে আখ্যা দেয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা দু’জন কাঠিন্যতা আরোপ না করার কারণেই এ ব্যক্তিকে তাঁরা নির্ভরযোগ্য বলেছেন। তবে অন্যান্যরা এ ব্যক্তিকে দুর্বল বলেছেন। এমনকি এ ব্যক্তিকে তাঁরা অনেক ‘মুনকার’ হাদীস বর্ণনাকারী বলেও অভিযুক্ত করেছেন।[26]কাজেই এ হাদীস দ্বারাও রাসলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধিকারের ওসীলা গ্রহণের বৈধতা প্রমাণ করা যায় না।
>[2]. অধ্যাপক আহমদ আনিসুর রহমান তাঁর একটি প্রবন্ধে উক্ত আয়াত দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদার ওসীলা বৈধ হবার প্রমাণ হিসেবে পেশ করেছেন। প্রবন্ধটি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দেখুন: দৈনিক ইনকিলাব, ১০ ই অক্টোবর, ১৯৯৬ খ্রি.।
[3]. ইবনে কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আজীম; ১/১২৯।
[4]. তদেব।
[5]. তদেব।
[6]. তদেব।
[7]. তদেব।
[8] তাছাড়া যদি নবীর ব্যক্তি সত্ত্বার ওসীলাই তারা দিত, আর তা কার্যকরী হত, তবে অবশ্যই তারা (তোমাদের বিশ্বাস মোতাবেক) সবসময় জয়লাভ করত, অথচ বাস্তবে সেটা ঘটে নি, তারা সবসময় জয়লাভ করে নি। [সম্পাদক]
[9]. আল-কুরআন, সূরা আনফাল:৩২।
[10] .আল-কুরঅন, সূরা আনফাল:৩৩।
[11].মাওলানা মুহাম্মদ শফী‘, প্রাগুক্ত; পৃ.৫৩০।
[12]. হাদীসের অবশিষ্ট অংশ নিম্নরূপ: ‘‘তখন আল্লাহ বলেন:হে আদম ! মুহাম্মদকে সৃষ্টি না করা সত্ত্বেও তুমি কি করে তাঁকে জানতে পারলে? উত্তরে আদম বলেন:আপনি আমাকে সৃষ্টি করে আমার মাঝে রূহ প্রবিষ্ট করার পর যখন আমি মাথা উঁচু করলাম তখন আরশের পায়াতে لا إله إلا الله محمد رسول الله লিখিত দেখতে পেলাম। তখন ভাবলাম আপনি আপনার নামের সাথে সবচেয়ে প্রিয়ভাজনের নামকে মিলিয়ে থাকবেন। আল্লাহ বলেন: হে আদম তুমি ঠিক বলেছো, সে অবশ্যই আমার কাছে সবচেয়ে বেশী প্রিয়ভাজন। তুমি তাঁর হকের ওসীলায় আমার নিকট দু‘আ করেছো। আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর মুহাম্মদ না হলে তোমাকে সৃষ্টি করতাম না’’। দেখুন: আন্নীসাপুরী, আবু ‘আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ‘আব্দুল্লাহ, আল-মুসতাদরাক ;সম্পাদনা: মুস্তফা আব্দুল কাদির আত্বা, (বৈরুত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাঃ, ১ম সংস্করণ, ১৯৯০ খ্রি.), ২/৬৭২।
[13]. ইবনে হাজার ‘আসক্বালানী, লেসানুল মীযান; (বৈরুত: মুআসসাসাতুল এ‘লাম লিল মাত্ববূ‘আত, ৩য় সংস্করণ, ১৯৮৬ খ্রি,), ৩/৩৬০।
[14]. তদেব।
[15]. তিনি বলেন,
إنه خبر باطل . وقال : عبد الله بن مسلم متهم بوضع الحديث على ليث و مالك وابن لهيعة. ولا يحل كتب حديثه. والعجب من الحاكم نفسه، فإنه قد أورد حديثا آخر في مستدركه (3/332)، بسند عبد الرحمن بن زيد و لم يصصحه ، بل قال: والشيخان لم يحتجا بعبد الرحمن بن زيد . و هذا تناقض ظاهر منه ، حيث وثقه في مكان و ضعفه في مكان آخر.
দেখুন: শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী, আততাওসসুলু আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহু; পৃ.১১৫-১১৬।
[16]. আল-কুরআন, সূরা বাক্বারাঃ:৩৭।
[17]. আল-কুরআন, সূরা আ‘রাফ: ৭।
[18]. যামাখশারী, জারুল্লাহ মাহমূদ ইবনে ওমর, আল-কাশ্শাফ; (কুতুবখানা মাজহারী, সংস্করণ বিহীন, সন বিহীন), ১/১২৮; আল-ক্বুরত্বুবী, আহকামুল কুরআন; (আল-হাইআতুল মিশরিয়্যাতুল আ-ম্মাহ লিল কুত্তাব, ৩য় সংস্করণ, ১৯৮৭ খ্রি.), ১/১/৩২৪; আবু বকর জাবির আল-জাযাইরী, আয়সারুত্তাফাসীর; ১/৪৫।।
[19] . তদেব। টীকা দ্রষ্টাব্য।
[20]. আলহাইছামী, মাজমাউয্ যাওয়াইদ; ৯/২৫৭; ত্ববরানী স্বীয় কাবীর ও আওসাত গ্রন্থে এবং হাকিম স্বীয় মুসতাদরাক গ্রন্থে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ বলেছেন।
[21]. আসফাহানী, আবু নাঈম আহমদ ইবন আব্দুল্লাহ, হিলয়াতুল আউলিয়া; (স্থান বিহীন, দারুল কিতাবিল আরাবী, ৪র্থ সংস্করণ, ১৯৮৫ খ্রি.), ৩/১২১।
[22]. শায়খ মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন আল-বানী, আত্তাওয়াস সুলু আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহু; পৃ. ১১১।
[23]. তদেব।
[24]. তদেব।
[25]. এ হাদীসটি ইমাম হাকিম ও ইবনে হিববান বর্ণনা করে তা সহীহ বলে দাবী করেছেন। তবে প্রকৃতপক্ষে হাদীসটি সহীহ নয়।
[26]. শায়খ মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন আল-বানী, সিলসিলাতুল আহাদীসিদ দয়ীফাতি ওয়াল মাওদু‘আঃ; (বৈরুত: ১ম সংস্করণ), ১/৩৯৯; ইমাম সাগানী, আল-আহাদীসুল মাওদু‘আঃ পৃ.৭।