শির্ক কী ও কেন? প্রথম পরিচ্ছেদ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী
ভরসার উপাসনা (عبادة التوكل)

একজন মু’মিনের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন পূরণের ক্ষেত্রে তার করণীয় হচ্ছে, উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য যে কর্ম করা প্রয়োজন, তা নিজের সাধ্যের মধ্যে থাকলে তা নিজে করা বা অপর জীবিত ও উপস্থিত কারো সাধ্যের মধ্যে থাকলে প্রয়োজনে তাদের সহযোগিতায় তা সম্পাদন করা এবং কর্মের ফলাফল প্রাপ্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করা এবং তাঁরই উপর ভরসা করা। কর্ম যদি কারো সাধ্যের মধ্যে না থাকে, তবে নিজে বা অপর জীবিত উপস্থিত মানুষের দু‘আর মাধ্যমে আল্লাহর নিকট তা কামনা করা এবং তা অর্জিত হওয়ার জন্য একমাত্র আল্লাহর উপরেই ভরসা করা। কোনো অবস্থাতেই নিজের বা অপর কারো উপর ভরসা না কর। কেননা, প্রকৃত মু’মিনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সকল ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা করা। সে-জন্য আল্লাহ বলেন,

﴿ وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ﴾ [المائ‍دة: ٢٣]

‘‘তোমরা যদি সত্যিকার অর্থে মু’মিন হয়ে থাকো, তাহলে একমাত্র আল্লাহর উপরেই ভরসা কর।’’[1] এতে প্রমাণিত হয় যে, প্রকৃত মু’মিন হতে হলে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপরেই ভরসা করতে হবে। তা না করে যারা আল্লাহর পাশাপাশি নিজের বা অন্যের কর্মের উপর ভরসা করবে, তারা শির্কে আসগারে পতিত হবে। আর যা কারো সাধ্যের মধ্যে নেই, তা প্রাপ্তির জন্য যারা কোনো অলি বা দরবেশের উপরে ভরসা করবে, তারা শির্কে আকবারে পতিত হবে।এখানে উল্লেখ্য যে, মানুষের সামর্থ্যের মধ্যকার কর্মের ক্ষেত্রেও কর্ম আরম্ভ করে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর উপরেই ভরসা করতে হবে, এ কারণে যে, কর্ম করার জন্য যে শক্তি ও সামর্থ্যের প্রয়োজন, সে সবের মালিক হলেন আল্লাহ। তিনি তৌফিক দিলেই কেবল আমরা কোনো কর্ম শুরু ও তা শেষ করতে পারি। অন্যথায় হাজারো ইচ্ছা ও চেষ্টা করেও আমরা তা করতে পারবো না।

>
[1]. আল-কুরআন, সূরা মায়েদাহ্‌ : ২৩।