লগইন করুন
যখন কোনো কল্যাণ বা অকল্যাণ করা আল্লাহ ব্যতীত অপর কারো বৈশিষ্ট্য হতে পারে না, এমনকি সে বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যখন স্বয়ং আল্লাহর প্রিয় হাবীব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও হতে পারেন না, তখন সবাইকে বুঝতে হবে যে, আল্লাহ ব্যতীত মানুষের কল্যাণ লাভের এবং অকল্যাণ দূরীকরণের অপর কোনো আশ্রয়স্থল নেই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন :
﴿ قُلۡ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا رَشَدٗا ٢١ قُلۡ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ ٱللَّهِ أَحَدٞ وَلَنۡ أَجِدَ مِن دُونِهِۦ مُلۡتَحَدًا ٢٢ ﴾ [الجن: ٢١، ٢٢]
“বলুন: আমি তোমাদের কোনো ক্ষতি সাধন করার এবং তোমাদেরকে সুপথে আনয়ন করার মালিক নই। বলুন, আমার অবস্থা এমন যে, আল্লাহর পাকড়াও থেকে আমাকে রক্ষা করার মত কেউ নেই এবং তিনি ব্যতীত আমি অপর কোনো আশ্রয় স্থলও পাব না।’’[1]
এ আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর রাসূলের মুখ দিয়ে এ ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে এ কথা বুঝাতে চাইলেন যে, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই হলেন সকল লাভ-ক্ষতি, কল্যাণ ও অকল্যাণের একচ্ছত্র মালিক। কোনো কল্যাণার্জন বা অকল্যাণ দূরীকরণের জন্য প্রার্থনা ও আবেদন করার স্থান একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কোথাও নেই। সুতরাং অবস্থার যে কোনো পরিবর্তনের জন্য আমাদেরকে কেবল তাঁরই শরণাপন্ন হতে হবে। কারো কোনো অলৌকিক মাধ্যমের চিন্তা ভাবনা পরিহার করে সরাসরি কেবল তাঁর নিকটেই তা চাইতে হবে; কেননা, তিনি একাই বান্দাদের যাবতীয় অভাব ও অভিযোগ শ্রবণ করার এবং তা পূর্ণ করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মানুষেরা এরপরও তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যের আশ্রয় গ্রহণ করে, অন্যের কাছে তাদের অভাব ও অভিযোগের কথা তুলে ধরে, তাঁর কাছে তাদের অভাবের কথা সরাসরি না জানিয়ে অন্যের মাধ্যম গ্রহণ করে। বান্দাদের এ হেন কর্মে তিনি প্রশ্ন করে বলেন :
﴿ أَلَيۡسَ ٱللَّهُ بِكَافٍ عَبۡدَهُۥۖ﴾ [الزمر: ٣٦]
“আল্লাহ কি তা হলে তাঁর বান্দার (যাবতীয় অভাব ও অভিযোগ শ্রবণ করার) জন্য যথেষ্ট নন?’’[2]
হ্যাঁ, অবশ্যই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের যাবতীয় অভাব ও অভিযোগ শুনার ও তা পূরণের জন্য যথেষ্ট। তাই তাদের উচিত কেবল তাঁরই নিকট সরাসরি তাদের যাবতীয় অভাবের কথা তুলে ধরা, তাঁরই নিকট যাবতীয় সাহায্য কামনা করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এ শিক্ষা দেয়ার জন্যই ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলেন :
«إِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِالله»
“যখন কোনো সাহায্য চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে।’’[3]
>[2].আল-কুরআন, সূরা যুমার : ৩৬।
[3]. আবু ঈসা আত্ তিরমিযী, প্রাগুক্ত; কিতাবুল কিয়ামাহ, বাব : নং ৫৯, ৪/৬৬৭; ইমাম আহমদ, প্রাগুক্ত; ১/২৯৩।