লগইন করুন
দাড়ি রাখা এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক ভালো। জানতে চান কী কারণে? চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক দাড়ি রাখার স্বাস্থ্যকর দিকগুলো। হবু স্বামীর দাড়ি দেখে মেয়েদের রাগ করার দিন এবার সত্যি ফুরালো!
১) অ্যালার্জি থেকে দূরে রাখে পুরুষদের মধ্যে যাদের ধুলো ময়লা এবং রোদে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য দাড়ি রাখা অনেক উপকারী। এতে করে মুখের ত্বক সরাসরি ধুলো-বালি এবং রোদের সংস্পর্শে আসে না। সুতরাং অ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২) শেভিং র্যাশ থেকে মুক্তি অনেকের ত্বক খুব সেনসিটিভ হয়ে থাকে। তারা যদি বারবার শেভ করেন তাহলে ত্বকের সেনসিটিভিটির কারণে শেভিং র্যাশের সৃষ্টি হয়। দাড়ি রাখার অভ্যাস এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে।
৩) স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় সরাসরি রোদ ত্বকে লাগা, শেভ করার সময় ও শেভ করার পর নানা ধরণের কেমিক্যাল জাতীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার করা ইত্যাদি স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। তাই পুরুষদের ক্ষেত্রে ডারম্যাটোলজিস্টগণ স্কিন ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে দাড়ি রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৪) ব্রণের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, পুরুষের ত্বকেও ব্রণ ওঠে থাকে। শেভ করার প্রোডাক্ট ও ধুলো-বালি এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলে। যারা দাড়ি রাখেন তারা নিয়মিত দাড়ির যত্ন নিলে এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন খুব সহজেই।
৫) ত্বকে বয়সের ছাপ ধীরে পড়ে: যারা দাড়ি রাখেন তাদের ত্বকে বয়সের ছাপ ধীরে পড়ে। ডারম্যাটোলজিস্ট ড. অ্যাডাম ফ্রাইডম্যান বলেন, ‘মুখের ত্বক দাড়ি দিয়ে ঢাকা থাকার ফলে সূর্যের আলোর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হয়। এতে ত্বকের ক্ষতি কম হয়, রিংকেল পড়ে অনেক দেরিতে। সুতরাং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেরি হয়’।
৬) দাড়ি রাখলে একজন পুরুষ অনেক স্বাস্থ্যগত সুবিধা পেয়ে থাকেন: পুরুষের দাড়ি রাখা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। দাড়ি সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি ঠেকায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত। এটা দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া থেকে পুরুষকে বাঁচায় এবং স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। দাড়ি ধুলোবালি ও ক্ষতিকর বস্তু, রক্ষা করে। নিয়মিত শেইভ করলে আপনার দাড়ির মূলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটায় এবং ব্রণের সৃষ্টি করে। পুরুষদের দিনের বেলায় উত্তপ্ত সূর্যের নিচে দাঁড় করিয়ে রাখুন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এবং কে কতটুকু রেডিয়েশান শোষণ করেছে এটা তুলনা করে দেখুন। তখনই দাড়ির উপকার আপনার কাছে ধরা পড়বে।
৭) অ্যাজমার প্রকোপ কমায়: গবেষণায় দেখা যায় দাড়ি রাখা নাকে মুখে ক্ষতিকর ধুলো-বালি ঢুকতে বাঁধা প্রদান করে। ফলে ডাস্ট মাইট, যার কারণে অ্যাজমার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, তা অনেকাংশে কমে আসে। এতে করে অ্যাজমা সংক্রান্ত ঝামেলা থেকেও মুক্ত থাকা সম্ভব হয়। [সুত্রঃ ডেইলি মিরর, দ্য ইন্ডিয়া টাইমস]।
৮) দাড়ি পুরুষের ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। যারা নিয়মিত দাড়ি কামান, ঋতু পরিবর্তনে তাপমাত্রার তারতম্যের প্রভাবে তাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে। সেইসাথে শেভিং–ক্রিমসহ অন্যান্য প্রসাধনীর ব্যবহারে ত্বকের স্বাভাবিক আদ্রতা হারিয়ে যেতে থাকে। ত্বকের রয়েছে নিজস্ব আদ্রতা ধরে রাখার জন্য মেদবহুল গ্রন্থি। এর থেকে প্রাকৃতিক তেল নিঃসৃত হয়ে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে। রেজারের বারবার ব্যবহার ত্বকের এই গ্রন্থিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই দাড়ি রাখলে তা এই গ্রন্থির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৯) দাড়ি মুণ্ডানের কারনে ত্বক খুব সেনসিটিভ হয়। বারবার দাড়ি মুণ্ডন করলে ত্বকের সেনসিটিভিটির কারণে সৃষ্ট সমস্যা দাড়ি রাখার কারণে দূর হয়।
১০) ত্বকের নিচে ঠেলে ওঠা ইনগ্রোন হেয়ার আর নয়
যারা সবসময় শেভ করেন তারাই জানেন ত্বকের নিচে ফুলে ওঠা ইনগ্রোন হেয়ার কি বিরক্তিকর। কিন্তু দাড়ি ইচ্ছে মতো বাড়তে দিলে এগুলো দেখা যায় না। এছাড়াও শেভের কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা এড়ানো যায় দাড়ি বাড়তে দিলে।
১১) পৌরুষত্ব বেশি মনে হয়
আপনি যদি অন্যের চোখে নিজের পৌরুষ বাড়িয়ে তুলতে চান তাহলে সবচাইতে ভালো উপায় হলো দাড়ি গজানো। Evolution and Human Behavior জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, আপনি যদি দাড়ি রাখেন তাহলে অন্যান্য পুরুষ ও নারী উভয়ের চোখেই আপনি আগের চাইতে বেশি পুরুষালী হয়ে উঠবেন। মোটামুটি ১০ দিনের পুরনো দাড়িটাকে সবচাইতে বেশি আকর্ষণীয় বলে দেখা যায় এই গবেষণায়।
১২) সময় বাঁচায়: দাড়ি কামাতে গিয়ে ক্লিন-শেভড পুরুষেরা ব্যয় করে থাকেন গড়ে ৩,৩৫০ ঘন্টা, বলেন বস্টন ইউনিভার্সিটির ডক্টর হার্বার্ট মেসকন। যাদের দাড়ি থাকে তারা এই সময়টাকে নিশ্চিন্তে অন্য কোনো কাজে ব্যয় করতে পারেন।
১৩) আপনাকে গরম রাখবে: শীতকালে আপনার চুল যেমন আপনাকে গরম রাখে, তেমনই দাড়িও তার মাঝে উষ্ণতা আটকে রেখে আপনাকে গরম করে তুলবে।
তো এবার কী ভাবছেন? অনেক দিন ধরে যারা দাড়ি রাখার চিন্তা করছেন তারা এবার শেভ করা বন্ধই করে দিতে পারেন। আর যারা ক্লিন শেভড থাকতে পছন্দ করেন তারাও ভেবে দেখুন।