লগইন করুন
আত্মীয়-স্বজন বা উপস্থিত ব্যক্তিরা মাইয়্যেতের চেহারা খুলে দেখতে ও তাকে চুম্বন দিতে পারে। চাপা-কান্না কাঁদতে এবং তিন দিন পর্যন্ত শোক পালন করতে পারে (অবশ্য স্ত্রী হলে মৃত স্বামীর জন্য ৪ মাস ১০দিন শোক পালন। করবে।)
এ ব্যাপারে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যার কিছু নিম্নরূপ:
সাহাবী জাবের (রাঃ) বলেন, 'যখন আমার পিতা (আব্দুল্লাহ) ইন্তিকাল করলেন, তখন আমি তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে কাঁদতে লাগলাম। এ দেখে সকলে আমাকে নিষেধ করল। কিন্তু নবী (ﷺ) আমাকে নিষেধ করেন নি। অতঃপর নবী (ﷺ) এর আদেশক্রমে তার জানাযা উঠানো হল। এতে আমার ফুফু ফাতেমা কাঁদতে শুরু করলেন। নবী (ﷺ) তাঁকে বললেন, “কাঁদ অথবা না কাঁদ, ওর লাশ উঠানো পর্যন্ত ফিরিশ্তাবর্গ নিজেদের পক্ষ দ্বারা ওকে ছায়া করে রেখেছিল।” (বুখারী ১১৬৭ ক, মুসলিম ৪৫১৭ ক প্রমুখ)।
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, 'আবু বকর (রাঃ) তার বাসা সুন্হ থেকে ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে এলেন। ঘোড়া থেকে নেমে মসজিদে প্রবেশ করলেন। অতঃপর নবী (ﷺ) এর নিকট গেলেন। তিনি তখন চেককাটা ইয়ামানী চাদরে ঢাকা ছিলেন। আব্বা (আবু বকর) তাঁর চেহারার কাপড় খুলে দিয়ে ঝুঁকে পড়ে তার দুই চক্ষের মাঝে চুম্বন করলেন এবং কাঁদতে লাগলেন। অতঃপর বললেন, 'আমার মা ও বাপ আপনার জন্য কুরবান হোক, হে আল্লাহর নবী! আল্লাহ আপনার মধ্যে দুটি মরণ একত্রিত করবেন না। এখন যে মরণ আপনার উপর অবধার্য ছিল তা আপনি বরণ করে নিয়েছেন।
অন্য এক বর্ণনাতে তিনি বললেন, 'আপনি সেই মৃত্যু বরণ করে নিয়েছেন যার পর আর কোন মৃত্যু নেই।” (বুখারী ১২ ৪২নং, নাসাঈ ১৮ ১৮ক, প্রমুখ)।
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, 'উষমান বিন মাযউন মারা গেলে নবী (ﷺ) তাঁকে দেখতে গেলেন। তিনি তার চেহারার কাপড় খুলে ঝুঁকে তাকে চুম্বন করলেন। অতঃপর তিনি এমন কাঁদলেন যাতে দেখলাম, তার চোখের পানি তার গাল বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে । (তিরমী ৯১০ক, আবু দাউদ ২৭৫০ ক, সহীহ ইবনে মাজাহ ১৪৫৬নং)।
এ ছাড়া জাফর মারা গেলে মহানবী (ﷺ) তার পরিজনের নিকট ৩ দিন না এসে শোক প্রকাশে ঢিল দিলেন। অতঃপর তাদের নিকট এসে বললেন, আজকের পর থেকে তোমরা আমার ভায়ের জন্য কাঁদবে না। (আবু দাউদ ৩৬৬০ক, নাসাঈ ৫১৩২ক, আহমাদ ১৬৫৯ক)
নবী করীম (ﷺ) এর শিশুপুত্র ইবরাহীম মারা গেলে তার চক্ষু থেকে অশ্রু বইতে লাগল। আব্দুর রহমান বিন আউফ বললেন, আপনিও কাঁদছেন হে আল্লাহ্র রাসূল?! তিনি বললেন, এটি হল মমতার ফল, চক্ষু অশ্রু বিসর্জন করে, অন্তর সন্তপ্ত হয়, আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট তা ছাড়া আমরা অন্য কথা বলি না। আর তোমার যাওয়াতে আমার বড় দুঃখ হে ইবরাহীম! (বুখারী, মুসলিম, বায়হাকী ৪/৬৯ প্রমুখ)।
চললে পথিক আপনার জনে ভাসায়ে নয়ন তীরে
খেলা শেষ হল ধীরে চল ঐ মরণ সাগর তীরে।