লগইন করুন
উত্তর: উমরাকারী মক্কা আগমন করার সময় যদি নিয়ত করে যে, তাওয়াফ, সা‘ঈ ও মাথা মুণ্ডন তথা উমরার কার্যাদী সম্পন্ন করার সাথে সাথে ফেরত চলে যাবে, তবে তাকে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে না। কেননা তাওয়াফে কুদূমই তার জন্য উমরার তাওয়াফ ও বিদায়ী তাওয়াফ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু উমরা সম্পন্ন করার পর যদি মক্কায় অবস্থান করে তবে প্রাধান্যযোগ্য মত হচ্ছে, বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। একথার দীলল নিম্নরূপ:
প্রথমতঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপক নির্দেশ:
«لا يَنْفِرَنَّ أَحَدٌ حَتَّى يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ».
“সর্বশেষ কাজ বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ না করে কেউ যেন বের না হয়।”[1] এখানে أَحَدٌ বা ‘কেউ’ শব্দটি অস্পষ্ট। যে কেউ বের হলেই তার জন্য উক্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। অর্থাৎ তাওয়াফ না করে বের হবে না। সে হজকারী হোক বা উমরাকারী।
দ্বিতীয়তঃ উমরা হজের মতোই। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরাকে হজরূপে আখ্যা দিয়েছেন। আমর ইবন হাযম কর্তৃক প্রসিদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “উমরা হচ্ছে ছোট হজ্জ।”[2] হাদীসটি মুরসাল, কিন্তু আলেমগণ সাধারণভাবে হাদীসটি গ্রহণ করেছেন।
তৃতীয়তঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত উমরা হজের মধ্যে শামিল হয়ে গেছে।[3] অর্থাৎ হজ করলে উমরাও আদায় হয়ে গেল।
চতুর্থতঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ালা ইবন উমাইয়াকে বলেন,
«وَاصْنَعْ فِي عُمْرَتِكَ كَمَا تَصْنَعُ فِي حَجَّتِكَ»
“হজে যেভাবে কাজ করে থাক উমারাতেও সেভাবে করো।”[4] যদি তুমি হজে বিদায়ী তাওয়াফ করে থাক, তবে উমরাতেও তা কর। তবে বিদ্বানদের ঐকমত্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উক্ত নির্দেশের বাইরে থাকবেঃ আরাফা, মুযদালিফা ও মিনাতে অবস্থান ও কঙ্কর নিক্ষেপ। এগুলো উমরাতে করা শরী‘আত সম্মত নয়। তাছাড়া সতর্কতার জন্য এবং যিম্মা মুক্ত হওয়ার জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করে নেওয়াই উচিৎ।
>[2] দারাকুতনী ২/২৮৫ হাদীস নং (১২২)
[3] সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: হজ, অনুচ্ছেদ: হজের মাসসমূহে উমরা করা জায়েয।
[4] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: হজ, অনুচ্ছেদ: খালূক রং কাপড়ে লাগলে তা তিনবার ধৌত করতে হবে সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: হজ, অনুচ্ছেদ: হজ ও উমরায় ইহরামকারীর জন্য যা বৈধ।