লগইন করুন
উত্তরঃ উপরোক্ত জিনিষগুলো ব্যবহার করা হারাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(من علق شيئا وكل إليه)
‘‘যে ব্যক্তি কোন জিনিষ লটকাবে, তাকে ঐ জিনিষের দিকেই সোপর্দ করে দেয়া হবে’’।[1] কোন এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন লোক পাঠিয়ে বলে দিলেন যেঃ
(أَنْ لاَ يَبْقَيَنَّ فِي رَقَبَةِ بَعِيرٍ قِلاَدَةٌ مِنْ وَتَرٍ أَوْ قِلاَدَةٌ إِلاَّ قُطِعَتْ)
‘‘কোন উটের গলায় ধনুকের রশি বা গাছের ছাল দিয়ে তৈরী হার ঝুলানো থাকলে অথবা যে কোন মালা থাকলে সেটি যেন অবশ্যই কেটে ফেলা হয়।[2] নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ)
‘‘ঝাড়-ফুঁক করা, তাবীজ লটকানো এবং স্বামীর ভালবাসা অর্জনের জন্য যাদুমন্ত্রের আশ্রয় নেয়া শির্ক’’।[3] নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য এক হাদীছে বলেনঃ
(مَنْ تَعَلَّقَ تَمِيمَةً فلا أتم الله له ومن علق ودعة فلا ودع الله له)
‘‘যে ব্যক্তি তাবীজ লটকালো, আল্লাহ্ যেন তার উদ্দেশ্য পূর্ণ না করেন। আর যে ব্যক্তি রোগমুক্তির জন্যে শামুক বা ঝিনুকের মালা লটকালো, আল্লাহ্ যেন তাকে শিফা না দেন’’।[4] তিনি অন্য এক হাদীছে বলেনঃ
(مَنْ تَعَلَّقَ تَمِيمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ)
‘‘যে ব্যক্তি তাবীজ লটকালো সে শির্ক করল’’।[5] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তির হাতে পিতলের একটি আংটা দেখে বললেনঃ এটি কী? সে বললঃ এটি দুর্বলতা দূর করার জন্যে পরিধান করেছি। তিনি বললেনঃ
(انْزِعْهَا فَإِنَّهَا لَا تَزِيدُكَ إِلَّا وَهْنًا فَإِنَّكَ لَوْ مِتَّ وَهِيَ عَلَيْكَ مَا أَفْلَحْتَ أَبَدًا)
‘‘তুমি এটি খুলে ফেল। কারণ এটি তোমার দুর্বলতা আরো বাড়িয়ে দিবে। আর তুমি যদি এটি পরিহিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ কর, তাহলে তুমি কখনই সফলতা অর্জন করতে পারবে না’’।[6] হুজায়ফা (রাঃ) দেখলেন এক ব্যক্তির হাতে একটি সুতা বাঁধা আছে। তিনি তা কেটে ফেললেন এবং কুরআনের এই আয়াতটি পাঠ করলেনঃ
وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إلاَّ وَهُمْ مُشْرِكُونَ
‘‘তাদের অধিকাংশই আল্লাহকে বিশ্বাস করে; কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে’’। (সূরা ইউসুফঃ ১০৬) সাঈদ বিন যুবায়ের (রাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন মানুষের শরীর থেকে একটি তাবীজ কেটে ফেলল, সে একটি গোলাম আযাদ করার ছাওয়াব পেল। সাঈদ বিন যুবায়েরের এই কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত মারফু হাদীছের পর্যায়র্ভূক্ত।[7]
[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তিবব।
[3] - আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তিবব। শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী হাদীছ সহীহ বলেছেন। দেখুনঃ সিলসিলায়ে সহীহা হাদীছ নং- (৬/১১৬১)। এখানে যে ঝাড়ফুঁক করাকে শির্ক বলা হয়েছে, তা দ্বারা শির্কী কালামের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক উদ্দেশ্য। তবে ঝাড়ফুঁক যদি আল্লাহর কালাম, আল্লাহর সিফাত বা সহীহ হাদীছে বর্ণিত কোন বাক্যের মাধ্যমে হয়, তাতে কোন অসুবিধা নেই।
[4] - হাকেম, (৪/২১৯। ইমাম আলবানী (রঃ) হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। দেখুনঃ সিলসিলায়ে যঈফা, (৩/৪২৭)
[5] - মুসনাদে আহমাদ, (৪/১৫৬) ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, দেখুন সিলসিলায়ে সহীহা হাদীছ নং- (১/৮০৯)
[6] - মুসনাদে আহমাদ, দেখুনঃ আহমাদ শাকেরের তাহকীক, (১৭/৪৩৫) তিনি হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন।
[7] - মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, (৫/৩৬)