লগইন করুন
উত্তর: একথা সঠিক নয়। কেননা যারা নিক্ষিপ্ত কঙ্কর পুনরায় নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেন তাদের যুক্তি হচ্ছে-
১. নিক্ষিপ্ত কঙ্কর (মায়ে মুস্তা‘মাল) তথা ব্যবহৃত পানির মতো। আর ফরয পবিত্রতায় যদি কোনো পানি ব্যবহার করা হয়, তবে সে ব্যবহৃত পানিটা পবিত্র থাকলেও সে পানি অন্যকে পবিত্র করতে পারে না।
২. বিষয়টি ক্রীতদাসের মতো। কাফফারা প্রভৃতিতে যদি তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়, তবে তো তাকে আবার মুক্ত করা যাবে না।
৩. এর দ্বারা এটা আবশ্যক হয়ে পড়ে যে, সকল হাজীর জন্য একটি মাত্র পাথর মারাই জায়েয হবে। অর্থাৎ আপনি পাথরটি মারবেন, তারপর আবার সেটা নিবেন এবং মারবেন, তারপর আবার নিবেন এবং মারবেন এভাবে সাতবার পূর্ণ করবেন। তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে সেই পাথরটি সাতবার নিয়ে সাতবার মারবে।
বস্তুত গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, এ তিনটি যুক্তি খুবই দুর্বল:
১) ব্যবহৃত পানির যে উদাহরণ দেওয়া হয়েছে তা ঠিক নয়। কেননা কোনো ওয়াজিব পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি ব্যবহার করা হলে পানি নিজে পবিত্র থাকবে কিন্তু অন্যকে পবিত্র করতে পারবে না এটি দলীল বিহীন একটি কথা। বস্তুত পানির যে প্রকৃত গুণ রয়েছে অর্থাৎ পবিত্রতা, তা দলীল ছাড়া রহিত করা যাবে না। অতএব, ওয়াজিব পবিত্রতা অর্জনের জন্য ব্যবহৃত পানি নিজে পবিত্র, আর তা অন্যকেও পবিত্র করতে পারে। এর মাধ্যমে প্রথম যুক্তির খণ্ডন হয়ে গেল এবং কঙ্কর মারাকে তার সাথে তুলনা করা ভুল প্রমাণিত হলো।
২) নিক্ষিপ্ত কঙ্করকে মুক্ত ক্রীতদাসের সাথে তুলনা করাও ঠিক নয়। কেননা উভয়ের মাঝে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। ক্রীতদাসকে মুক্ত করা হলে সে তো স্বাধীন হয়ে গেল। তাকে আবার মুক্ত করার সুযোগ থাকলো না। কিন্তু কঙ্কর মারা হয়ে গেলেও সেটা কঙ্করই রয়ে যায়। যে কারণে তা নিক্ষেপ করা হয়েছিল সে কারণ তাতে অবশিষ্ট রয়েছে। এ কারণে ক্রীতদাস আবার যদি কখনো শর‘ঈ দলীলের ভিত্তিতে দাসে পরিণত হয়, তবে পুনরায় তাকে মুক্ত করা যাবে।
৩) তৃতীয় যুক্তির জবাবে আমরা বলব: সমস্ত হাজীকে একটি মাত্র পাথর নিক্ষেপ আবশ্যক করা- যদি সম্ভব হয় তো হোক। কিন্তু তা অসম্ভব। অসংখ্য পাথর থাকতে কোনো বুদ্ধিমান ঐ চিন্তা করতে পারে না।
সুতরাং কঙ্কর মারতে গিয়ে যদি আপনার হাত থেকে দু’একটি কঙ্কর পড়ে যায় তবে সম্মুখ থেকে সহজলভ্য কঙ্কর কুড়িয়ে নিয়ে তা মেরে দিন- চাই তা একবার মারা হয়েছে বা হয় নি তা দেখার বিষয় নয় এবং তাতে কোনো অসুবিধা নেই।