লগইন করুন
উত্তরঃ আল্লাহর ইলম (জ্ঞান) যেমন আল্লাহর সত্বাগত গুণ, তেমনি আল্লাহর কালামও তাঁর সত্ত্বার সাথে সম্পর্ক রাখার দিক থেকে এবং এর দ্বারা আল্লাহ তা’আলার গুণান্বিত হওয়ার দিক থেকে সিফাতে যাতিয়া বা সত্বাগত গুণ। আল্লাহর কালাম আল্লাহর জ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত। তিনি স্বীয় ইল্ম থেকেই কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং তিনি যা অবতীর্ণ করেছেন, তা সম্পর্কে তিনিই বেশী অবগত।
আল্লাহর কথা যেহেতু তাঁর ইচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত, তাই এটি কর্মগত সিফাতও বটে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إذا أراد الله أن يوحي بالأمر تكلم بالوحي)
‘‘আল্লাহ্ তাআ’লা যখন কোন বিষয় অবতীর্ণ করতে চান, তখন অহীর মাধ্যমে কথা বলেন’’।[1] এ জন্যই সালফে সালেহীন তথা পূর্বযুগের সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ আল্লাহর কালাম সম্পর্কে বলেনঃ নিশ্চয়ই এটা একই সাথে সত্বাগত ও কর্মগত গুণ। সুতরাং আল্লাহ্ তাআ’লা অতীতে সর্বদা কথা বলার গুণে গুণান্বিত ছিলেন, বর্তমানেও আছেন এবং অনন্তকাল পর্যন্ত তিনি এ গুণে গুণান্বিত থাকবেন। তবে কথা বলা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তিনি যখন যেভাবে ইচ্ছা কথা বলেন। তিনি যাকে শুনাতে চান, তিনি সেই কথা শুনেন। তাঁর কথা তাঁর সিফাতের অন্তর্ভূক্ত। তাঁর কথার কোন সীমা ও শেষ নেই। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
قُلْ لَوْ كَانَ الْبَحْرُ مِدَادًا لِكَلِمَاتِ رَبِّي لَنَفِدَ الْبَحْرُ قَبْلَ أَنْ تَنْفَدَ كَلِمَاتُ رَبِّي وَلَوْ جِئْنَا بِمِثْلِهِ مَدَدًا
‘‘হে নবী আপনি বলুনঃ আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করবার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হবার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে । সাহায্যার্থে অনুরূপ আরেকটি সমুদ্র এনে দিলেও’’। (সূরা কাহ্ফঃ ১০৯) আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ
وَلَوْ أَنَّمَا فِي الأَرْضِ مِنْ شَجَرَةٍ أَقْلاَمٌ وَالْبَحْرُ يَمُدُّهُ مِنْ بَعْدِهِ سَبْعَةُ أَبْحُرٍ مَا نَفِدَتْ كَلِمَاتُ اللَّهِ
‘‘পৃথিবীর সমস্ত গাছ যদি কলম হয় এবং এই সমুদ্রের সাথে আরো সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয়, তবুও আল্লাহর বাণী (গুণাবলী) লিখে শেষ করা যাবে না’’। (সূরা লুকমানঃ ২৭) আল্লাহ তাআ’লা আরও বলেনঃ
وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ صِدْقًا وَعَدْلاً لاَ مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
‘‘আপনার প্রতিপালকের বাণী সত্যতা ও ইনসাফের দিক দিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। তাঁর বাণী পরিবর্তনকারী কেউ নেই। তিনি শ্রবণকারী ও প্রজ্ঞাময়’’। (সূরা আন-আমঃ ১১৫)