লগইন করুন
উত্তরঃ আল্লাহর কিতাবের প্রতি ঈমান আনয়নের অর্থ হল, এ দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা যে সমস্ত আসমানী কিতাবই মহান আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহ তা’আলা এ সমস্ত কিতাবের মাধ্যমে কথা বলেছেন।
(১) আল্লাহর তা’আলার কতক কালাম ফেরেশতার মাধ্যম ব্যতীত পর্দার অন্তরাল থেকে শ্রবণ করা হয়েছে।[1]
(২) আল্লাহর কিছু কালাম ফেরেশতাগণ মানব জাতির রাসূলদের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন।
(৩) আল্লাহর এমন কিছু কালাম রয়েছে, যা তিনি নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেছেন। আল্লাহ্ তাআ’লা বলেনঃ
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلاَّ وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولاً فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ
‘‘কোন মানুষের জন্য অসম্ভব যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন; কিন্তু অহীর মাধ্যমে ছাড়া অথবা পর্দার আড়াল থেকে অথবা তিনি এমন কোন দূত প্রেরণ করবেন, যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করবেন’’। (সূরা শুরাঃ ৫১) আল্লাহ তা’আলা মুসা (আঃ)কে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ
إِنِّي اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ بِرِسَالاَتِي وَبِكَلاَمِي
‘‘আমি তোমাকে আমার রিসালাত ও আমার সাথে বাক্যালাপের জন্য লোকদের মধ্যে হতে মনোনিত করেছি’’। (সূরা আ’রাফঃ ১৪৪) আল্লাহ তাআ’লা আরো বলেনঃ
وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى تَكْلِيمًا
‘‘আর আল্লাহ তা’আলা মুসার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন’’। (সূরা নিসাঃ ১৬৪) আল্লাহ তা’আলা তাওরাত কিতাব সম্পর্কে বলেনঃ
وَكَتَبْنَا لَهُ فِي الأَلْوَاحِ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ مَوْعِظَةً وَتَفْصِيلاً لِكُلِّ شَيْءٍ
‘‘অতএব আমি ফলকের উপর প্রত্যেক প্রকারের উপদেশ এবং সর্ব বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা লিখে দিয়েছি’’। (সূরা আ’রাফঃ ১৪৫) ঈসা (আঃ) সম্পর্কে আল্লাহ তাআ’লা আরো বলেনঃ
وَآتَيْنَاهُ الإِنْجِيلَ
‘‘আর আমি তাঁকে ইনজীল প্রদান করেছি’’। (সূরা মায়িদাঃ ৪৬) আল্লাহ তাআ’লা আরো বলেনঃ
وَآتَيْنَا دَاوُدَ زَبُورًا
‘‘আর আমি দাউদকে যাবুর প্রদান করেছি’’। (সূরা নিসাঃ ১৬৩) আল্লাহ তা’আলা কুরআন সম্পর্কে বলেনঃ
لَكِنِ اللَّهُ يَشْهَدُ بِمَا أَنْزَلَ إِلَيْكَ أَنْزَلَهُ بِعِلْمِهِ وَالْمَلاَئِكَةُ يَشْهَدُونَ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
‘‘কিন্তু আল্লাহ আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, তিনি যে সজ্ঞানেই অবতীর্ণ করেছেন সে ব্যাপারে তিনি নিজেও সাক্ষী এবং ফেরেশতাগণও সাক্ষী এবং সাক্ষ্য দানে আল্লাহই যথেষ্ট’’। (সূরা নিসাঃ ১৬৬) আল্লাহ তা’আলা কুরআনের ব্যাপারে আরো বলেনঃ
وَقُرْآنًا فَرَقْنَاهُ لِتَقْرَأَهُ عَلَى النَّاسِ عَلَى مُكْثٍ وَنَزَّلْنَاهُ تَنْزِيلاً
‘‘এবং আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি খন্ড খন্ডভাবে। যাতে আপনি মানুষের কাছে তা পাঠ করতে পারেন ক্রমে ক্রমে এবং আমি তা যথাযথভাবে অবতীর্ণ করেছি’’। (সূরা বানী ইসরাঈলঃ ১০৬) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
وَإِنَّهُ لَتَنْزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ * نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الأَمِينُ * عَلَى قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ الْمُنْذِرِينَ * بِلِسَانٍ عَرَبِيٍّ مُبِينٍ
‘‘নিশ্চয়ই ইহা (কুরআন) বিশ্ব জগতের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অবতীর্ণ হয়েছে। জিবরীল (আঃ) তা নিয়ে অবতরণ করেছেন আপনার অন্তরে। যাতে আপনি সতর্ককারী হতে পারেন। অবতীর্ণ করা হয়েছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়’’। (সূরা শুআরাঃ ১৯২-১৯৫) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالذِّكْرِ لَمَّا جَاءَهُمْ وَإِنَّهُ لَكِتَابٌ عَزِيزٌ * لاَ يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلاَ مِنْ خَلْفِهِ تَنْزِيلٌ مِنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
‘‘নিশ্চয়ই যারা তাদের নিকট কুরআন আসার পর তা অস্বীকার করে (তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে) অবশ্যই এটা এক মহিমাময় কিতাব। কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করতে পারবে না, অগ্র হতেও নয়, পশ্চাৎ হতেও নয়। এটা প্রজ্ঞাবান ও প্রশংসনীয় আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ’’। (সূরা ফুসসিলাতঃ ৪১-৪২) এ মর্মে আরো অনেক আয়াত রয়েছে।