লগইন করুন
উত্তরঃ প্রত্যেক সিফাতে ফে’লীয়া হতে নাম নির্বাচন করা জায়েয নেই। কেননা নামগুলো আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হতে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। তাঁর নাম সেগুলোই, যা তিনি কুরআন মজীদে উল্লেখ করেছেন কিংবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহীহ হাদীছে বর্ণনা করেছেন।
আল্লাহ্ তা’আলা যে সমস্ত কর্ম নিজের সত্বার জন্য সাব্যস্ত করেছেন, তাতে রয়েছে তাঁর পরিপূর্ণতা ও প্রশংসার বর্ণনা। তবে আল্লাহ তা’আলা সর্বদা ঐ কর্মগুলো দ্বারা নিজেকে বৈশিষ্টমন্ডিত করেন নি এবং সেগুলো থেকে আল্লাহর নাম নির্বাচন করাও জায়েয নেই। আল্লাহর কর্মসমূহের মধ্যে এমন কতিপয় কর্ম রয়েছে, যা দ্বারা আল্লাহ্ তা’আলা সদা গুণান্বিত। যেমন আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ
‘‘আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তোমাদেরকে রিযিক দিয়েছেন অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করবেন’’। (সূরা রূমঃ ৪০)
উক্ত কর্মগুলো থেকে আল্লাহ্ তা’আলা নিজেকে خَالِق (সৃষ্টিকারী), رَازِق (রিযিক দাতা), المُحِيْ (জীবন দানকারী) এবং المُمِيت (মৃত্যু দাতা) হিসাবে নাম করণ করেছেন।
অপর পক্ষে আল্লাহ তাআলার এমন কতিপয় কর্ম রয়েছে, যা স্বীয় সত্ত্বার জন্য প্রতিদান ও অন্য একটি ক্রিয়ার মুকাবেলায় ব্যবহার করেছেন। সুতরাং যেখানে তিনি তা ব্যবহার করেছেন, সেখানে উক্ত ক্রিয়া ব্যবহার করার কারণে তাঁর পূর্ণতা ও প্রশংসা বুঝায়; অন্যত্র নয়। যেমন আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
إِنَّ المُنَافِقِيْن يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ
‘‘নিশ্চয়ই মুনাফেকরা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে এবং তিনিও তাদেরকে ঐ প্রতারণা প্রত্যার্পণ করেন’’। (সূরা নিসাঃ ১৪২) আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বলেনঃ
وَمَكَرُوا وَمَكَرَ اللَّهُ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
‘‘এবং তারা ষড়যন্ত্র করেছিল আর আল্লাহও সুক্ষ্ম কৌশল করলেন। আল্লাহই শ্রেষ্ঠতম কৌশলী’’। (সূরা আল-ইমরানঃ ৫৪) আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেনঃ
نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ
‘‘তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে। সুতরাং আল্লাহও তাদেরকে ভুলে গিয়েছেন’’। (সূরা তাওবাঃ ৬৭) কিন্তু স্মরণ রাখা আবশ্যক যে, উক্ত ক্রিয়াসমূহ আয়াতে বর্ণিত স্থানসমূহ ব্যতীত অন্য কোন স্থানে আল্লাহর জন্য ব্যবহার করা জায়েয নেই। সুতরাং এ কথা বলা যাবে না যে, আল্লাহ ষড়যন্ত্র করেন, প্রতারণা করেন এবং ঠাট্টা করেন। অনুরূপভাবে এ সমস্ত ক্রিয়া থেকে আল্লাহর নাম বাহির করাও জায়েয নেই। সুতরাং বলা যাবে না যে, তিনি مَاكِر (ষড়যন্ত্রকারী), مُخَادِع (প্রতারণাকারী) এবং مُسْتَهْزِي (বিদ্রুপকারী)। কোন জ্ঞানবান মুসলিম এ ধরণের বিশ্বাস পোষণ করতে পারে না। আল্লাহ্ তা’আলা স্বীয় সত্বাকে ষড়যন্ত্র, কৌশল এবং প্রতারণা ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত করেন নি। তবে যারা অন্যায়ভাবে ষড়যন্ত্র, কৌশল এবং প্রতারণা করে থাকে, প্রতিদান স্বরূপ আল্লাহও তাদের সাথে ষড়যন্ত্র, কৌশল এবং প্রতারণা করে থাকেন। ইহা জানা কথা যে, মানুষ যদি ইনসাফের সাথে উপরোক্ত কাজগুলোর শাস্তি দেয়, তাহলে সকলেই তাকে ভাল মনে করে। যিনি সকল বস্ত্তর সৃষ্টিকারী, মহাজ্ঞানী, ন্যায়বিচারক এবং প্রজ্ঞাময় তিনি যদি উপরোক্ত নিকৃষ্ট কাজগুলোর শাস্তি ও বিনিময় প্রদান করেন তাহলে তাঁর এ কাজগুলো উত্তমভাবেই প্রশংসনীয় হবে।[1]