লগইন করুন
উত্তরঃ কুরআন মাজীদের ন্যায় হাদীছেও আল্লাহ্ তাআলার সিফাতে ফে’লীয়ার অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(يَتَنَزَّلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَه)
‘‘আমাদের মহান প্রভু আল্লাহ্ তা’আলা রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেনঃ কে আমার নিকট দু’আ করবে? আমি তার দু’আ কবুল করবো। কে আমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে? আমি তাকে দান করব। কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব’’।[1] শাফা’আতের হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ فِي صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا)
‘‘অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা তাদের নিকট সেই আকৃতিতে আসবেন, যাতে তারা চিনতে পারবে। আল্লাহ বলবেনঃ আমি তোমাদের প্রভু। তারা বলবেঃ আপনি আমাদের প্রভু’’।[2]
এখানে সিফাতে ফে’লীয়া দ্বারা আল্লাহর আগমণ উদ্দেশ্য। আল্লাহর আকৃতি উদ্দেশ্য নয়। সুতরাং ভালভাবে বুঝা উচিৎ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(إن اللَّهَ يَقْبِضُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الأرْضَ وَتَكُوْنُ َالسَّموَاتُ بِيَمِينِهِ ثُمَّ يَقُوْلُ أَنَا المَلِكِ)
‘‘কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর মুঠোতে এবং আসমানসমূহ থাকবে তাঁর ডান হাতে। অতঃপর তিনি বলবেনঃ আমিই বাদশা’’।[3] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الْخَلْقَ كَتَبَ بِيَدِهِ عَلَى نَفْسِهِ إِنَّ رَحْمَتِي تَغْلِبُ غَضَبِي)
‘‘আল্লাহ তা’আলা যখন সৃষ্টিজীব সৃষ্টি করলেন, তখন নিজ হাতে লিখে দিলেন যে, আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর জয়লাভ করেছে’’।[4] আদম ও মুসা (আঃ)এর পরস্পর ঝগড়ার হাদীছে এসেছেঃ
(فَقَالَ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى اصْطَفَاكَ اللَّهُ بِكَلاَمِهِ وَخَطَّ لَكَ التَّوْرَاةَ بِيَدِهِ)
‘‘অতঃপর আদম (আঃ) বললেনঃ আপনি মুসা। আপনাকে বাক্যালাপের জন্য লোকদের মধ্যে হতে মনোনিত করেছেন এবং নিজ হাতে তিনি আপনার জন্য তাওরাত কিতাব লিপিবদ্ধ করেছেন’’।[5]
এখানে আল্লাহর বাক্যালাপ ও তাঁর হাত- এটি সিফাতে জাতিয়া তথা সত্বাগত গুণ। কথা বলা একই সাথে আল্লাহর সিফাতে জাতিয়া (সত্বাগত গুণ) ও সিফাতে ফে’লীয়া (কর্মগত গুণ)। আর তাওরাত লিখা আল্লাহর কর্মগত গুণ।
(إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ)
‘‘আল্লাহ্ তা’আলা রাতের বেলা তাঁর হাত প্রসারিত করে রাখেন, যাতে দিনের বেলায় অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তিগণ তাওবা করে। এমনিভাবে দিনের বেলা স্বীয় হাত প্রসারিত করে দেন, যাতে রাতের বেলার অপরাধীগণ তাওবা করে’’।[6]
[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক, মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।
[3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত তাওহীদ।
[4] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত তাওহীদ, মুসলিমঃ অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওবা।
[5] - বুখারী ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল কাদ্র।
[6] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুত তাওবা।