লগইন করুন
জওয়াব: যদি কেউ দেখে রমযানে দিনের বেলায় কোনো সাওম পালনকারী ব্যক্তি পানাহার করছে তখন তাকে সাওমের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। কেননা এটা অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখার (নাহী আনিল মুনকার) অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من رأى منكم منكرا فليغيره بيده، فإن لم يستطع فبلسانه، فإن لم يستطع فبقلبه»
“তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় কাজ থেকে দেখবে সে যেন হাত দ্বারা তা প্রতিরোধ করে। যদি সে এর সামর্থ্য না রাখে তবে যেন মুখ দ্বারা বাধা দেয়। যদি এরও সামর্থ্য না রাখে তবে অন্তর দ্বারা।”
আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে সাওম রত অবস্থায় পানাহার করা একটি অন্যায় কাজ। কিন্তু তার ভুলে যাওয়ার কারণে সে ক্ষমা প্রাপ্ত। কিন্তু যে দেখে বাধা না দেবে সে দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। অতএব, সাওম পালনকারীকে কিছু খেতে দেখলে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
স্মরণ হওয়ার পর সাওম পালনকারীর উচিত হবে তাড়াতাড়ি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। সে এ ভুলকে খাওয়া-দাওয়া করার সুযোগ মনে করে তা যেন অব্যাহত না রাখে। যদি মুখে খাবার থাকে তবে তাড়াতাড়ি ফেলে দেবে। স্মরণ হওয়ার পর গিলে ফেলা জায়েয হবে না।
তাই বলছি তিনটি অবস্থায় সাওম ভঙ্গকারী বিষয়গুলো সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও তা সাওম ভঙ্গ করে না।
১. যখন সাওমের কথা ভুলে যায়।
২. যখন অজ্ঞ হয়ে যায়।
৩. যখন অনিচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করে।
যদি সাওমের কথা ভুলে যেয়ে পানাহার করে তবে তার সাওম পূর্ণ থেকে কোনো অসুবিধা হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من نسي وهو صائم فأكل أو شرب فليتم صومه فإنه أطعمه الله وسقاه»
“যে সাওমের কথা ভুলে যেয়ে পানাহার করে সে যেন তার সাওম অব্যাহত রাখে। কারণ তাকে আল্লাহ তা‘আলা পানাহার করিয়েছেন।”
“যখন অজ্ঞ হয়ে যায়” এর উদাহরণ হলো, যেমন কেউ মনে করল যে, এখনও ফজরের ওয়াক্ত হয় নি। তাই সে সাহরী খেল অথবা মনে করল সূর্য অস্ত গেছে অথচ তা অস্ত যায় নি। তাই সে ইফতার করল তাহলে তার সাওম সহীহ হবে। আসমা বিনতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
«أفطرنا في عهد النبي صلى الله عليه وسلم في يوم غيم ثم طلعت الشمس».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক মেঘাচ্ছন্ন দিনে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে আমরা ইফতার করলাম। তারপর সূর্য দেখা গেল।” অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাওম কাযা করতে বলেন নি। যদি কাযা করা ওয়াজিব হতো তবে তিনি অবশ্যই কাযা করতে আদেশ দিতেন। আর যদি আদেশ দিতেন তা অবশ্যই আমাদের কাছে পৌঁছে যেত। কেননা তিনি কোনো কিছুর আদেশ করলে তা আল্লাহর শরী‘আতে পরিণত হয়ে যায় আর তার শরী‘আত কিয়ামত পর্যন্ত রক্ষিত ও সকলের কাছে পৌঁছে গেছে।
আর অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানাহার করার দৃষ্টান্ত যেমন কেহ কুলি করার সময় পানি ভিতরে চলে গেল এতে সাওম ভাঙবে না। কেননা সে পান করার ইচ্ছা করে নি। এমনিভাবে কারো স্বপ্নদোষ হয়ে বীর্যপাত হলো এতে তার সাওমের কোনো ক্ষতি হবে না। কেননা সে নিদ্রায় ছিল, ইচ্ছা করে নি। আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন,
﴿وَلَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٞ فِيمَآ أَخۡطَأۡتُم بِهِۦ وَلَٰكِن مَّا تَعَمَّدَتۡ قُلُوبُكُمۡۚ﴾ [الاحزاب: ٥]
“তোমরা কোনো ভুল করলে কোনো অপরাধ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর ইচ্ছা করলে অপরাধ হবে।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫]