লগইন করুন
ইবন উমার ও সালামা ইবন আকওয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,
بابٌ ﴿وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُ﴾ [البقرة: ١٨٤] نَسَخَتْهَا ﴿شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥﴾ [البقرة: ١٨٥]»
“অধ্যায়: وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُ [البقرة: ١٨٤] “আর যাদের জন্য তা (ফিদিয়া প্রদান) সম্ভব হবে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪] উক্ত আয়াতকে রহিত করেছে এ আয়াত: “রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সাওম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
«وَقَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي لَيْلَى، حَدَّثَنَا أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: نَزَلَ رَمَضَانُ فَشَقَّ عَلَيْهِمْ، فَكَانَ مَنْ أَطْعَمَ كُلَّ يَوْمٍ مِسْكِينًا تَرَكَ الصَّوْمَ مِمَّنْ يُطِيقُهُ، وَرُخِّصَ لَهُمْ فِي ذَلِكَ، فَنَسَخَتْهَا: ﴿وَأَن تَصُومُواْ خَيۡرٞ لَّكُمۡ﴾ [البقرة: ١٨٤] فَأُمِرُوا بِالصَّوْمِ»
“ইবন নুমায়ের রহ. ইবন আবু লায়লা রহ. থেকে (সনদসহ) বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, রমযানের হুকুম নাযিল হলে তা পালন করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ সাওম পালনে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও সাওম ত্যাগ করে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াতো। এ ব্যাপারে তাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। তারপরوَأَن تَصُومُواْ خَيۡرٞ لَّكُمۡ “সাওম পালন করাই তোমাদের জন্য উত্তম” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪] এ আয়াতটি পূর্বের হুকুমকে রহিত করে দেয় এবং সবাইকে সাওম পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।”[1]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
قَرَأَ: فِدْيَةُ طَعَامِ مَسَاكِينَ قَالَ: هِيَ مَنْسُوخَةٌ
“তিনি فِدْيَةُ طَعَامِ مَسَاكِينَ আয়াতটি পড়ে বলেছেন যে, এটি রহিত।”[2]
عَنْ عَطَاءٍ، سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقْرَأُ وَعَلَى الَّذِينَ يُطَوَّقُونَهُ فَلاَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «لَيْسَتْ بِمَنْسُوخَةٍ هُوَ الشَّيْخُ الكَبِيرُ، وَالمَرْأَةُ الكَبِيرَةُ لاَ يَسْتَطِيعَانِ أَنْ يَصُومَا، فَيُطْعِمَانِ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا»
‘আতা থেকে বর্ণিত, তিনি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে বলতে শুনেছেন যে তিনি পড়ছেন, وَعَلَى الَّذِينَ يُطَوَّقُونَهُ فَلاَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ অর্থাৎ ‘আর যাদের উপর সাওম কষ্টকর হবে এবং তা আদায় করতে অসমর্থ হবে তারা মিসকীনকে ফিদইয়া হিসেবে খাবার খাওয়াবে।’ “ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আয়াতটি রহিত নয়, বরং তা অতিশয় বৃদ্ধ, অত্যন্ত বৃদ্ধার জন্য, যারা সাওম রাখতে সমর্থ নয়, তারা প্রতিদিনের সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়াবে।”[3] ইমাম আতা রহ. বলেন, সর্বপ্রকার রোগেই সাওম ভঙ্গ করা যাবে। যেমন আল্লাহ বলেছেন। পক্ষান্তরে ইমাম হাসান ও ইবরাহীম রহ. বলেন, সন্তানের দাত্রী এবং গর্ভবতী স্ত্রীলোক যখন নিজ প্রাণ অথবা তাদের সন্তানের জীবনের প্রতি হুমকির আশংকা করে তখন তারা উভয়ে সাওম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে তা আদায় করে নিতে হবে। অতিবৃদ্ধ ব্যক্তি যখন সাওম পালনে অক্ষম হয়ে পড়ে (তখন ফিদইয়া আদায় করবে।)[4]
>[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৯।
[3] বস্তুত: وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ এর يُطِيقُونَهُ অর্থ নির্ধারণের মধ্যেই এ মতভেদ নির্ভরশীল। এর দু’টি পরস্পর বিরোধী অর্থ করা সম্ভব। [সম্পাদক]
[4] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫০৫।