লগইন করুন
আবু ইসহাক আশ-শায়বানী থেকে বর্ণিত, তিনি ইবন আবু আওফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনেছেন, তিনি বলেন,
«مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَقَالَ لِرَجُلٍ: انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، الشَّمْسُ؟ قَالَ: انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي»، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ الشَّمْسُ؟ قَالَ: انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي، فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُ فَشَرِبَ، ثُمَّ رَمَى بِيَدِهِ هَا هُنَا، ثُمَّ قَالَ: إِذَا رَأَيْتُمُ اللَّيْلَ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا، فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ، تَابَعَهُ جَرِيرٌ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ ابْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ»
“কোনো এক সফরে আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে বললেন, সওয়ারী থেকে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সূর্য এখনো ডুবে নি। তিনি বললেন, সওয়ারী থেকে নামো এবং আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। তারপর সে সওয়ারী থেকে নেমে ছাতু গুলিয়ে আনলে তিনি তা পান করলেন এবং হাতের ইশারায় বললেন, যখন দেখবে রাত এদিক থেকে ঘনিয়ে আসছে তখন বুঝবে, সাওম পালনকারী ব্যক্তির ইফতারের সময় হয়েছে। জাবীর এবং আবু বকর ইবন ‘আইয়াশ শায়বানী থেকে, তিনি ইবন আবু ‘আওফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, কোনো এক সফরে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম”।[1]
‘আয়েশারাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
«أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَسْرُدُ الصَّوْمَ»
“হামযা ইবন ‘আমর আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি ক্রমাগত সাওম পালন করছি”।[2]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
«أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَأَصُومُ فِي السَّفَرِ؟ وَكَانَ كَثِيرَ الصِّيَامِ ، فَقَالَ: إِنْ شِئْتَ فَصُمْ، وَإِنْ شِئْتَ فَأَفْطِرْ»
“হামযা ইবন ‘আমর আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অধিক সাওম পালনে অভ্যস্থ ছিলেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি সফরেও কি সাওম পালন করতে পারি? তিনি বললেন, ইচ্ছা করলে তুমি সাওম পালন করতে পার, আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পার”।[3]
হামযা ইবন আমর আল-আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন,
«يَا رَسُولَ اللهِ، أَجِدُ بِي قُوَّةً عَلَى الصِّيَامِ فِي السَّفَرِ، فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هِيَ رُخْصَةٌ مِنَ اللهِ، فَمَنْ أَخَذَ بِهَا، فَحَسَنٌ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَصُومَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ» قَالَ هَارُونُ فِي حَدِيثِهِ هِيَ رُخْصَةٌ وَلَمْ يَذْكُرْ: مِنَ اللهِ
“হে আল্লাহর রাসূল! সফর অবস্থায়ও আমি আমার মধ্যে সাওম রাখার মতো শক্তি রাখি। সাওম রাখলে কি আমার কোনো অসুবিধা আছে? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সাওম না রাখা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুযোগ বিশেষ। অতঃপর যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করলো তার জন্য তা উত্তম। আর যে ব্যক্তি সাওম রাখতে পছন্দ করল তার প্রতি এতে কোনো প্রকার গুনাহ হবে না। হারুনের বর্ণিত হাদীসে هِيَ رُخْصَةٌ এরপর مِنَ اللهِ শব্দের উল্লেখ নেই”।[4]
কাযা‘আ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَتَيْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، وَهُوَ مَكْثُورٌ عَلَيْهِ، فَلَمَّا تَفَرَّقَ النَّاسُ عَنْهُ، قُلْتُ: إِنِّي لَا أَسْأَلُكَ عَمَّا يَسْأَلُكَ هَؤُلَاءِ عَنْهُ سَأَلْتُهُ: عَنِ الصَّوْمِ فِي السَّفَرِ؟ فَقَالَ: سَافَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى مَكَّةَ وَنَحْنُ صِيَامٌ، قَالَ: فَنَزَلْنَا مَنْزِلًا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكُمْ قَدْ دَنَوْتُمْ مِنْ عَدُوِّكُمْ، وَالْفِطْرُ أَقْوَى لَكُمْ» فَكَانَتْ رُخْصَةً، فَمِنَّا مَنْ صَامَ، وَمِنَّا مَنْ أَفْطَرَ، ثُمَّ نَزَلْنَا مَنْزِلًا آخَرَ، فَقَالَ: إِنَّكُمْ مُصَبِّحُو عَدُوِّكُمْ، وَالْفِطْرُ أَقْوَى لَكُمْ، فَأَفْطِرُوا وَكَانَتْ عَزْمَةً، فَأَفْطَرْنَا، ثُمَّ قَالَ: لَقَدْ رَأَيْتُنَا نَصُومُ، مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ ذَلِكَ، فِي السَّفَرِ»
“একবার আমি আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলাম। তাঁর নিকট মানুষের খুব ভিড় ছিল। যখন লোকজন পৃথক হয়ে এদিক ওদিক চলে গেল তখন আমি বললাম, আমি আপনার নিকট ঐসব কথা জিজ্ঞাসা করব, না যা লোকেরা জিজ্ঞাসা করেছে। আমি তাকে সফরের অবস্থায় সাওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাওমরত অবস্থায় মক্কার দিকে রওনা করলাম। এরপর একস্থানে আমরা অবতরণ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এখন তোমরা শত্রুদের নিকটবর্তী হয়ে গিয়েছ। এখন ইফতারই তোমাদের জন্য শক্তিশালী থাকার উপায় এবং এ তোমাদের জন্য বিশেষ এক অবকাশ। তখন আমাদের কতক লোক সাওম পালন করল আবার কতক লোক সাওম ভঙ্গ করল। এরপর আমরা অন্য এক স্থানে অবতরণ করলাম। তখন তিনি বললেন ভোরেই তোমরা শত্রুর মুকাবিলা করবে। সুতরাং সাওম ভঙ্গ করা তোমাদের জন্য শক্তি বর্ধক। তাই তোমরা সাওম ভঙ্গ কর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ নির্দেশ অবশ্য পালনীয় ছিল। তাই আমরা সকলে সওম ভঙ্গ করলাম। এরপর আমরা দেখেছি আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামমের সাথে সফর অবস্থায় সাওম পালন করতাম”।[5]
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ، فَصَامَ بَعْضٌ، وَأَفْطَرَ بَعْضٌ فَتَحَزَّمَ الْمُفْطِرُونَ وَعَمِلُوا وَضَعُفَ الصُّوَّامُ، عَنْ بَعْضِ الْعَمَلِ، قَالَ: فَقَالَ فِي ذَلِكَ: ذَهَبَ الْمُفْطِرُونَ الْيَوْمَ بِالْأَجْرِ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো এক সফরে ছিলেন। তখন কেউ কেউ সাওম পালন করলেন আবার কেউ কেউ সাওম ছেড়ে দিলেন। এরপর যারা সাওম ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা শক্তিমত্তার সাথে কাজ করলেন এবং সাওম পালনকারী ব্যক্তিগণ সহজে দুর্বল হয়ে পড়লেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আজ সাওম পরিত্যাগকারীরা নেকী অর্জন করে নিল”।[6]
আবু সা‘ঈদ খুদরী ও জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা উভয়ে বলেন,
«سَافَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَصُومُ الصَّائِمُ، وَيُفْطِرُ الْمُفْطِرُ، فَلَا يَعِيبُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ»
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফর করেছিলাম।এমতাবস্থায় সাওম পালনকারী সাওম পালন করেছেন এবং সাওম ভঙ্গকারী সাওম ভঙ্গ করেছেন। কিন্তু এতে কেউ একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করেন নি”।[7]
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪২।
[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২১।
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং হাদীস নং ১১২১।
[5] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২০।
[6] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২০।
[7] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৭।