লগইন করুন
সাহাবাদের মধ্যে কুরআনে সবচেয়ে বেশি জ্ঞান ছিল তাঁর। বিভিন্ন ঘটনায় আমরা এর প্রমাণ পাই -যার একটি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর বিভিন্ন গোত্রের যাকাত দিতে অস্বীকার করার ঘটনা। সে সময় তিনি বলেছিলেন: ‘আল্লাহর কসম, যে সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো, যদি তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময় দিত এমন একটি উটের গলার রশিও দিতে অস্বীকার করে।” অথচ তখন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর মত সাহাবীরাও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে ইতস্তত করছিলেন।
ইসলামকে তিনিই সব চেয়ে ভাল বুঝেছিলেন-এ ঘটনা তারই প্রমাণ। মৃত্যুর পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন: আল্লাহ তাঁর এক বান্দাকে বেছে নেয়ার এখতিয়ার দিয়েছেন -দুনিয়া অথবা আল্লাহর কাছে যা আছে, সে আল্লাহর কাছে যা আছে তাকেই বেছে নিয়েছে। এ কথা যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পূর্বাভাব, তা একমাত্র আবু বকরই বুঝতে পেরে কেঁদেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছিলেন:
“আমি যদি কাউকে আল্লাহ ছাড়া বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করতাম, তাহলে সে হত আবু বকর; কিন্তু এ ছাড়া ইসলামে রয়েছে ভ্রাতৃত্ব ও প্রীতির বন্ধন। আবু বকরের দরজা ছাড়া মসজিদে প্রবেশের আর সকল দরজা বন্ধ করে দাও।”
তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ার বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তাঁর খুতবা ছিল সারগর্ভ, ভাষাশৈলী চমৎকার। মানুষকে কিভাবে তার বুদ্ধির স্তর অনুযায়ী আল্লাহর দিকে ডাকতে হবে সুন্দরভাবে, তাঁর কাছে সে শিক্ষা আমরা পেতে পারি।
হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় সকল সাহাবা মনক্ষুন্ন ছিলেন আবু বকর ছাড়া। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও নির্ভরা থেকে যেটা এসেছে। পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা সূরা ফাতহ -এ জানিয়েছিলেন যে, তা ছিল এক সুস্পষ্ট বিজয় এবং সকলেই পরে তা বুঝতে পেরেছেন।
মক্কা বিজয়ের পর নবম হিজরীতে প্রথম ইসলামী হজ্জ পালনের সময় তাঁকে হজ্জের আমীর হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নবীরা যেখানে মারা যান, সেখানেই তাঁদের কবর দেওয়া হয় একথা আবু বকরই জানিয়েছেন এবং এভাবে কোথায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর হবে সে বিতর্কের অবসান ঘটেছে। আর নবীরা যা রেখে যান মৃত্যুর পর, তা সাদাকা, তা মীরাস হিসাবে বন্টিত হয় না-একথাও আবু বকরের কাছ থেকেই সবাই জেনেছে, যখন ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা পিতার মৃত্যুর পর মীরাস দাবী করেছিলেন।