লগইন করুন
আল্লাহর অস্তিত্বে অস্বীকার আর নাস্তিক্যবাদের দিকে ছুটে যেতে মানুষকে উদ্বুদ্ধকারী আরেকটি উপাদান ছিল নাস্তিক্যবাদের সঙ্গে বস্তুবাদী শক্তির সম্মিলন। কারণ মানুষ দেখলো, যেদিন থেকে গির্জা ও গির্জার বিশ্বাসের শৃঙ্খল থেকে নিজেকে আযাদ করতে পেরেছে, সেদিন থেকেই ইউরোপ তাদের ধারণা মতে জীবনের সব রহস্য আবিষ্কার করতে পেরেছে আর আরোহণ করেছে বস্তুবাদী শক্তি ও উন্নতি-অগ্রগতির সানুদেশে। একইভাবে রাশিয়াও নিজেকে নাস্তিক্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার পরপরই রাতারাতি পরিণত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক শক্তিশালী রাষ্ট্রে। তারা আরও দেখলো, যেসব রাষ্ট্র অদ্যাবধি ধর্মকে আঁকড়ে ধরে আছে, বস্তুবাদী শক্তি ও শিল্প ইত্যাদির দিক থেকে সেগুলো অন্যদের তুলনায় যোজন যোজন পেছনে পড়ে আছে। আর এভাবেই তাদের মনে বদ্ধমূল গভীর বিশ্বাস গড়ে ওঠে: নাস্তিক্যবাদই হলো শক্তি আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল চাবিকাঠি। ধর্মের নামই হলো মূর্খতা আর পশ্চাৎপদতা। পাশাপাশি বস্তুবাদী বিজ্ঞানের নানা উদ্ভাবন আর আবিষ্কারের ফলে যেহেতু মানব জীবন অধিকাংশ ক্ষত্রেই সহজতর হয়ে পড়েছিল এবং মানুষের জীবন সুন্দর ও সুখময় করার ক্ষেত্রে এর প্রভাব সুস্পষ্টভাবেই যে কোনো মানুষের চোখে ধরা পড়ার মতো ছিল, সে কারণে সহজাতভাবেই মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে। বস্তুবাদী জ্ঞান-বিজ্ঞানকেই এক সময় বসিয়ে দেয় মা‘বুদের আসনে। কারণ তাদের পূর্ণ বিশ্বাস জন্মে যে, এই মা‘বুদই পারবে তাদের পার্থিব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান দিতে। আরও আগে বেড়ে, এই নতুন মা‘বুদই তাদের অন্য গ্রহে যাওয়ারও স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। এভাবেই নাস্তিক্যবাদের সঙ্গে নতুন নতুন আবিষ্কার আর বস্তুবাদী জ্ঞান-বিজ্ঞানের মিলন মানুষের ভেতরে এই প্রগাঢ় বিশ্বাস জন্মায় যে, বিজ্ঞান হলো নাস্তিক্যবাদের সহজাত ফলাফল। আর এভাবেই একটি ভ্রান্ত বিশ্বাসের ছদ্মাবরণে এই তুফান মানুষের মনের দরিয়ায় ঝড় বইয়ে দিয়ে তাকে অশান্ত ও সংক্ষুব্ধ করে তোলে।