লগইন করুন
বাবা-মায়েরা বাধ্য করছেন!
﴿ وَلَا تُكۡرِهُواْ فَتَيَٰتِكُمۡ عَلَى ٱلۡبِغَآءِ إِنۡ أَرَدۡنَ تَحَصُّنٗا لِّتَبۡتَغُواْ عَرَضَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۚ وَمَن يُكۡرِههُّنَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ مِنۢ بَعۡدِ إِكۡرَٰهِهِنَّ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣٣ ﴾ [النور: ٣٣]
‘তোমাদের দাসীরা সতীত্ব রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের কামনায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। আর যারা তাদেরকে বাধ্য করবে, নিশ্চয় তাদেরকে বাধ্য করার পর আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩৩)
আলোচ্য আয়াতে জাহেলী যুগের কতিপয় মুনাফেক সুবিধাবাদি লোকের স্বভাবের আলোচনা স্থান পেয়েছে। এরা নারীদের সতীত্ব বিক্রি করে নিজেদের আখের গোছাতো এবং সমাজকে করত কলুষিত। এই নারী-ব্যবসায়ীদের অন্যতম হোতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালূল। সে অন্য ধর্মাবলম্বী নারী তো বটেই, মুআজা নাম্নী এক মুসলিম দাসীকেও ব্যভিচারে বাধ্য করে অর্থোপার্জন করত। মুফাসসিরগণ লিখেছেন, মুনাফিক আব্দুল্লাহর মোট ছয়জন দাসী ছিল। মুআজা, মুসায়কা, উমায়মা, আমরাহ, আরওয়া এবং কুতায়লা। একদিন এদের একজন এক দিরহাম উপার্জন করে নিয়ে এলো এবং অপরজন আনল সামান্য কিছু অর্থ। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে উবায় তাকে আবার ওই কাজে লিপ্ত হয়ে সমপরিমাণ দিনার নিয়ে আসার আদেশ করল। কিন্তু ওই দাসী প্রতিবাদ করে বলল, অসম্ভব! আমাদের কাছে ইসলাম এসেছে এবং ইসলাম এই জঘন্য কাজকে হারাম ঘোষণা করেছে। সুতরাং আমার দ্বারা এটা আর সম্ভব নয়।’
ইবনে জারির রহিমাহুল্লাহ আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
كُنَّ نِسَاءً مَعْلُومَاتٍ فَكَانَ الرَّجُلُ مِنْ فُقَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ يَتَزَوَّجُ الْمَرْأَةَ مِنْهُنَّ لِتُنْفِقَ عَلَيْهِ، فَنَهَاهُمُ اللَّهُ عَنْ ذَلِكَ
‘এরা ছিল নির্দিষ্ট কিছু নারী। কতিপয় গরীব মুসলিম এদের বিয়ে করতে লাগলেন, যাতে এরা (নিজেদের) উপার্জন স্বামীদের পেছনে ব্যয় করে। আয়াতে আল্লাহ তাদের এহেন অভিসন্ধি থেকে নিষেধ করে দেন।’ [তাবারী, জামেউল বায়ান : ১৭/১৫০]
প্রাচীনত্বের সূত্র ধরেই নারীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সাধারণ পণ্যের মতোই এই অবলা নারীকে ব্যবসার পণ্য বানাতে অনেকেই সেজেছে মহাজন। এই মহাজনদের অর্থল্পিসায় পুড়ে ছাড়খার হচ্ছে নারীত্বের মর্যাদা, ভূলণ্ঠিত হচ্ছে নারীর সবচেয়ে সর্বদামী ‘সতীত্ব’। সভ্যতার লগি-বৈঠা ঠেলে আধুনিকতার যে মহাতরী আমরা তথাকথিত সভ্যতার নদীবন্দরে ভিড়িয়েছি, তার রং-রূপ যে কত কদর্য তা কল্পনাও করা মুশকিল।
‘অশ্লীলতার অভিযোগে চলচ্চিত্র জগতের বেশ ক‘জন অভিনেত্রী অভিযুক্ত। অভিযোগ রয়েছে আয়ের কোনো পথ না থাকায় মায়েরাই জোর করে মেয়েদের এ পথে ঠেলে দিচ্ছেন। নায়িকা ময়ূরীর মা সেতু ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে অশ্লীল নায়িকা নয়। সে কখনও অশ্লীল চরিত্রে অভিনয় করেনি। নির্মাতারা ডামি ব্যবহার করে আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে।’
তিনি বলেন, আমার মেয়ের নামের সঙ্গে অশ্লীল বিশেষণ শুনতে কষ্ট লাগে। ওর আসল নাম মুনমুন আক্তার লিজা। ১৯৯৭ সালে চলচ্ছিত্র নির্মাতা মালেক আফসারী আমাকে বললেন, আপনার মেয়েকে চলচ্চিত্রে নিতে চাই। আমি বললাম অভিনয় তো আমি করি। আমার মেয়েকে চলচ্চিত্রে কাজ করানোর কোনো ইচ্ছা আমার নেই। তিনি জোর দিয়ে বললেন, রোজী আফসারী অপেক্ষা করছেন। ওকে নিয়ে চলেন। সে তখন দশম শ্রেণির ছাত্রী। বারো বছর সাত মাস বয়স। আমি আবারো বললাম, আমার মেয়ে এখনও ছোটো। তাকে চলচ্চিত্রে দেব না। শেষ পর্যন্ত জোর করে রোজী ভাবীর কাছে নিয়ে গেলো আমাদের। রোজী ভাবী ওকে দেখে খুব খুশি হলেন। বললেন, আমাদের ঘরে এত সুন্দর মেয়ে থাকতে বাইরে নায়িকা খুঁজছি কেন? তাদের জোরাজুরিতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলাম।
আফসারী ভাই আমার হাতে ৫০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে ছবিতে নাম লেখান। নাম মৃত্যুর মুখে। তারপর সে নিয়মিত ছবি করে যেতে লাগল। বেশ সুনামও অর্জন করল। এক সময় শুনলাম সে নাকি অশ্লীল ছবি করছে। বিষয়টি তার মুখ থেকেই শুনতে চাইলাম। ও বলল, নির্মাতা বলেছে, গল্পের প্রয়োজনে শর্ট ড্রেস পরতে হবে। কিন্তু ছবিতে যেভাবে খোলামেলা দেখানো হয়েছে ওরকম শট দেইনি। পরে জানতে পারলাম, প্রযোজক-পরিচালক অন্য মেয়ে দিয়ে খোলামেলা শট নিয়ে তাতে ময়ূরীর মুখ লাগিয়ে চালিয়ে দিয়েছে!
ময়ূরীর মা আরো বলেন, বিশ্ব আধুনিক হয়েছে। সবকিছু উন্মুক্ত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের নায়িকারা গল্পের প্রয়োজনে পাতলা বা ছোট কাপড় না পরলে তাকে নিয়ে নির্মাতারা কাজ করবেন কেন? তিনি বলেন, দর্শক সাটেলাইট চ্যানেল, ডিভিডি, সিডি কিংবা প্রেক্ষাগৃহে বিদেশি ছবি এবং নীল ছবি অহরহ দেখছে। তাহলে এদেশের নায়িকাদের দেখতে অভ্যস্ত নয় কেন? তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের চোখ পাল্টেছে কিন্তু মন পাল্টায়নি।
সেতু ইসলামের প্রথম কথাগুলো ভালোই ছিল। তিনি হয়ত নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে অসমীচীন মনে করে মেয়েকে এই নষ্টপথে না দেয়ার প্রতিজ্ঞা করে সঠিক পথেই এগুচ্ছিলেন। কিন্তু অপরের পীড়াপীড়ি আর নিজের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা অস্পষ্ট ইচ্ছার কাছে হার মেনেছেন এবং পঞ্চাশ হাজার নগদ টাকায় প্রলুব্ধ হয়ে মেয়েকে চির অকল্যাণের পথে নামিয়েছেন। শুধু কি তাই! নিজ মেয়ে ও এদেশের অন্য মুসলিম নারীদেরও তিনি প্রলুব্ধ করছেন সংক্ষিপ্ত বসন-ভূষণে নিজেদেরকে উপস্থাপিত করতে। আক্ষেপ করছেন এই সমাজ কেন পশ্চিমাদের অনুকরণে এখনও অশ্লীলতার সরোবরে ঝাঁপিয়ে পড়ছে না! অশ্লীলতার অন্য যাবতীয় উপকরণ অনুসরণ করে প্রেক্ষাগৃহগুলোতেও নগ্নতার বিস্তৃতি ঘটছে না সেজন্য!
এই ভুলোপথের মায়েরা কি বোঝেন না, এদেশের তরুণ প্রজন্মই কেবল প্রেক্ষাগৃহগুলোকে ভীড় জমায় না; অনেক শিশুরাও ভীড় করে এখানে? সুতরাং এমনিতেই এই শিশুগুলো চোখ খোলার আগেই বদদীনী রপ্ত করছে। শিখছে অশ্লীলতা। এর মধ্যে যদি নগ্নতার মহড়া চলে এবং পশ্চিমাদের অনুসরণে এদেশের মুসলিম নারীদেরকে বিবসনা উপস্থাপনা করা হয় তবে এদেশের মুসলিমসত্তাই শুধু হুমকির মুখে পড়বে তাই নয়; দেশের ভবিষ্যতও অন্ধকারের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবে। কেননা অশ্লীলতায় নিমগ্ন একটা জাতি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না কিংবা বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।
সেতু ইসলামের এই কথাগুলো বুকের ভেতর কেমন শক্তভাবে বিঁধে। একজন মুসলিম নারীর নিজকন্যাদের ব্যাপারে এই মন্তব্য তা ভাবতেই কষ্ট হয়। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুলকেও যেন তিনি ছাড়িয়ে গেছেন। উবাই তো পরকন্যাদের এই পথে নামিয়ে পয়সা কামাতেন, কিন্তু এই মায়েরা যে নিজকন্যাকে এই পথে নামিয়েছেন!
এবার সভ্যতার তীর তরীটা ভারতভূমে নিয়ে যাই। ভারতভূমির নৈতিক অবক্ষয় বর্তমানে পৃথিবীর সব ইতিহাস ও অবক্ষয়কে ছাড়িয়ে গেছে। এরা চলিচ্চত্র ও হিন্দুস্তানী ললনাদের উদ্বাহু নৃত্যকৌশলে বিশ্ববাজার দখল করতে গিয়ে নিজেদের লজ্জার বাঁধন একেবারেই ঢিলে করে দিয়েছে। তাই ঘটছে জঘন্য সব ঘটনা, ইতিহাসের কালি যার বিভৎসরূপ নিরূপণ করতে ব্যর্থ। এই বিভৎসতা ছড়িয়ে পড়ছে ভারতের অস্তিমজ্জায়।
বিশ্বের যুবসম্প্রদায়কে ভ্রষ্ট করতে গিয়ে ভ্রষ্টতার মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে এদেশের প্রায় প্রতিটি নাগরিক। এদেশের চরিত্র ও নিষ্কলুষতা বলতে এখন আর তেমন কিছু বাকি নেই। কিছুদিন আগে খবর বেরুলো, ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে নিজের ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে! এমনকি অর্থের বিনিময়ে দুই শতাধিক পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে তার বাবা তাকে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ করেছে ওই মেয়ে নিজেই। গণমাধ্যমের কাছে নিজেই চরিত্রের এই অগ্নি পরীক্ষা দিয়েছে মেয়েটি। এমনকি তার বাবা কর্তৃক ধর্ষিত হওয়ারও অভিযোগ করেছে সে। এছাড়া তাকে না খাইয়ে রাখা হতো এবং অন্যান্য পুরুষদের সঙ্গে পাপকাজ করতে বাধ্য করা হতো বলে মেয়েটি জানায়।
মেয়েটি তার সঙ্গে যারা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে বলে নাম প্রকাশ করেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ঠিকাদার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পুলিশ সদস্যও রয়েছে। একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে মেয়েটি বলে, ‘বাসায় মায়ের অনুপস্থিতিতে প্রথমে আমার বাবা আমাকে লাঞ্ছিত করে!’
এরপর আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাবো এ কথা বলে তিনি আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন।’ ওই মেয়ে জানায়, যখন তার মা বিষয়টি বুঝতে পারে, তখন তাকে চুপ থাকার জন্য তার বাবা পরিবারের সব সদস্যকে হত্যার হুমকি দেয়। এই মেয়েটি দুই শতাধিক পুরুষ কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে। যেটা আপনার বিবেককে দংশিত ও স্তব্ধ করে দেবে।
এই হলো সভ্য যুগের বাবা! বেচারা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এরচেয়ে ঢের বেশি ভালো ছিল। সে নিজের মেয়েকে নোংরামীতে নামায়নি কিংবা নিজের মেয়ের সঙ্গে...
এশিয়া মহাদেশ জুড়ে দাদাগিরির দাম্ভিকতা ও সাম্রাজ্যবাদীতার মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা ভারত একটা জলজ্যান্ত ধর্ষণের খোঁয়াড়ে পরিণত হয়েছে। যার কারণে এখানে পিতৃত্ব পরিচয় বিলুপ্ত হয়ে ঘটছে এধরনের আরো ভয়াবহ ঘটনা। পৃথিবীতে একজন সন্তানের সবচেয়ে বড় আশ্রয় আর কী হতে পারে? এই প্রশ্ন করা হলে উত্তর খোঁজার জন্য খুব বেশি সময় নিতে হতো না আগে। এক মুহূর্তের ব্যবধানেই উত্তর আসতো পিতা-মাতা। সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকেই এই বিশ্বাস প্রবহমান ছিল। কিন্তু ভারতের নানান ঘটনা আবহমানকাল ধরে চলে আসা এই বিশ্বাসের ভিত্তিকে খুবই নড়বড়ে করে দিয়েছে।
কারণ এই আশ্রয় ভয়ঙ্কর কদর্য মনোবৃত্তির তাড়নার দাবানলে ভেঙ্গে পড়ে তা এখন বিস্ময়, অবিশ্বাস, হতাশা আর ঘৃণার স্থানে পরিণত হয়েছে। যে পিতা সন্তানের প্রথম ও শেষ আশ্রয়, যে পিতা সন্তানকে আগলে রাখেন সব অশুভ পরিণতি থেকে, সেই পিতা নামধারী কতক পাষণ্ডই ধর্ষণ করে চলেছে তার কিশোরী কন্যাকে, অতঃপর হত্যাও!
এধরনের আরেকটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে ভারতের মুম্বাইয়ের শহরতলীতে। উত্তর প্রদেশে থেকে আসা ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে তারই পিতা ও পিতার এক বন্ধু। গ্রেফারের পর দুই পাষণ্ডই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উত্তর প্রদেশের গাজিপুরের নিজ গ্রাম থেকে বিয়ের উদ্দেশে ছেলেবন্ধুর সঙ্গে পালিয়ে মুম্বাই চলে আসে কিশোরীটি। এখানে এসে বন্ধুর সঙ্গে যে বাসায় কিশোরীটি বসবাস করছিল সেখানে এক বন্ধুসহ তার বাবা এসে উপস্থিত হয়। বুঝিয়ে-শুনিয়ে মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি।
কিন্তু মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তার বাবা জোর করে কন্যাটিকে কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে বন্ধুসহ নিজ কন্যাকে ধর্ষণ করে পাষণ্ড পিতা। আর এ ঘটনার পরপরই মেয়েটি ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
দেশ-বিদেশের সব ঘটনার নির্মমতা ছাড়িয়ে গেছে খোদ আমাদের দেশের একটি ঘটনা। ঘটনাটি হচ্ছে; ডাক্তার বানানোর কথা বলে অন্তু নামের আপন ছোট বোনকে দিয়ে পতিতাবৃত্তি করিয়েছে তারই বড় বোন মাফিয়া। এমনই তথ্য বেরিয়ে আসে একুশে টেলিভিশনের একটি অনুসন্ধানি রিপোর্টে। বার বছর বয়সী অন্তু জানিয়েছে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই দীর্ঘদিন ধরে তাকে এমন জঘণ্য কাজ করিয়ে যাচ্ছে তার বড় বোন মাফিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর মালিবাগে। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। একুশে টেলিভিশনের ৭ নভেম্বর ২০১৩ ইং প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনটি নিম্নরূপ :
বড় হয়ে ডাক্তার হবে, মানুষের সেবা করবে, পরিবারের অভাব ঘোচাবে, এমন হাজারো স্বপ্ন নিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকায় বড় বোনের কাছে এসেছিলো অন্তু। কিন্তু আসার পর থেকে তাকে দিয়ে জোরপূর্বক শরীর-ব্যবসা করাতে থাকে তারই আপন বড় বোন। গোপনীয়ভাবে এমন তথ্য জানার পর একুশে টেলিভিশন ওই বাসায় উপস্থিত হলে অন্তুর বড়বোন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু একপর্যায়ে মাফিয়া তার অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করে। সে জানায়, তার ছোটবোনের পড়ালেখার খরচ জোটাতে এ লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ও।
এদিকে অন্তুর মা জানিয়েছে, তার বড় মেয়ে পড়ালেখার কথা বলেই অন্তুকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। কিন্তু এরপর কি হয়েছে তা সে জানে না। নিজের মেয়ের কাছেই যখন মেয়ের নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সে এখন কার কাছে যাবে এটাই এখন পরিবারটির জিজ্ঞাসা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী রক্সি ফাতেমা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, ‘মানুষ মনে করে তার নিরাপত্তার সর্বশেষ আশ্রয় হলো নিজের পরিবার। কিন্তু নিজ পরিবারেরই কেউ যখন তাকে এরকম জঘন্য অপকর্মের দিকে ঠেলে দেয়, তখন মানুষের নিরাপত্তার স্থান কোথায়?’
সায়মা আক্তার একজন গৃহিনী। তিনি জানান, ‘বড় বোনরা সাধারণত মায়ের মতোই হয়ে থাকে। সেই বোন যখন বোনকে বেশ্যাবৃত্তিতে বাধ্য করে, তাহলে সেটাকে মানবতার বিপর্যয়ই বলা চলে।’
এভাবেই কন্যা বাবার কাছে, ছোটো বোন বড় বোনের কাছে, মেয়ে মায়ের কাছে অপরিচিত ও অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এসব ঘটনায় বারবার একটা প্রশ্ন নাড়া দিচ্ছে, যে সমাজের পিতা তার কন্যার, বড়বোন তার ছোটোবোনের এবং মা তার মেয়ের ইজ্জত দিতে পারে না, আব্রু রক্ষার জামিন হতে পারে না সেই সমাজে অন্যরা কেন দেবে নারীর দাম, নারীর মর্যাদা? নারীর জন্য একই সঙ্গে করুণা ও আক্ষেপ যে, তারা তাদের সতীত্ব-সম্ভ্রমের ব্যাপারে সবদিক থেকেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে।
মায়ের উৎসাহে স্কুল পড়ুয়া মেয়ে এখন অন্তঃসত্ত্বা!
পাঠকগণ প্রশ্ন করতে পারেন, আলোচ্য গ্রন্থে বিধর্মীদের আলোচনা স্থান দেয়ার যৌক্তিকতা কী? এর বিজ্ঞোচিত যৌক্তিক কারণ পেশ করতে পারব না। তবে এতটুকু তো সত্য যে, এরাও সমাজেরও একটি অংশ, বরং বলা যায় এরাই পরিবর্তিত বিশ্বের নিয়ন্ত্রক। আর বিশ্ব ইতিহাসের অলিখিত সংবিধান হচ্ছে, নিয়ন্ত্রিতরা নিয়ন্ত্রকদের অনুগামী ও অনুসারী হয়। নির্মল হাওয়া খাওয়ার জন্য যিনি ঘরের দখিনা জানালা খোলা রাখেন, তিনিই আবার নর্দমার দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত বাতাস থেকে বাঁচতে উত্তরের জানালা বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু যে শুধু উত্তরের নোংরা বাতাসের খবরই রাখেন তিনি যেমন নির্মল বায়ু থেকে বঞ্চিত হন, তেমনিভাবে যে শুধু দখিনা নির্মল বায়ুর সন্ধান রাখেন তিনি উত্তরের নোংরা হাওয়ায় আক্রান্ত হন। সুতরাং বুদ্ধিমান তিনিই, যিনি ভালোকে ভালো জেনে তা গ্রহণ করেন এবং মন্দকে মন্দ জেনে তা বর্জন করেন।
তাই আমাদের হৃদয় জানালা দিয়ে যেন কেবলই ভালো ও অনুসরণীয় বস্তুটাই প্রবেশ করে, মন্দ ও নোংরা বস্তুটা প্রবেশ না করে সেজন্য আমাদের সচেতন হওয়া চাই। বিশ্বসমাজ ব্যবস্থার কোনটা নির্মল ও সেবনযোগ্য বায়ু এবং কোনটা বর্জনযোগ্য তা জানা থাকা একান্ত অপরিহার্য। এই ভাবনা থেকেই বিশ্বের নানাপ্রান্তে ঘটমান এসব ঘটনা উল্লেখ করে আমরা নিজেদেরকে সতর্ক করতে চাই এবং আমরা যাদের অনুসরণ করছি তারা প্রকৃতপক্ষেই অনুসরণযোগ্য কিনা সেটা বিবেচনার জন্যই এসব ঘটনা পাঠকদের বিবেকের কাঠগড়ায় পেশ করা হয়।
বস্তুতঃ এদের কালচার, সভ্যতা ও মনুষ্যত্ববোধ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা না থাকলে ভ্রান্তপথে পা বাড়াবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। শঙ্কা আছে বিবেকের আদালতের ভ্রান্ত ফয়সালা দেয়ার। ভয় আছে ভুল পথে চলার এবং অন্যকে চালাবার। ভূমিকা বড় করে বলে ফেললাম। এবার আগের কথায় ফিরে আসি...
সন্তানের মা হতে যাচ্ছে সয়া কিভেনি নামে এক স্কুল পড়ুয়া মেয়ে। তাকে নিয়ে সমাজের অন্য অভিভাবকরা নাক কুঁচকালেও তার মা জেনিস কিভেনির আনন্দের শেষ নেই। তিনিই মেয়েকে এতটুকু পথ নিয়ে আসতে উৎসাহ দিয়েছেন। মেয়েকে মাত্র ১২ বছর বয়সে বিকিনি পরা ছবি তোলার উৎসাহ দিয়েছেন। তা ছাপা হয়েছে একটি ম্যাগাজিনে। আর তারপর সয়া কিভেনিকে দিয়েছেন স্বাধীনতা। মাত্র ৭ বছর বয়স থেকে তাকে ডিসকো পার্টিতে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। আর এখন সয়া কিভেনির বয়ফ্রেন্ড জ্যাককে মেয়ের সঙ্গে রাত কাটানোর অবাধ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। সয়াদের বাড়িতেই রাতে থাকে এখন জ্যাক। এরই ফল হিসেবে সয়া কিভেনি এখন ১২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এ নিয়ে অনেকজন অনেক কথা বলছেন। তাতে কান দিচ্ছেন না সয়া কিভেনির মা জেনিস। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য সান। এতে বলা হয়, সয়া কিভেনির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানতে পেরে তার মা জেনিসের আর গর্ব ধরছে না। তিনি আহ্লাদে একেবারে গদগদ।
আর তাই বলছেন, আমাদের তিন বেডরুমের বাসাটি এখন লোকসংখ্যার তুলনায় একেবারে ছোট হয়ে গেছে। একই বাড়িতে থাকে আমার মেয়ে কোকো ও রিজি, ছেলে ট্যারোট, সয়ার বয়ফ্রেন্ড জ্যাক এবং আমার এক মেয়ের শিশু সন্তান। আমার আশা, সয়ার সন্তান যখন আসবে তখন কাউন্সিল আমাদেরকে ৪ বা ৫ বেডরুমের একটি বাসা দেবে। আমরা এরই মধ্যে সবকিছু গোছগাছ শুরু করেছি। সয়া গর্ভপাতে বিশ্বাসী নয়। সে যে মা হচ্ছে এটা শতভাগ নিশ্চিত। আমার বিশ্বাস সে চমৎকার একজন মা হবে। সে নিজের সন্তানদের শিখাবে আমার মতো শৃঙ্খলাবোধ! ওদিকে সন্তান ধারণ করতে পেরে সয়া কিভেনিও কম উৎফুল্ল নয়। সে বলেছে, প্রথমে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। তবে এখন আমি খুব উপভোগ করছি বিষয়টা!
ওই রিপোর্টে বলা হয়, সয়া কিভেনির মা জেনিস তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণে দিয়েছেন পূর্ণাঙ্গ সহায়তা। তাকে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করিয়েছেন। পরিণত বয়স না হলেও তাকে পাঠানো হয়েছে শরীর চর্চার কেন্দ্রে। ওদিকে সয়া কিভেনির যেসব বিকিনি পরা ছবি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এক অভিভাবক বলেছেন, আমাদের মনে হয় তার মায়ের এভাবে মেয়েকে ছেড়ে দেয়া ঠিক হয়নি। তিনি কি কিশোরী মেয়ে শিকারীদের নাম শোনেননি? জেনিস এক স্কুলের সাবেক সেক্রেটারি। এখন অবসরভাতা পান। তিনি সয়া কিভেনিকে ক্লিভল্যান্ডের থর্নাবিতে মাত্র ৭ বছর বয়সে ডিসকোতে যেতে দিতেন। তাকে মেকাপ করাতেন। পরাতেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোশাক। শরীরের উপরের অংশের অনেকটাই থাকতো অনাবৃত। জেনিস বলেন, সয়া এখনও মাত্র কিশোরী। অনেকটা অপরিণত। কিন্তু যখন সে তার বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে যায় তখন তার ওপর আমার শতভাগ আস্থা আছে। তার ১২ বা ১৩ বছর বয়সে সে একটা ১৮ বছরের কম বয়সীদের ডিসকোতে গিয়েছিল।
জেনিস স্বীকার করেছে, সে সয়া কিভেনির বয়ফ্রেন্ড জ্যাককে তার বাসায় রাতে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। তবে সয়া ও সে আলাদা আলাদা বেডরুমে থাকতো এবং ওই সময়ে সয়া ব্যবহার করতো পিল। সয়া এখন ১২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এই সময়ে তিনি তাদের আলাদাই রাখতে চান। তিনি বলেন, লোকজন মনে করতে পারে আমি ঘোড়ার আগে গাড়ি চালিয়ে আইন লঙ্ঘন করছি। কিন্তু আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি জানুয়ারিতে সয়ার বয়স ১৬ বছর পূর্ণ হবে। এর আগে তাকে ও জ্যাককে আমার বাসায় এক বেডরুমে থাকতে দেব না।
আমি শুরু করেছিলাম কুরআনের একটি আয়াত দিয়ে। যে আয়াতে মানুষের নৈতিক অধপতনের চূড়ান্ত অবস্থা উল্লেখ করা হয়েছে। আমি কয়েকটি তাফসীর ও হাদীসের কিতাবের উদ্বৃতি সেই সময়ের করুণ অবস্থা ও নৈতিক ভঙ্গুরতার চিত্র তুলে ধরেছি। আশা করি বিচক্ষণ পাঠক এ দুই সময়কার পার্থক্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। জাহেলিয়াতের ওই ঘোরতর অমানিশাতেও কিন্তু কোনো পিতা তার কন্যাকে ব্যভিচারে বাধ্য করেছে বলে কোনো ঘটনা আমরা জানি না। কিংবা ব্যভিচারের ফসল অবৈধ সন্তানে উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো কোনো ইতিহাসও সংরক্ষিত নেই। সয়া কিভেনির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানতে পেরে তার মা জেনিসের আর গর্ব ধরছে না। সে আহ্লাদে একেবারে গদগদ। উদ্বেলিত আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে সে বলেছে, ‘আমরা এরই মধ্যে সবকিছু গোছগাছ শুরু করেছি। সয়া গর্ভপাতে বিশ্বাসী নয়। সে যে মা হচ্ছে এটা শতভাগ নিশ্চিত। আমার বিশ্বাস সে চমৎকার একজন মা হবে। সে নিজের সন্তানদের শিখাবে আমার মতো শৃঙ্খলাবোধ!’
ওদিকে সন্তান ধারণ করতে পেরে সয়া কিভেনিও কম উৎফুল্ল নয়। সে বলেছে, ‘প্রথমে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। তবে এখন আমি খুব উপভোগ করছি বিষয়টা!’ একটা অবৈধ সম্পর্কের অবৈধ সন্তানকে গ্রহণ করতে যে সমাজ এত উদ্বেলিত থাকে সেই সমাজে বৈধতার কোনো মূল্য আছে কি? যে সমাজে ব্যভিচার ঘৃণিত তো নয়ই, বরং উপভোগের বস্তু সেই সমাজকে মনুষ্যত্বের কাতারে রাখার চেষ্টা নিজেদের সততাকে চরমভাবে লঙ্ঘিত করার নামান্তর। মানুষ আজ এতটুকু পারে? আসলে বিজ্ঞানের যুগে এসে সবকিছুর হিসাব-নিকাষ বদলে গেছে। বিজ্ঞান যেমন মানুষকে হাজার রকমের থমকে দেয়া বিস্ময় বস্তু উপহার দিয়েছে তেমনিভাবে মানুষও বিজ্ঞানের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে ঘটাচ্ছে অদ্ভুত ও বিস্ময়কর নানান ঘটনা। এসব ঘটনায় কেঁদে উঠছে মানবতার শুদ্ধপ্রাণ, নির্মলতা হারাচ্ছে সভ্যতার তাজা ফুল। পক্ষান্তরে অট্টহাসিতে মেতে উঠছে বর্বরতা, অসভ্যতার ভূতুড়ে দাঁত। কিন্তু এসবের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠছে যে বিষয় সেটা হচ্ছে, আমরা মানবতার নির্মল ফুলের নির্জীবতায় বিষণ্ন হচ্ছি না; অসভ্যতার ভূতুড়ে হাসিতে ফেটে পড়ছি! এ হাসি সভ্যতার উপহার! বিজ্ঞানের দান!! উৎকর্ষের সুফল!!!