লগইন করুন
উত্তর: ইসলামী জ্ঞান শিক্ষার কাজে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত ছাত্রদেরকে যাকাত দেওয়া জায়েয, যদিও তারা কামাই রোজগার করার সামর্থ রাখে। কেননা ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা করা এক প্রকার জিহাদ। আর আল্লাহর পথে জিহাদ হচ্ছে যাকাতের একটি খাত। আল্লাহ বলেন,
﴿إِنَّمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡعَٰمِلِينَ عَلَيۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَٰرِمِينَ وَفِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِۖ فَرِيضَةٗ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ ٦٠﴾ [التوبة: ٦٠]
“যাকাত তো হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের আর এ যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং ইসলামের প্রতি যাদের হৃদয় আকৃষ্ট করতে হয়, গোলাম আযাদ করার জন্য, ঋণ পরিশোধে, আল্লাহর পথে জিহাদে আর মুসাফিরদের সাহায্যে। এ বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী অতিপ্রজ্ঞাময়।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬০]
কিন্তু শিক্ষার্থী যদি শুধুমাত্র দুনিয়াবী শিক্ষায় সম্পূর্ণরূপে ব্রতী থাকে তবে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না। আমরা তাকে বলব তুমি তো দুনিয়ার কর্মেই ব্যস্ত আছ। অতএব, চাকরী করার মাধ্যমে তো দুনিয়া অর্জন করতে পার। তাই তোমাকে যাকাত দেওয়া যাবে না।
কিন্তু আমরা যদি এমন লোক পাই যে নিজ পানাহার ও বাসস্থানের জন্য রোজগার করতে সক্ষম কিন্তু তার নিকট এমন সম্পদ নেই যা দ্বারা সে বিবাহ করতে পারে, তবে যাকাতের অর্থ দিয়ে কি এ ব্যক্তির বিবাহের ব্যবস্থা করা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, বিবাহের জন্য তাকে যাকাত দেওয়া যাবে। যাকাত থেকে তার পূর্ণ মাহর আদায় করা যাবে।
যদি প্রশ্ন করা হয় বিবাহে অপরাগ ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া কীভাবে জায়েয হতে পারে?
জবাবে আমরা বলব: কেননা মানুষের বিবাহের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। কখনো খানা পিনার মতই এর প্রয়োজনীয়তা মানুষের জীবনে প্রকট হয়ে দেখা যায়। এ জন্য বিদ্বানগণ বলেন, কারো ভরণ-পোষণের অর্থ বহন করা যার ওপর আবশ্যক থাকে তার উপর ওয়াজিব হচ্ছে তার বিবাহেরও ব্যবস্থা করে দেওয়া- যদি তার কাছে প্রয়োজনীয় সম্পদ থাকে। অতএব, পুত্র যদি বিবাহ উপযুক্ত হয় এবং বিবাহের দরকার মনে করে তবে পিতার উপর ওয়াজিব হচ্ছে পুত্রের বিবাহের ব্যবস্থা করে দেওয়া। কিন্তু আমি শুনেছি পুত্র যদি বিবাহের কথা উত্থাপন করে তবে কোনো কোনো পিতা নিজেদের যৌবনকালের কথা ভুলে গিয়ে পুত্রকে ধমক দেন আর বলেন, নিজের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করে উপার্জন কর তারপর বিবাহ কর। এটা মোটেও জায়েয নয়। পিতা সামর্থবান থাকলে পুত্রের সাথে এরকম ব্যবহার করা হারাম। পিতার সামর্থ থাকা সত্বেও পুত্রের বিবাহের ব্যবস্থা না করলে সে অবশ্যই কিয়ামত দিবসে পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবে।
একটি মাসাআলা: জনৈক ব্যক্তির কয়েকটি পুত্র সন্তান আছে। সে যদি উপযুক্ত বড় ছেলের বিবাহ নিজের খরচে প্রদান করে, তবে মৃত্যুর পূর্বে ছোট ছেলেদের জন্য কি নিজ সম্পত্তি থেকে বড় ছেলের মাহরের অনুরূপ প্রদান করার ওছিয়ত করে যেতে পারে?
উত্তর: না এরূপ করা জায়েয হবে না। তবে পিতার জীবদ্দশাতেই যদি ছোট ছেলেরা বিবাহের উপযুক্ত হয় এবং বড় ছেলের ন্যায় তাদের নিজ খরচে বিবাহ দিয়ে দেয় তবে তা জায়েয। কিন্তু তারা এখনও ছোট তাই মৃত্যুর পর তাদের জন্য আলাদা অছিয়ত করে যাবে তা হারাম। এর দলীল হচ্ছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَعْطَى لِكُلِّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَلَا وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ»
“নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক অধিকারীকে তার নির্দিষ্ট অধিকার প্রদান করেছেন। অতএব, উত্তরাধিকারের জন্য কোনো অছিয়ত নেই।”[1]
>