লগইন করুন
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«لَأَنْ يَجْلِسَ أَحَدُكُمْ عَلَى جَمْرَةٍ فَتُحْرِقَ ثِيَابَهُ، فَتَخْلُصَ إِلَى جِلْدِهِ، خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَجْلِسَ عَلَى قَبْرٍ»
“যদি তোমাদের কারো অঙ্গারের উপর বসার দরুন তার কাপড় পুড়ে দেহের চামড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তবুও তা তার জন্য কবরের উপর বসা থেকে উত্তম”। [1]
কবর পা দিয়ে মাড়ানোর কাজ অনেকেই করে থাকে। তারা যখন নিজেদের কাউকে কবরস্থানে দাফন করতে নিয়ে আসে, তখন দেখা যায় পার্শ্ববর্তী কবরগুলো মাড়াচ্ছে, কখনও আবার জুতা পায়ে মাড়াচ্ছে, কোনো পরোয়াই করছে না। অন্যান্য মৃতদের প্রতি যেন তাদের সম্মানবোধই নেই। অথচ এ সকল মৃত ব্যক্তির সম্মানে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«لَأَنْ أَمْشِيَ عَلَى جَمْرَةٍ، أَوْ سَيْفٍ، أَوْ أَخْصِفَ نَعْلِي بِرِجْلِي، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَمْشِيَ عَلَى قَبْرِ مُسْلِم»
“আগুনের অঙ্গার কিংবা তরবারির উপর দিয়ে আমার হেঁটে যাওয়া কিংবা আমার পায়ের চামড়া দ্বারা আমার চটি তৈরি করা একজন মুসলিমের কবরের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া থেকে আমার নিকট অধিক প্রিয়”।[2]
সুতরাং যে ব্যক্তি কোনো কবরস্থানের মালিক হয়ে সেখানে ব্যবসা কেন্দ্র কিংবা বাড়ী ঘর গড়ে তোলে তার অবস্থা কী দাঁড়াবে? কিছু লোকের কবরস্থানে পেশাব-পায়খানা করার অভ্যাস আছে। তাদের যখন পেশাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয় তখন তারা কবর স্থানের প্রাচীর টপকিয়ে কিংবা খোলাস্থান দিয়ে ঢুকে পড়ে এবং মল-মূত্রের নাপাকী ও গন্ধ দ্বারা মৃতদের কষ্ট দেয়। কবরের উপর পেশাব-পায়খানা করা প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَمَا أُبَالِي أَوَسْطَ الْقُبُورِ قَضَيْتُ حَاجَتِي، أَوْ وَسْطَ السُّوقِ»
‘কবরস্থানের মাঝে মল-মূত্র ত্যাগ করতে পারলে বাজারের মধ্যস্থলে মল-মূত্র ত্যাগের কোনো পরোয়া করি না”।[3]
অর্থাৎ কবরস্থানে মল-মূত্র ত্যাগের কদর্যতা আর বাজারের মধ্যে জনগণের সামনে সতর খোলা ও মল-মূত্র ত্যাগের কদর্যতা একই সমান। সুতরাং কবরস্থানে মল-মূত্র ত্যাগ গুনাহ তো বটেই এমনকি তা লোকালয়ে মল-মূত্র ত্যাগের ন্যায় লজ্জাকরও বটে।
আর যারা ইচ্ছে করে কবরস্থানে ময়লা-আবর্জনা ইত্যাকার জিনিস ফেলে তারাও এ ভৎর্সনায় শামিল হবে। এছাড়া কবর যিয়ারতকালে কবরসমূহের মাঝ দিয়ে যাতায়াতের সময় জুতা খুলে রাখাই আদবের পরিচয়।
>[2] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৫৭৬, সনদ সহীহ।
[3] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৫৬৭; সহীহুল জামে‘, হাদীস নং ৫০৩৮।