ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
বাংলাদেশে প্রচলিত শির্ক বিদ‘আত ও কুসংস্কার পর্যালোচনা ৩. বাংলাদেশে শির্ক ও বিদ‘আতের ভয়াবহতা ইসলামহাউজ.কম
৩.৭ প্রদর্শনেচ্ছা

কাউকে খুশী করা, কারো প্রশংসা বা বাহ বাহ কুড়ানোর জন্য অনেকেই অনেক ভাল কাজ করে থাকে। ইসলামের দৃষ্টিতে ছাওয়াবের নিয়তে যে কোনো ভাল কাজ করা ইবাদতেরই অংশ। আর ইবাদত পাওয়ার একমাত্র যোগ্য সত্তাই হচ্ছেন, মহান রাব্বুল আলামীন। যে জন্য যে সকল ভাল কাজের সামান্য হলেও প্রদর্শনেচ্ছা বিদ্যমান থাকে, তা মূলত: পরিপূর্ণভাবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয় না বরং অন্যকে খুশী করা, অন্যের থেকে প্রশংসা পাওয়া প্রভৃতি উদ্দেশ্য সেখানে কিঞ্চিত হলেও থাকে বলে প্রদর্শনেচ্ছা জড়িত যে কোনো কাজই শির্কের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সুন্দর উদাহরণ উপস্থাপন করে বলেন:

الا أخبر كم بما هو اخوف عليكم عندي من المسيح الدجال قالوا بلى قال الشرك الخفى يقوم الرجل فيصلى فيزين صلاته لما يرى من نظر رجل.

আমি কি এক চোখ বিশিষ্ট দাজ্জালের চেয়ে আরো ভয়াবহ একটি বিষয়ে তোমাদেরকে সংবাদ দেব না? সাহাবীগণ বললেন- হ্যাঁ, তিনি বললেন, ‘তা হচ্ছে গোপন শির্ক।’ কোনো ব্যক্তি ছালাত আদায় করার জন্য দাঁড়াল আর তা অন্য মানুষের দৃষ্টিতে ভাল প্রমাণের জন্য সুন্দর করে আদায় করল।[1] অর্থাৎ নিজে সাধারণত: যে ভাবে ছালাত আদায় করা হয় অন্য কেউ তা দেখছে বিধায় তা আরো সুন্দর করে, আদায় করা, ছোট শির্কের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে একটি হাদীসে কুদসীতে মহান আল্লাহ বলেন:

انا اغنى الأغنياء عن الشرك فمن عمل عملا لشرك فيه غيري تركته وشركه

আমি শির্কযুক্ত আমল (কাজ) থেকে মুখাপেক্ষীহীন। যে কেউ কোনো কাজ করল এবং তাতে আমার সাথে অন্যকে অংশীদার বানাল, আমি ঐ কাজ ও যাকে অংশীদার বানাল উভয়কেই বর্জন করি।[2] আমাদের সমাজে লোক দেখানোর জন্য দান করা, প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, অন্যের উপকার করা, হাজী বলা হবে বলে হজ্জ করা, খ্যাতির জন্য যে কোনো কাজ করা প্রভৃতি অনবরতই হচ্ছে। এ গুলো শির্কের অন্তর্ভুক্ত। কিয়ামতে এই কারণেই অনেক দানবীর, শহীদ ও আলিমকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।[3]

>
[1] . ইমাম মুসলিম, প্রাগুক্ত, ৪খ, পৃ. ২২৮৯।

[2]. ইবন মাজাহ্‌, মুহাম্মাদ ইবন য়াযীদ আল-কাযবিনী, সনান ইবন মাজা, রিয়াদ, ১৯৮৪, ২য় মুদ্রণ, ২খ, পৃ. ৪২৬।

[3] . আত-তিরমিযী, আবু’ ঈসা মুহাম্মদ, সুনানুত, তিরমিযী, দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী’, তা.বি, ৪ খ, পৃ. ৫৯১-৫৯৩।