সুন্নী মাযহাবের ইমামদের প্রতি বারো-ইমামের অনুসারী হওয়ার দাবীদার ইমামিয়া শিয়াদের বড় অপবাদ হল- তারা ছিলেন মূর্খ এবং আল্লাহ্র দ্বীনের ব্যাপারে একেবারে অজ্ঞ। তারা ইলমের ক্ষেত্রে আহলে বাইতের আলেমদের কাছে ঋণী। এই মর্মে তাদের প্রাচীন ও সমকালীন গ্রন্থাবলীতে অনেক উদাহরণ রয়েছে।
শিয়া আলেম মুহাম্মদ ইবন উমর আলকিশ্বি[1] ইমাম আহমাদের ব্যাপারে বলেন, “মূর্খ, আহলে বাইতের শত্রু, তাঁতের কাজ করত, (বা নকল করতে প্রাজ্ঞ) সে ফিকহবিদ নয়।”[2]
অনুরূপভাবে মুহাম্মদ বাকের আলমাজলেসি ‘বিহার’[3] নামক গ্রন্থে চার মাযহাবের ইমামদের মূখর্তা প্রমাণ করার জন্য অনেকগুলো রেওয়ায়েত নিয়ে এসেছে। বিশেষতঃ আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ এর ব্যাপারে।
সে তার বিহার গ্রন্থে[4] একটা পরিচ্ছেদের শিরোনাম দিয়েছে এভাবে, “মানুষের কাছে সঠিক ইলম যা আছে তা কেবল আহলে বাইতের কাছ থেকে যা তাদের কাছে পৌঁছেছে।”[5]
অনুরূপভাবে বায়াযী[6] তার ‘সিরাত’ গ্রন্থে[7] একটি অধ্যায়ের শিরোনাম দেয় এভাবে, “অধ্যায়: চার ইমামের প্রত্যেকের অসংখ্য মাসয়ালার সিদ্ধান্ত ভুল।” তদ্রূপ বারো ইমামের অনুসারী শিয়া আমীর মুহাম্মদ আল-কাযউইনী বলেন, “তাদের মধ্য থেকে ইমাম আবু হানীফা নুমান ইবন সাবিত ফিকহ শিখেছে ইমাম জাফর ইবন মুহাম্মদ আস-সাদেকের কাছ থেকে। ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের হাদীসের ও ফিকহের ওস্তাদ ছিল মুহাম্মদ ইবন ফুযাইল ইবন গাযওয়ান আদ্দব্বী[8] এবং তার সাথে আরো শিয়ারা ছিলেন।”[9]
[2] বায়াযী তার কাছ থেকে আসসিরাতুল মুসতাকিমে উল্লেখ করেছেন (৩/২২৩)।
[3] দেখুন: মুনাযারাত বায়না আবি হানীফা ওয়া জাফর আসসাদেক (২/২৮৬-২৯৫), (১০/২১২-২১৫) এ ছাড়া মুনাযারাত বায়না আবি হানীফা ওয়া শায়তানুত ত্বাক (১০/২৩০-২৩২)।
[4] দেখুন: (২/১৭৯)।
[5]বারো ইমামের অনুসারী সমকালীন শিয়া হাসেম, যে হুসাইনী নামে পরিচিত। সে দাবী করে যে, চার ইমামের প্রত্যেকে কোন না কোন শিয়া আলেমের ছাত্র ছিল। দেখুন তার লেখা বই ‘আল মাবাদি আল আরবাআ’ লিল ফিকহিল জাফরী’ (পৃ: ৩৬৪, ৩৬৫, ৩৭০, ৩৭৬, ৩৮২)।
[6] তিনি হচ্ছেন- আলী ইবন ইউনুস আলআমেলী আননাবাতী আলবায়াযী যাইনুল আবেদীন আবু মুহাম্মদ বার ইমামের অনুসারী তর্কবিদ। তার গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে- আসসিরাতুল মুস্তাকিম ইলা মুসতাহিক্কিত তাকদীম, আল লুমআহ্ ফিল মানতেক, তার মৃত্যু ৮৭৭হিঃ। [আমালুল আ-মাল (১/১৩৫), মু’জামুল মুআল্লিফীন (৭/২৬৬)।
[7] দেখুন: বায়াযীর আসসিরাতুল মুস্তাকিম (৩/১৮১) ও তার পরবর্তী অংশ। এছাড়া আবু হানীফাকে মূর্খতা ও অল্প ইলমের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন (৩/২১১, ২১৩-২১৪) পৃষ্ঠাতে।
[8] তার কাছ থেকে সাওরী, ইমাম আহমাদ, ইবনে রাহুইয়াহ ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন। ইবনে হাজার বলেছেন, ‘সে কট্টর শিয়া’।” [দেখুন: আললিসান(৭/৩৭২)।
[9] আশ শিয়া ফি আকায়িদিহিম (পৃ:১৫)।