ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মুখতাসারুল ফাওয়ায়েদ (ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এর আল-ফাওয়ায়েদ অবলম্বনে) পরিচ্ছেদ: আল্লাহর যিকির ও তাঁর শুকরিয়া ইসলামহাউজ.কম
পরিচ্ছেদ: আল্লাহর যিকির ও তাঁর শুকরিয়া

যিকির ও শুকর এ দু’টি মূল কায়েদার ওপর ভিত্তি করে দীন প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿فَٱذۡكُرُونِيٓ أَذۡكُرۡكُمۡ وَٱشۡكُرُواْ لِي وَلَا تَكۡفُرُونِ١٥٢﴾ [البقرة: ١٥٢]

“অতএব, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর আমার শোকর আদায় কর, আমার সাথে কুফরী করো না।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৫২]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেছেন,

«يَا مُعَاذُ، وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّكَ، وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّكَ» ، فَقَالَ: " أُوصِيكَ يَا مُعَاذُ لَا تَدَعَنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ تَقُولُ: اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ».

“হে মু‘আয, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমিও আপনাকে ভালোবাসি। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যা তুমি প্রত্যেক সালাতের পরে বলতে বাদ দেবে না। হে আল্লাহ আপনার যিকির, শুকরিয়া আদায় এবং আপনার ইবাদত উত্তমরূপে করতে আমাকে সাহায্য করুন।”[1] এখানে যিকির বলতে শুধু মুখের যিকিরকে বুঝানো হয় নি; বরং অন্তর ও মুখ উভয়ের যিকির উদ্দেশ্য। আল্লাহর যিকির বলতে তাঁর নামসমূহ, সিফাতসমূহ, তাঁর আদেশ, নিষেধ ও তাঁর বাণী ইত্যাদি স্মরণ করা সবই যিকিরের অন্তর্ভুক্ত। আর তাঁর যিকির করতে হলে তাঁকে জানা, তাঁর প্রতি ঈমান আনা, তাঁর পরিপূর্ণ সিফাত, তাঁর সুউচ্চ মর্যাদা, তাঁর সব ধরণের প্রশংসা জানা ও ঈমান আনা অত্যাবশ্যকীয় করে। আর এগুলো তাওহীদ ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না। অতএব, তাঁর প্রকৃত যিকির উপরোক্ত সব কাজ করা অত্যাবশ্যকীয় করে। এছাড়াও তাঁর নি‘আমত, অনুগ্রহ ও সৃষ্টির প্রতি ইহসান ইত্যাদির স্মরণও তাঁর যিকির।অন্যদিকে শুকর হলো, তাঁর আনুগত্য করা এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে সব ধরণের পদ্ধতিতে তাঁর নৈকট্য লাভ করা। এ বিষয় দু’টি দীনের ইজমা বিষয়। সুতরাং তাঁর যিকির তাঁকে চেনা অত্যাবশ্যকীয় করে, আর তাঁর শুকর তাঁর আনুগত্যকে অন্তর্ভুক্ত করে। এ দু’টি উদ্দেশ্যেই আল্লাহ জিন, মানব, আসমান, জমিন সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। এ দু’টি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তিনি সাওয়াব ও শাস্তির বিধান করেছেন, কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন এবং রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছেন। এ বাস্তবতার জন্যই তিনি আসমান, জমিন ও দুয়ের মধ্যকার সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। এ দু’টির বিপরীত হলো বাতিল ও অনর্থক কাজ, যা থেকে আল্লাহ ঊর্ধ্বে ও পবিত্র।

>
[1] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫২২; নাসায়ী, হাদীস নং ১৩০৩। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।