মিকাতের প্রকারভেদ:
মিকাত দু’প্রকার। তাহলো:
১- মিকাত যামানী বা সময়ের মিকাত। তা হলো হজের মাসসমূহ। অর্থাৎ শাওয়াল, যিলকদ ও যিলহজ মাস।
২- মিকাতে মাকানী বা স্থানের মিকাত। হজ বা উমরা পালনকারীকে ইহরামের নিয়ত ব্যতীত এ সব স্থান অতিক্রম করা হারাম। এগুলো পাঁচটি:
ক- যুলহুলাইফা: যুলহুলাইফা মদীনাবাসী ও মদীনার দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি মক্কা থেকে ৪৩৫ কি.মি দূরে এবং মক্কা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী মিকাত।
খ- আল-জুহফা: এটি সিরিয়া, মিসরসহ সে দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি রাবেগ শহরের কাছে অবস্থিত মক্কা থেকে ১৮০ কি.মি দূরে অবস্থিত। বর্তমানে লোকেরা সেটার বদলে রাবেগ শহর থেকে ইহরাম বাঁধে।
গ- ইয়ালামলাম: এটি ইয়েমেন ও ইয়ামেনের দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি মূলতঃ একটি উপত্যকা যা মক্কা থেকে ৯২ কি.মি দূরে অবস্থিত।
ঘ- কারনুল মানাযিল: এটি নাজদ, তায়েফ ও এদিক থেকে দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। বর্তমানে এর নাম ‘আস-সাইলুল কাবীর’। মক্কা থেকে ৭৫ কি.মি দূরে অবস্থিত। ওয়াদি মুহাররাম কারনুল মানাযিলের সবচেয়ে উঁচু স্থান।
ঙ- যাতু ইরক: এটি ইরাক, খোরাসান, নজদের মধ্য অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল ও এর ওপারের দেশবাসীদের দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি একটি উপত্যকা। এটি ‘দরীবা’ নামে পরিচিত। এটি মক্কা থেকে প্রায় ১০০ কি.মি দূরে অবস্থিত।
এসব মিকাত উপরোক্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ও যারা এ দিক থেকে হজ ও উমরা আদায় করার জন্য অতিক্রম করবে তাদের মিকাত।
যাদের বাড়ি উপরোক্ত মিকাতের অভ্যন্তরে মক্কার দিকে, তাদের হজ ও উমরার মিকাত নিজের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। তবে যাদের বাড়ি মক্কার মধ্যে তারা হারাম এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে ‘হিল’ বা হালাল এলাকায় এসে উমরার নিয়ত করবে। আর হজের জন্য মক্কায় বসেই নিয়ত করবে।
যাদের পথ এসব মিকাতের পথে পড়ে না তারা তাদের মিকাতের সর্বাধিক কাছাকাছি ও সমান সীমায় পৌঁছলে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধবে। চাই তারা বিমান বা গাড়ি বা নৌযান যেকোনো পথে আসুক।
ইহরাম ছাড়া এসব মিকাত অতিক্রম করা জায়েয নেই। কেউ ইহরাম ছাড়া এসব স্থান অতিক্রম করলে তাকে সেখানে ফিরে যেতে হবে এবং সেখান থেকে ইহরাম বাঁধতে হবে। আর যদি সেখানে ফিরে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে যেখানে আছে সেখান থেকেই ইহরাম বাঁধবে এবং তাকে দম দিতে হবে। তার হজ ও উমরা সহীহ হবে। আর মিকাতের আগে থেকেই ইহরাম বাঁধলে মাকরূহসহ জায়েয হবে।