ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
সহজ ফিকহ শিক্ষা প্রথম অধ্যয়: ইবাদাত ইসলামহাউজ.কম
জানাযা

ক- মানুষ যতই দীর্ঘ হায়াতপ্রাপ্ত হোক তাকে মরতে হবেই:

মানুষকে কর্মক্ষেত্র দুনিয়া থেকে ফলাফল প্রাপ্তির স্থান আখিরাতে যেতেই হবে। এক মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের অধিকার হলো সে অসুস্থ হলে তার সেবা-শুশ্রূষা করবে এবং সে মারা গেলে তার জানাযায় উপস্থিত হবে।

  • অসুস্থ ব্যক্তির সেবা-শুশ্রূষা করতে যাওয়া, তাকে তাওবা ও অসিয়াতের উপদেশ দেওয়া সুন্নাত।
  • কারো মৃত্যু নিকটবর্তী হলে তাকে ডান কাতে কিবলামুখী করে শোয়ানো সুন্নাত, যদি এতে তার কষ্ট না হয়। কষ্ট হলে চিৎ হয়ে কিবলার দিকে পা দিয়ে শোয়াবে। মাথা সামান্য উচুঁ করে রাখবে। তাকে কালেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” তালকীন দিবে। পানি বা শরবত দিয়ে গলা ভিজাবে। তার কাছে সূরা ইয়াসীন পড়বে।
  • মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলে সুন্নাত হলো তার চোখ বন্ধ করে দেওয়া, মাথা ও থুতনি বন্ধনি দ্বারা বেধে দেওয়া, শরীরের জোড়াগুলো আলতোভাবে নরম করে দেওয়া, মাইয়্যেতকে মাটি থেকে কোনো কিছুর উপর রাখা, তার পরনের কাপড় খুলে আলাদা কাপড় দ্বারা সতর ঢেকে দেওয়া, খাটের উপর রাখা সম্ভব হলে ডান দিক কিবলামুখী করে অথবা চিৎ করে শুয়ে কিবলার দিকে পা বিছিয়ে দিবে।

খ- মাইয়্যেতকে গোসল দেওয়া:

পুরুষ মাইয়্যেতের অসিয়তকৃত ব্যক্তি তাকে গোসল দেওয়ার ব্যাপারে বেশি হকদার, অতঃপর তার বাবা, অতঃপর তার দাদা, অতঃপর তার নিকটাত্মীয়। মহিলা মাইয়্যেতের অসিয়তকৃত মহিলা ব্যক্তি তাকে গোসল দেওয়ার ব্যাপারে বেশি হকদার, অতঃপর তার মা, অতঃপর তার দাদী, অতঃপর তার নিকটাত্মীয় মহিলারা তাকে গোসল দিবে। মুসলিম স্বামী-স্ত্রী একজন অন্যজনকে গোসল দিতে পারবে।

গোসলদানকারী বিবেকসম্পন্ন, ভালো-মন্দ পার্থক্যকারী, বিশ্বস্ত ও গোসলদানে পারদর্শী হতে হবে।

মুসলিম ব্যক্তি কর্তৃক কাফিরকে গোসল দেওয়া বা দাফন কাপন পরানো হারাম, বরং মাটিতে পুতে রাখার মতো কাউকে পাওয়া না গেলে মুসলিম ব্যক্তি তাকে মাটিতে পুতে রাখবে।

গ- মাইয়্যেতকে গোসলের সুন্নাত পদ্ধতি:

প্রথমে তার লজ্জাস্থান ঢেকে দেবে, অতঃপর তার মাথাটা বসার মতো করে উপরের দিকে উঠাবে এবং আস্তে করে পেটে চাপ দিবে, যাতে করে পেটের ময়লা বেরিয়ে যায়। এরপর বেশি করে পানি ঢেলে তা পরিস্কার করে নিবে। তারপর হাতে কাপড় জড়িয়ে বা হাত মোজা পরে তা দিয়ে উভয় লজ্জাস্থানকে (দৃষ্টি না দিয়ে) ধৌত করবে। তারপর আরেকটি নেকড়া হাতে নিয়ে তাকে অযু করিয়ে নিবে, যা মুস্তাহাব। তারপর গোসলের নিয়ত করবে এবং ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। পানি, বরই পাতা বা সাবান দিয়ে গোসল করাবে। প্রথমে মাথা ও দাড়ি ধৌত করবে। অতঃপর ডানপাশ, অতঃপর বামপাশ ধৌত করবে। অতঃপর প্রথমবারের মতো করে দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার ধৌত করবে। এতে যদি পূর্ণরূপে পরিস্কার না হয় তবে পরিস্কার হওয়া পর্যন্ত ধৌত করতে হবে। শেষবারের সময় পানির সাথে কাফুর বা সুগন্ধি মিশাবে। মাইয়্যেতের মোচ বা নখ বড় হলে তা কেটে দিবে অতঃপর কাপড় দিয়ে মুছে দিবে। মহিলাদের চুল তিনটি বেনী করে দিবে এবং পিছনের দিক থেকে মুড়িয়ে ঢেকে দিবে।

ঘ- মাইয়্যেতের কাফন:

পুরুষকে তিনটি সাদা লেফাফা বা কাপড়ে কাফন পরানো সুন্নাত। কাফনের কাপড়ে সুগন্ধি মিশ্রিত করবে, অতঃপর কাপড় তিনটি একটির ওপর অন্যটি বিছাবে। এতে হানূত তথা সুগন্ধি মিশাবে। অতঃপর মৃতব্যক্তিকে এসব লিফাফার উপর সোজা করে চিৎ করে শোয়াবে। তার দুই নিতম্বের মাঝে তুলা দিবে এবং পাজামার রশির মতো রশি দিয়ে নেকড়া বা তুলা বেধে দিবে। তার সতর ঢেকে দিবে এবং সমস্ত শরীরে সুগন্ধি মাখবে। অতঃপর সবচেয়ে নিচের বামপাশের কাপড় ভাজ করে ডান দিকে দিবে এবং ডানপাশের কাপড় ভাজ করে বাম দিকে দিবে। এভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাপড় ভাজ করে দিবে। মাথার দিকে একটু বেশি রাখবে এবং কাফন আড়াআড়ি মুড়িয়ে ভাজ করে দিবে, তবে কবরে নামানোর পরে মোড়ানো বাঁধ খুলে দিবে। শিশুকে একটি কাফন পরাবে, তাকে তিনটি কাফন পরানোও জায়েয।

মহিলাকে প্রথমে লুঙ্গি (যা নিচে থাকবে) পড়াবে, অতঃপর কামীছ (জামা), অতঃপর খেমার বা ওড়না (যা দিয়ে মাথা ঢাকবে), অতঃপর কামীছ (জামা) এবং দু’টি বড় লেফাফা বা কাপড়, অতঃপর কামীছ (জামা), অতঃপর ওড়না দিয়ে ঢেকে দিবে, অতঃপর দু’টি বড় লেফাফা দিয়ে পেচিয়ে দিবে। ছোট মেয়েকে একটি কামিজ ও দু’টি লেফাফা দিবে।

পুরুষ হোক বা নারী, মাইয়্যেতকে একবার গোসল দিলেই যথেষ্ট হবে। এমনিভাবে সমস্ত শরীর ঢেকে যায় এমন কাপড় হলে নারী বা পুরুষ উভয়কেই এক কাপড়ে কাফন পরানো যথেষ্ট।

অকালপ্রসূত ভ্রূণ যদি চার মাস অতিক্রান্ত করে মারা যায় তবে তাকে মৃত ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তাকে গোসল দিবে ও জানাযা পড়বে।

ঙ- জানাযার সালাতের বর্ণনা:

সুন্নাত হলো, ইমাম পুরুষের মাথা বরাবর দাঁড়াবে। আর মহিলার মধ্যবর্তী স্থান বরাবর দাঁড়াবে। চার তাকবীরের সাথে জানাযা আদায় করবে এবং প্রতি তাকবীরে হাত উত্তোলন করবে। প্রথম তাকবীর দিয়ে আঊযুবিল্লাহ্… বিসমিল্লাহ পাঠ করে নিরবে সূরা আল-ফাতিহা পড়বে, তবে সানা পড়বে না। দ্বিতীয় তাকবীর দিয়ে পড়বে:

«اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ»

“হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশধরদের ওপর সালাত পেশ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং তাঁর বংশধরদের ওপর সালাত পেশ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতিপ্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশধরদের ওপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম আলাইহিস সালামের বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই আপনি অতিপ্রশংসিত, অতি মর্যাদায় অধিকারী”।[1]

এরপর তৃতীয় তাকবীর দিয়ে এ দু‘আ পাঠ করবে:

«اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا، وَمَيِّتِنَا، وَصَغِيرِنَا، وَكَبِيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِيمَانِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِسْلَامِ»

“ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের জীবিত ও মৃতদের ক্ষমা করুন। আমাদের ছোট ও বড়, পুরুষ ও স্ত্রী, উপস্থিত ও অনুপস্থিত সকলকে ক্ষমা করুন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের মাঝে যাকে জীবিত রাখেন, তাকে ঈমানের উপর জীবিত রাখুন এবং যাকে মৃত্যু দেন, তাকে ইসলামের ওপর মৃত্যু দান করুন”।[2]

«اللهُمَّ، اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَعَافِهِ وَاعْفُ عَنْهُ، وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ، وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ، وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ، وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ، وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِنْ دَارِهِ، وَأَهْلًا خَيْرًا مِنْ أَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِنْ زَوْجِهِ، وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وعَذَابِ النَّارِ، وأفسح له في قبره ونور له فيه».

“হে আল্লাহ! তাকে মাফ করে দাও ও তার প্রতি দয়া কর। তাকে নিরাপদ রাখ ও তার ত্রুটি মার্জনা কর। তাকে উত্তম সামগ্রী দান কর ও তার প্রবেশস্থলকে প্রশস্ত করে দাও। তাকে পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধুয়ে মুছে দাও এবং গুনাহ থেকে এরূপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দাও যেরূপ সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়। তার ঘরকে উত্তম ঘর পরিণত করে দাও, তাকে তার পরিবার থেকে উত্তম পরিবার দান কর, তার জোড়ার তুলনায় উত্তম জোড়া প্রদান কর। তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং কবর ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর। তার জন্য কবরকে প্রশস্ত করে দাও এবং তার কবরকে আলোকময় করে দাও”।[3]

মাইয়্যেত শিশু হলে (من توفيته منا فتوفه عليهما) এর পরে বলবে:

«اللهم اجعله ذخرا لوالديه، وفرطا وشفيعا مجابا، اللهم ثقل به موازينهما وأعظم به أجورهما وألحقه بصالح سلف المؤمنين، واجعله في كفالة إبراهيم، وقه برحمتك عذاب الجحيم».

“হে আল্লাহ আপনি এ শিশুকে তার পিতামাতার জন্য ধন-ভাণ্ডার, অগ্রগামী সম্পদ (আমল) ও শাফা‘আতকারী করে দিন। হে আল্লাহ এর দ্বারা তার পিতামাতার আমলের পাল্লা ভারী করুন, তাদের প্রতিদান বাড়িয়ে দিন, তাকে সৎপূর্বসূরী মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত করুন, তাকে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ভরণ-পোষণ দায়িত্বে রাখুন, আপনার রহমাতে তাকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।”[4]

এরপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে সামান্য একটু চুপ থেকে ডান দিকে সালাম ফিরাবে।

চ- জানাযার সালাতের ফযীলত:

জানাযার সালাত আদায়কারীর জন্য রয়েছে এক কিরাত সাওয়াব। আর কিরাত হলো অহুদ পাহাড় পরিমাণ। আর কেউ জানাযার সালাত আদায় করে দাফন পর্যন্ত মাইয়্যেতের সাথে থাকলে তার জন্য রয়েছে দুই কিরাত।

মাইয়্যেতকে চারজন বহন করা সুন্নাত। একই ব্যক্তি পরিবর্তন করে খাটের চারপাশ বহন করা সুন্নাত। জানাযা নিয়ে দ্রুত চলা সুন্নাত। পায়ে হাটা ব্যক্তিরা জানাযার সামনে চলবে এবং আরোহীরা জানাযার পিছনে চলবে।

ছ- কবর, দাফন ও কবরে যেসব কাজ করা নিষিদ্ধ:

কবর গভীর হওয়া ওয়াজিব। কবরের নিম্নভাগে একটি গর্ত করা যা কিবলামুখী করে মাইয়্যেতকে রাখার জন্য করা হয়, একে ‘লাহাদ’ কবর বলে। এ কবর ‘শাক্ক’ বা সরাসরি খাদ করে দেওয়া কবরের চেয়ে উত্তম। কবরে মাইয়্যেতকে নামানো ব্যক্তি বলবে:

«بِسْمِ اللَّهِ، وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللَّهِ»

‘‘আল্লাহর নামে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিল্লাতের অর্ন্তভুক্ত করে রাখলাম”।

ডান কাতে শোয়ায়ে কিবলামুখী করে রাখবে। অতঃপর কবরে মাটি দিবে, অতঃপর দাফন করবে। কবর জমিন থেকে এক বিঘত পরিমাণ উঁচু করবে এবং এতে পানি ছিটিয়ে দিবে।

কবরের উপর গৃহ নির্মাণ, চুনকাম করা, হাটা, সালাত পড়া, কবরের উপর মসজিদ তৈরি করা, কবরকে বরকতের স্থান মনে করা, বাতি জ্বালানো, গোলাপ ফুল ছড়ানো ও কবরে তাওয়াফ ইত্যাদি করা হারাম।

মাইয়্যেতের পরিবার পরিজনের জন্য খাবার তৈরি করে পাঠানো সুন্নাত। পক্ষান্তরে মাইয়্যেতের পরিবার পরিজন আগত মানুষের জন্য খাবার তৈরি করা মাকরূহ।

কবর যিয়ারতের সময় এ দো‘আ পড়া সুন্নাত:

«السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ، وَيَرْحَمُ اللهُ الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِينَ، نسأل اللّه لنا ولكم العافية، اللهم لا تحرمنا أجرهم، ولا تفتنا بعدهم، واغفر لنا ولهم »

“হে কবরের অধিবাসী মুমিনগণ! আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয় আমরাও আপনাদের সাথে এসে মিলিত হব ইনশাআল্লাহ। আমাদের অগ্রবর্তী ও পরবর্তীদের উপরে আল্লাহ রহম করুন। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ও আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের বিনিময় হতে বঞ্চিত করবেন না এবং এরপর আর আমাদেরকে ফিতনায় পতিত করবেন না এবং আমাদের ও তাদেরকে ক্ষমা করে দিন।”[5]

মৃতব্যক্তির পরিবার পরিজনকে দাফনের আগে ও পরের তিনদিন সমবেদনা জানানো সুন্নাত। তবে অনুপস্থিত ব্যক্তিকে এর পরেও সমবেদনা জানানো যাবে।

কারো কোনো মুসীবত আসলে নিম্নোক্ত দো‘আ বলা সুন্নাত:

«إنا للّه وإنا إليه راجعون، اللهم أجرني في مصيبتي، واخلف لي خيرا منها»

“নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। হে আল্লাহ! আমাকে বিপদে ধৈর্য ধারণের সাওয়াব দান করুন এবং এর চেয়ে উত্তম প্রতিদান দিয়ে ধন্য করুন”।[6]মাইয়্যেতের জন্য কাঁদা জায়েয, তবে মাতম করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলা, গালে চড় বা আঘাত করা, উচ্চস্বরে কাঁদা ইত্যাদি হারাম।

[1] সহীহ বুখারী, আহাদীসুল আম্বিয়া, হাদীস নং ৩১৯০; সহীহ মুসলিম, সালাত, হাদীস নং ৪০৬; তিরমিযী, সালাত, হাদীস নং ৪৮৩; নাসাঈ, আস-সাহু, হাদীস নং ১২৮৮; আবু দাউদ, সালাত, হাদীস নং ৯৭৬; ইবন মাজাহ, ইকামাতুস সালাহ ওয়াস-সুন্নাতু ফিহা, হাদীস নং ৯০৪; আহমদ, ৪/২৪৪; দারেমী, সালাত, হাদীস নং ১৩৪২।

[2] তিরমিযী, জানায়েয, হাদীস নং ১০২৪; নাসাঈ, জানায়েয, হাদীস নং ১৯৮৬; আহমদ, ৫/৪১২; আবূ দাউদ, হাদীস নং ৩২০১, আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪৯৮।

[3] মুসলিম, হাদীস নং ৯৬৩; তিরমিযী, জানায়েয, হাদীস নং ১০২৪; নাসাঈ, জানায়েয, হাদীস নং ১৯৮৬; আহমদ, ৫/৪১২;

[4] এ দো‘আর সূত্র লেখক উল্লেখ করেন নি, তবে দো‘আর প্রথম কিছু অংশ মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং ৬৫৮৯; সুনান বাইহাকী আল-কুবরা, হাদীস নং ৬৭৯৪ এ আছে। -অনুবাদক

[5] মুসলিম, ত্বহারাত, হাদীস নং ২৪৯; নাসাঈ, ত্বহারাত, হাদীস নং ১৫০; আবু দাউদ, জানায়েয, হাদীস নং ৩২৩৭; ইবন মাজাহ, যুহুদ, হাদীস নং ৪৩০৬; আহমদ, ২/৩০০; মালেক, ত্বহারাত, হাদীস নং ৬০।

[6] সহীহ মুসলিম, জানায়েয, হাদীস নং ৯১৮; তিরমিযী, জানায়েয, হাদীস নং ৯৭৭; আবু দাউদ, জানায়েয, হাদীস নং ৩১১৯; ইবন মাজাহ, মা জাআ ফিল জানায়েয, হাদীস নং ১৪৪৭; আহমদ, ৬/৩০৯; মালিক, জানায়েয, হাদীস নং ৫৫৮।