ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
তাওহীদের কালেমা: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ [এর ফযীলত, অর্থ, শর্ত ও পরিপন্থী বিষয়] লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষী ভঙ্গকারী কারণসমূহ ইসলামহাউজ.কম
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষী ভঙ্গকারী কারণসমূহ

আমরা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ জানলাম, যা বান্দার ভেতর অবশ্যই থাকা জরুরি, তবেই আল্লাহর নিকট এ কালেমা গ্রহণযোগ্য হবে। কালেমার এসব অর্থ ও শর্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা লালন করা প্রত্যেক মুসলিমের অতীব জরুরি। কালেমা প্রসঙ্গে আরেকটি বিষয় গুরুত্বের সাথে জানা জরুরি, যা কালেমা পরিপন্থী বা ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় হিসেবে পরিচিত, তাহলে কালেমার অর্থ ও দাবি সম্পর্কে সতর্ক ও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে মুমিনদের পথ, যারা কালেমার অর্থ ও দাবিকে বাস্তবায়ন করেছে, স্পষ্ট করেছেন। আবার তাদের পথও স্পষ্ট করেছেন, যারা তার বিরোধিতা করেছে। অতঃপর জানিয়ে দিয়েছেন তাদের পরিণতি ও এদের পরিণতি, তাদের আমল ও এদের আমল। আরও বর্ণনা করেছেন সেসব উপকরণ, যে কারণে তারা সৌভাগ্যবান হয়েছে, আর এরা হয়েছে হতভাগা। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে দু’টি পথই স্পষ্ট করেছেন, যেমন তিনি বলেছেন,

﴿وَكَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ وَلِتَسۡتَبِينَ سَبِيلُ ٱلۡمُجۡرِمِينَ ٥٥﴾ [الانعام: ٥٥]

“আর এভাবেই আমরা আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি। আর যাতে অপরাধীদের পথ স্পষ্ট হয়ে যায়”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৫৫]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيلِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ١١٥﴾ [النساء : ١١٥]

“আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমরা তাকে ফিরাব যে দিকে সে ফিরে এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর আবাস হিসেবে তা খুবই মন্দ”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৫]

পাপীদের পথ যে জানে না, যার নিকট তাদের পথ স্পষ্ট নয়, খুব সম্ভব সে তাদের গোমরাহিতে পতিত হবে। এ জন্য আমিরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

«إنما تنقض عرى الإسلام عروة عروة، إذا نشأ في الإسلام من لم يعرف الجاهلية»

“ইসলামের এক একটি রশি তখন ভাঙ্গা হবে, যখন ইসলামের ভেতর তাদের জন্ম হবে, যারা জাহেলিয়াত কী জিনিস তা জানবে না”।

কুরআন ও সুন্নাহয় অনেক আয়াত ও হাদীস রয়েছে, যা কঠিনভাবে সতর্ক করেছে মুরতাদ তথা ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কর্মকাণ্ড, সকল প্রকার শির্ক ও তাওহীদের কালেমা ভঙ্গকারী উপকরণ থেকে। আহলে ইলমগণ ফিকহের কিতাবে মুরতাদ অধ্যায় বলেছেন: মুসলিম যদি ঈমান ভঙ্গকারী একটি বা সবকটি বস্তুতে লিপ্ত হয়, তবে সে দীন থেকে বের হয়ে যাবে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর উচ্চারণ তাকে কোনো উপকার করবে না। কারণ, এ কালেমা, যা সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ যিকির, ব্যক্তিকে তখন উপকার করবে, যখন সে তার শর্তসমূহ বাস্তবায়ন ও তার ভঙ্গকারী বিষয় থেকে বেঁচে থাকবে।

এতে সন্দেহ নেই যে, কালেমা ভঙ্গকারী বিষয় জানার কল্যাণ অনেক, যদি তার জানার উদ্দেশ্য হয় এসব অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকা ও তার মুসীবত থেকে সুরক্ষা লাভ করা। বস্তুতঃ শির্ক, কুফর, বাতিল ও তার তরিকাসমূহ যে জানে, তার পক্ষে সেসব থেকে সতর্ক থাকা ও অপরকে সতর্ক করা সহজ হয়, কোনোভাবেই স্বীয় ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত করার সুযোগ সে শয়তানকে দেয় না, বরং সত্যের প্রতি ঈমান ও মহব্বত বর্ধিত হয়, ভঙ্গকারী বস্তুর প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা তীব্র হয়। এ ছাড়া আরও অনেক উপকার হাসিল হয়, যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।

আল্লাহ চান সত্য পথ স্পষ্ট হোক, যেন সেটি পছন্দকারীরা পছন্দ করে ও তার অনুসারী হয়। আবার মিথ্যা পথও স্পষ্ট হোক, যেন সেটাকে ঘৃণাকারীরা তা ঘৃণা করে ও তার থেকে বিরত থাকে। কল্যাণের পথ জানা ও তা বাস্তবায়ন করা যেরূপ জরুরি, তেমন জরুরি খারাপের পথ জানা ও তা থেকে বিরত থাকা। ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন, হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত, কিন্তু আমি জিজ্ঞেস করতাম অকল্যাণ সম্পর্কে, যাতে তা আমাকে পেয়ে না বসে সে ভয়ে”।[1] এ জন্য বলা হয়:

ومن لايعرف الشر من الناس يقع فيه عرفت الشر لا للشر لكن لتوقِّيه

“আমি খারাপকে চিনেছি খারাপের জন্য নয়, বরং তার থেক বেঁচে থাকার জন্য, আর যেসব মানুষ খারাপ জানে না, তারা তাতে পতিত হয়”।

কালেমার পরিপন্থী বিষয় জানার অবস্থা যখন এরূপ এবং তার গুরুত্ব যখন এতো বেশি, তখন প্রত্যেক মুসলিমের ওপর ওয়াজিব এ কালেমা বিনষ্টকারী বস্তুগুলো আত্মস্থ করা, যেন তার থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়।

কয়েকটি কারণে কালেমা ভঙ্গ হয়, যার বর্ণনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে, তবে এসব ভঙ্গকারী থেকে আরো ভয়ঙ্কর ও বেশি ঘটমান কারণ দশটি, যা আহলে ইলমগণ বর্ণনা করেছেন।[2] নিম্নে সংক্ষেপে তা উল্লেখ করছি, যেন তার থেকে নিরাপদ থাকা ও অন্যকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়।

প্রথম কারণ: ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ ١١٦﴾ [النساء : ١١٦]

“নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করেন না তার সাথে শরীক করাকে এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৬]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢﴾ [المائ‍دة: ٧٢]

“নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার ওপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা আগুন। আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭২]

কয়েকটি শির্কী ইবাদাত, যেমন মৃতদের নিকট দো‘আ করা, তাদের নিকট ফরিয়াদ করা, কিছু তলব করা এবং তাদের জন্য মান্নত ও জবেহ করা ইত্যাদি।

দ্বিতীয় কারণ: আল্লাহ ও বান্দার মাঝে মধ্যস্থতাকারী নির্ধারণ করা, তাদেরকে আহ্বান করা, তাদের নিকট সুপারিশ তলব করা ও তাদের ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمۡ وَلَا يَنفَعُهُمۡ وَيَقُولُونَ هَٰٓؤُلَآءِ شُفَعَٰٓؤُنَا عِندَ ٱللَّهِۚ قُلۡ أَتُنَبِّ‍ُٔونَ ٱللَّهَ بِمَا لَا يَعۡلَمُ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِۚ سُبۡحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ١٨﴾ [يونس : ١٨]

“আর তারা আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদাত করছে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে, ‘এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’। আপনি বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আসমানসমূহ ও জমিনে থাকা এমন বিষয়ে সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি অবগত নন’? তিনি পবিত্র এবং তারা যা শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১৮]

তৃতীয় কারণ: মুশরিকদের কাফির না বলা ও তাদের কুফুরী সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ।

চতুর্থ কারণ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অপেক্ষা অন্য কারো আদর্শকে পরিপূর্ণ বলে বিশ্বাস করা অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফয়সালা থেকে অন্য কারো ফয়সালা উত্তম জানা ঈমান ভঙ্গের কারণ, যারা তাগুতের ফয়সালাকে প্রাধান্য দেয় তারা এ শ্রেণিভুক্ত।

পঞ্চম কারণ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত দীনের কোনো বিধানকে অপছন্দ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ, যদিও সে তার ওপর আমল করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَرِهُواْ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحۡبَطَ أَعۡمَٰلَهُمۡ ٩﴾ [محمد : ٩]

“তা এ জন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তারা তা অপছন্দ করে, অতএব তিনি তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৯]

ষষ্ঠ কারণ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত দীনের কোনো বিধান অথবা তাতে প্রমাণিত সাওয়াব বা শাস্তি নিয়ে ব্যঙ্গ করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُمۡ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلۡعَبُۚ قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ٦٦﴾ [التوبة : 66]

“আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। আপনি বলুন, ‘আল্লাহ, তার আয়াতসমূহ ও তার রাসূলের সাথে কি তোমরা বিদ্রূপ করছিলে? তোমরা ওজর পেশ করো না, তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফুরী করেছ”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৫-৬৬]

সপ্তম কারণ: জাদু ও জাদুর অন্তর্ভুক্ত সারফ (আাকর্ষণ কিংবা বিকর্ষণ) ও ‘আতফ ঈমান ভঙ্গের কারণ। যে জাদু করে বা জাদুর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সে কাফির। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡۖ ١٠٢﴾ [البقرة: ١٠٢]

“আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা। সুতরাং তোমরা কুফুরী কর না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]

অষ্টম কারণ: মুশরিকদের পক্ষ গ্রহণ করা ও মুসলিমদের বিপক্ষে তাদেরকে সাহায্য করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥١ ﴾ [المائ‍دة: ٥١]

“যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদের একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কাওমকে হিদায়াত দেন না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫১]

নবম কারণ: মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীন পালন না করার অবকাশ কতক মানুষের রয়েছে বিশ্বাস করা ঈমান ভঙ্গের কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ال عمران: ٨٥]

“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায় তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

দশম কারণ: আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ থাকা কুফুরী, ঈমান ভঙ্গের কারণ। যে আল্লাহর দীন শিখে না ও তার ওপর আমল করে না সে কাফির। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِ‍َٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢﴾ [السجدة : ٢٢]

“আর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেওয়ার পর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিশ্চয় আমরা অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২২] এ দশটি বিষয় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অর্থাৎ তাওহীদের কালেমা ভঙ্গকারী। যে কেউ এ দশটি থেকে কোনো একটিতে পতিত হল তার ঈমান শেষ। এরূপ ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ দ্বারা উপকৃত হবে না। আহলে-ইলমগণ আরও স্পষ্ট বলেছেন, এসব কাজ হাসি ঠাট্টায় করুক, ইচ্ছায় করুক বা ভয়ে করুক কোনো পার্থক্য নেই, তবে যাকে বাধ্য করা হয় সে ব্যতীত। ঈমান ভঙ্গকারী প্রত্যেকটি বস্তু খুব ভয়ানক, আমাদের সমাজে যা সচরাচর সংঘটিত হয়। মুসলিমদের এসব থেকে দূরে থাকা ও কুফরের আশঙ্কায় ভীত থাকা জরুরি। আমরা আল্লাহর নিকট তার গোস্বা ও শাস্তির উপকরণ থেকে পানাহ চাই, তিনি আমাদের সবাইকে তার পছন্দনীয় বস্তুর তাওফিক দিন, আমাদেরকে ও সকল মুসলিমকে তার সঠিক পথের হিদায়াত দান করুন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, কবুলকারী ও অতি নিকটবর্তী।

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৪৭

[2] দেখুন: দুরারুস সানিয়্যাহ ফিল আজওয়াবাতিন নাজদিয়্যাহ: (২/২৩২)