ব্যাখ্যা: জাহিলরা যে বিষয়ে জ্ঞান রাখে না তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও মতভেদ সৃষ্টি করে। জ্ঞান ছাড়া তর্ক না করাই আবশ্যক। কোন বিষয় জানা না থাকলে নিরব থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(بَلْ كَذَّبُوا بِمَا لَمْ يُحِيطُوا بِعِلْمِهِ وَلَمَّا يَأْتِهِمْ تَأْوِيلُهُ) [يونس: 39]
বরং, তারা যে ব্যাপারে পূর্ণ জ্ঞান লাভ করেনি, তা তারা মিথ্যা অস্বীকার করেছে এবং এখনও এর পরিণতি তাদের কাছে আসেনি (সূরা ইউনূস ১০:৩৯)।
অর্থাৎ কোন বিষয়ের বাস্তব ব্যাখ্যা মূলকঃ জ্ঞান না থাকা। এ বিষয়টি দু’টি দিককে অন্তর্ভুক্ত করে:
প্রথম: মানুষ যে বিষয় জানে না সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। আর অজ্ঞাত বিষয় অস্বীকারও করবে না। বরং বলবে, আল্লাহই অধিক অবগত। একারণে আল্লাহ তা‘আলা তার নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেন,
(وَقُلْ رَبِّ زِدْنِي عِلْماً) [طه: 114]
সুতরাং আল্লাহ মহান যিনি সত্যিকার অধিপতি; তোমার প্রতি ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করো না এবং তুমি বল, ‘হে আমার রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন’ (সূরা ত্বা-হা ২০:১১৪)।
কোন মানুষ নিজেকে পূর্ণজ্ঞানী দাবি করতে পারে না। মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। মানুষ যদিও অনেক জ্ঞানের অধিকারী তবুও সে কেবল সামর্থ অনুযায়ী জানতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ জ্ঞানই তার অজানা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ
প্রত্যেক জ্ঞানীর উপর রয়েছে একজন মহাজ্ঞানী (সূরা ইউসূফ ১২:৭৬)।
আল্লাহ তা‘আলাই চুড়ান্ত জ্ঞানের অধিকারী।
দ্বিতীয়: কারো জানা বিষয় মানুষ অস্বীকার করবে না। কারো নিকট থেকে নিজের অজ্ঞাত কোন বিষয় জানতে পারলে তা গ্রহণ করা মানুষের জন্য আবশ্যক। কোন মানুষকেই পূর্ণজ্ঞান দান করা হয়নি। একারণে আলেমগণ সদা সর্বদা একটি কথা পূনরাবৃত্তি করে বলেন,
من حفظ حجة على من لم يحفظ
যারা দলীল সংরক্ষণ করেনি, তাদের উপর প্রাধান্য পাবে তাদের কথা, যারা সংরক্ষণ করে।
নাস্তিক, মুশরিক, আল্লাহর গুণাবলীকে বাতিল সাব্যস্তকারী এবং ভ্রষ্ট সম্প্রদায় তাদের অজানা বিষয়কে অস্বীকার করে। কেননা, অজানা বিষয়ে তারা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করেনি; এ জন্য তারা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনে না। তাই বাতিল ক্বিয়াস তথা পরিত্যাজ্য অনুমান ভিত্তিক রীতির উপর তারা তাদের চলার পথ নির্ধারণ করেছে। ফলে তারা সঠিক পথ হারিয়েছে।