ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
শারহুল আক্বীদা আত্-ত্বহাবীয়া ১১. তিনি সৃষ্টিকর্তা। সৃষ্টির প্রতি তার কোনো প্রয়োজন ছাড়াই তিনি সৃষ্টি করেছেন। কোনো প্রকার ক্লান্তি ছাড়াই তিনি রিযিকদাতা (خَالِقٌ بِلَا حَاجَةٍ رَازِقٌ بِلَا مؤنَةٍ) ইমাম ইবনে আবীল ইয আল-হানাফী (রহিমাহুল্লাহ)
তিনি সৃষ্টিকর্তা। সৃষ্টির প্রতি তার কোনো প্রয়োজন ছাড়াই তিনি সৃষ্টি করেছেন। কোনো প্রকার ক্লান্তি ছাড়াই তিনি রিযিকদাতা।

ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, (خَالِقٌ بِلَا حَاجَةٍ رَازِقٌ بِلَا مؤنَةٍ) তিনি সৃষ্টিকর্তা। সৃষ্টির প্রতি তার কোনো প্রয়োজন ছাড়াই তিনি সৃষ্টি করেছেন। কোনো প্রকার ক্লান্তি ছাড়াই তিনি রিযিকদাতা।

................................

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ مَا أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ

‘‘আমি জিন এবং মানুষকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে কোনো রিযিক চাই না কিংবা তারা আমাকে খাওয়াবে তাও চাই না। আল্লাহ নিজেই রিযিকদাতা এবং অত্যন্ত শক্তিধর ও পরাক্রমশালী’’। (সূরা যারিয়াত: ৫৬-৫৮)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَنتُمُ الْفُقَرَاءُ إِلَى اللَّهِ وَاللَّهُ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ

‘‘হে লোক সকল! তোমরাই আল্লাহর মুখাপেক্ষী এবং আল্লাহ তো অভাবমুক্ত ও প্রশংসিত’’। (সূরা ফাতির: ১৫)


আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَاللَّهُ الْغَنِيُّ وَأَنتُمُ الْفُقَرَاءُ

‘‘আল্লাহ তো পরিপূর্ণ ধনী। আর তোমরাই তার প্রতি মুখাপেক্ষী’’। (সূরা মুহাম্মাদ: ৩৮)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

قُلْ أَغَيْرَ اللَّهِ أَتَّخِذُ وَلِيًّا فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ يُطْعِمُ وَلَا يُطْعَمُ

‘‘হে মুহাম্মাদ বলো, পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টা আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমি কি আর কাউকে নিজের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবো? অথচ তিনি জীবিকা দান করেন, জীবিকা গ্রহণ করেন না’’। (সূরা আল ‘আনআম: ১৪)

রসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

«يَا عِبَادِى لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِى شَيْئًا يَا عِبَادِى لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِى صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِى فَأَعْطَيْتُ كُلَّ إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِمَّا عِنْدِى إِلاَّ كَمَا يَنْقُصُ الْمِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْرَ»

‘‘হে আমার বান্দারা! তোমাদের সর্বপ্রথম, সর্বশেষ, তোমাদের সমস্ত মানুষ এবং সমস্ত জিন মিলে যদি তোমাদের সর্বাধিক মুত্তাকী ব্যক্তির অন্তরে একত্রিত হয়ে যায় অর্থাৎ তোমাদের সকলের তাকওয়া যদি আল্লাহর সর্বোত্তম বান্দার তাকওয়ার মত হয়ে যায় তাহলে তা আমার রাজত্বের মধ্যে কিছুই বাড়াতে পারবে না। হে আমার বান্দারা! তোমাদের সর্বপ্রথম, সর্বশেষ, তোমাদের সমস্ত মানুষ এবং সমস্ত জিন মিলে যদি সর্বাধিক নিকৃষ্ট বান্দার অন্তরে একত্রিত হয়ে যায় অর্থাৎ তোমাদের পাপাচার ও অবাধ্যতা যদি ইবলীসের অবাধ্যতার মত হয়ে যায়, তাহলেও তা আমার রাজত্ব ও ক্ষমতার কিছুই কমাতে পারবে না। হে আমার বান্দারা! তোমাদের সর্বপ্রথম, সর্বশেষ, তোমাদের সমস্ত মানুষ এবং সমস্ত জিন মিলে যদি একটি মাঠে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায়, আর আমি যদি তাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা অনুপাতে দান করি, তাহলেও আমার ভান্ডার থেকে কেবল ঐ পরিমাণই কমতে পারে যেমন সাগরে একটি সুই ঢুকালে উহা যে পরিমাণ পানি কমিয়ে দেয়’’।[1] ইমাম মুসলিম এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম ত্বহাবীর উক্তি, بلا مؤنة অর্থ হলো কষ্ট ও ক্লান্তি ছাড়াই।

[1]. হাদীছটির সনদ ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।