ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রমযান মাসের ৩০ আসর চতুর্বিংশ আসর শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
জান্নাতীদের বৈশিষ্ট্যাবলি [আল্লাহ তাঁর বিশেষ দয়া ও অনুগ্রহে আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন]

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সকল প্রাণবানকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার গঠন সুনিপুণ বানিয়েছেন। আসমানসমূহ ও যমীনকে পৃথক করে দিয়েছেন ইতোপূর্বে উভয়ে ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। আপন প্রজ্ঞানুযায়ী বান্দাদের ভাগ্যবান ও হতভাগার শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। ভাগ্যবানদের কিছু কারণ নির্ধারণ করেছেন যা মুত্তাকী অবলম্বন করে। তারা অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে পরিণামের প্রতি লক্ষ্য করে যা অনন্তকালের তাই পছন্দ করে। আমি প্রশংসা করি তাঁর, আর এ স্বীকৃতি প্রদান করছি যে আমি তার প্রশংসার হক আদায় করতে সমর্থ নই। আমি তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি আর তিনি অনন্ত কৃতজ্ঞতা পাবার যোগ্য।

আমি সাক্ষ্য দেই যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই; তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনি সকল সৃষ্টিকুলের সত্যিকারের মালিক; তারা সবাই তার দাস। আমি আরও সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। যিনি সুরত ও সীরাতে তথা চেহারা ও চরিত্রে পূর্ণতর ও সুন্দরতম ব্যক্তি।

আল্লাহ সালাত ও সালাম বর্ষিত করুন তাঁর ওপর, তাঁর সাহাবী আবূ বকরের ওপর যিনি অনুসারীদের মধ্যে মর্যাদায় ছিনিয়ে নেয়ায় বিজয়ী প্রতিযোগী, উমরের ওপর যিনি ছিলেন ন্যায়বিচারক যার তুলনা নয় কোনো মানুষ, উসমানের ওপর যিনি প্রত্যশা মাফিক শাহাদাতের জন্য নিজেকে সমর্পণ করেছেন, আলীর ওপর যিনি ক্ষণিকের বিষয়াবলি বিকিয়েছেন এবং অনন্তের বিষয়াদি খরিদ করেছেন এবং তাঁর পরিবার-পরিজন আর আল্লাহর দীনের যথার্থ সাহায্যকারী তাঁর সাহাবীগণের ওপর।


মুসলিম ভাইয়েরা! আপনারা জান্নাতের নিয়ামতসমূহ ও তাতে বিভিন্ন প্রকারের খুশি ও আনন্দের বস্তু সম্পর্কে শুনেছেন। আল্লাহর শপথ, জান্নাত এতই উপযুক্ত যে এর জন্য প্রত্যেক আমলকারী আমল করবে এবং প্রতিযোগীরা এতে প্রতিযযোগিতা করবে। আর মানুষ এর অন্বেষণে জীবন বিসর্জন করবে; এর চেয়ে নিম্নমানের বস্তু থেকে বিমুখ হবে।
যদি তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস কর যে, এর জন্য কী আমল করতে হবে এবং তা লাভের পথ কী?

তাহলে বলব যে, এর উত্তর আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কালামে ওহীর মাধ্যমে সর্বোত্তম সৃষ্টি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যবানীতে বর্ণনা করেছেন।

* আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ۞وَسَارِعُوٓاْ إِلَىٰ مَغۡفِرَةٖ مِّن رَّبِّكُمۡ وَجَنَّةٍ عَرۡضُهَا ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ أُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِينَ ١٣٣ ٱلَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي ٱلسَّرَّآءِ وَٱلضَّرَّآءِ وَٱلۡكَٰظِمِينَ ٱلۡغَيۡظَ وَٱلۡعَافِينَ عَنِ ٱلنَّاسِۗ وَٱللَّهُ يُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ١٣٤ وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ يُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا فَعَلُواْ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ١٣٥ ﴾ [ال عمران: ١٣٣، ١٣٥]

‘আর তোমরা নিজ রবের ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও, যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীন সমপরিমাণ, যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। যারা স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে, নিজেদের গোস্বা সংবরণ করে এবং মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রর্দশন করে আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। তারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোনো মন্দ কাজে জড়িত হয়ে) নিজের ওপর জুলুম করে ফেললে, আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে শুনে (ওই পাপ) একধিকবার করে না।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৩-১৩৫)