ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
উপদেশ ৫. আল্লাহর নিকট প্রার্থনা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ
আল্লাহর নিকট প্রার্থনা - ২

عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ-

নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দো‘আ হচ্ছে মূলতঃ ইবাদত’ (নাসাঈ, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, মিশকাত হা/২২৩০; বাংলা মিশকাত হা/২১২৬)

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ وَأَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالاَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُوْنَ اللهَ إِلَّا حَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِيْنَةُ وَذَكَرَهُمْ اللهُ فِيْمَنْ عِنْدَهُ-

আবু হুরায়রা ও আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে কোন মানব দল আল্লাহর যিকির করতে বসে তখন আল্লাহর ফিরিশতাগণ তাদের ঘিরে রাখেন। তাঁর রহমত তাদের ঢেকে ফেলে এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ তাঁর নিকটতম ফিরিশতাদের সামনে তাদের যিকিরের বিষয়টি আলোচনা করেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২২৬১; বাংলা মিশকাত হা ২১৫১)। এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল যে, যারা আল্লাহর যিকির করে তাদেরকে ফিরিশতাগণ ঘিরে থাকেন। আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে রাখে। আল্লাহ তাঁর সম্মানিত ফিরিশতাগণের সামনে যিকিরকারীদের মান-মর্যাদার আলোচনা করেন।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِيْ بِيْ، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِيْ فَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ نَفْسِهِ، ذَكَرْتُهُ فِيْ نَفْسِيْ وَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ مَلإٍ، ذَكَرْتُهُ فِيْ مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ-

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি আমার বান্দার নিকটে সেরূপ যেরূপ সে আমাকে ভাবে। আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে আমাকে মনে মনে স্মরণ করে, আমিও তাকে আমার মনে মনে স্মরণ করি। আর যদি সে আমাকে জনসমাজে স্মরণ করে, আমিও তাকে তাদের চেয়ে উত্তম ব্যক্তিদের মাঝে স্মরণ করি’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২২৬৪; বাংলা মিশকাত হা/২১৫৭)। এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, বান্দা আমার কাছে যেমন আশা করে আমি তার আশা তেমন পূরণ করে থাকি। বান্দা যেমন আমাকে ডাকে, আমি তেমন তার ডাকে সাড়া দেই। আমি বান্দার বিশ্বাসের অনুকূলে আচরণ করে থাকি।

عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا وَأَزِيْدُ وَمَنْ جَاءَ بِالسَّيِّئَةِ فَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ مِثْلُهَا أَوْ أَغْفِرُ وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّيْ شِبْرًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ ذِرَاعًا وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّيْ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا وَمَنْ أَتَانِيْ يَمْشِيْ أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً وَمَنْ لَقِيَنِيْ بِقُرَابِ الْأَرْضِ خَطِيْئَةً ثُمَّ لَا يُشْرِكُ بِيْ شَيْئًا لَقِيْتُهُ بِمِثْلِهَا مَغْفِرَةً-

আবু যার গিফারী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার নিকট একটি ভাল কাজ নিয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য তার দশগুণ পুরস্কার রয়েছে। আমি তার চেয়েও বেশী দিব। আর যে একটি মন্দ কাজ নিয়ে উপস্থিত হবে তার প্রতিফল তার অনুরূপ একগুণ রয়েছে। অথবা আমি মাফ করে দিব। যে আমার এক বিঘত নিকটে আসে আমি তার এক হাত নিকটে যাই। আর যে আমার এক হাত নিকটে আসে, আমি তার এক বাম নিকটে হই। আর যে আমার নিকট হেঁটে আসে, আমি তার নিকট দৌঁড়িয়ে যাই এবং আমার নিকট পৃথিবী পূর্ণ গুনাহ নিয়ে আসে আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমি তার সাথে সাক্ষাৎ করি ঐ পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২২৬৫)। আল্লাহ প্রত্যেকটি ভাল কাজকে তার দশগুণেরও বেশী করেন। মানুষ যতটুকু আল্লাহর নিকটে হতে চায় আল্লাহ তার দ্বিগুণ নিকটে হন। মানুষ যে গতিতে আল্লাহর নিকটে যায়, আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশী গতিতে মানুষের নিকটে যান। শরীক ছাড়া যে কোন গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। মানুষ ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমা করার জন্য অপেক্ষমান।

তারগীব হা/২১২৮, ২১৫১, ২১৬৫, ২১৬৭-৬৯, ২১৮৩, ২২০১, ২২০৪,২২০৮, ২২১৩,২২১৫,২২২৫,২২৩৪,২২৪৮,২২৬৬-৬৭,২২৭০-৭১,২৩২৮-২৯,২৩৪০, ২৩৪২,২৩৪৪,২৩৫২,২৩৫৩-৫৭,২৩৬১,২৩৬৯-৭০,২৩৭৩,২৩৭৫,২৩১৩, ২৪১৯,২৪২০-২৩

عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ لَوْ عَلِمْنَا أَيُّ الْمَالِ خَيْرٌ فَنَتَّخِذَهُ فَقَالَ أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ مُؤْمِنَةٌ تُعِيْنُهُ عَلَى إِيْمَانِهِ-

ছাওবান (রাঃ) বলেন, আমরা যদি জানতে পারতাম কোন সম্পদ উত্তম তবে তা সঞ্চয় করতাম। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তোমাদের কারো শ্রেষ্ঠ সম্পদ হল আল্লাহকে স্মরণকারী জিহবা, কৃতজ্ঞতা স্বীকারকারী অন্তর এবং ঈমানদার স্ত্রী। যে তার স্বামীকে তার ঈমানের ব্যাপারে সাহায্য করে’ (ইবনু মাজাহ, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/২২৭৭; বাংলা মিশকাত হা/২১৭০)

এ হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, ঐ জিহবা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ যে জিহবা সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করতে পারে। তাসবীহ-তাহলীল, যিকর-আযকারে ব্যস্ত থাকে।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ أَنَا مَعَ عَبْدِيْ إِذَا هُوَ ذَكَرَنِيْ وَتَحَرَّكَتْ بِيْ شَفَتَاهُ-

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে থাকি, যখন সে আমার যিকির করে এবং আমার তরে তার দু’ওষ্ঠ নড়ে’ (বুখারী, মিশকাত হা/২২৮৫; বাংলা মিশকাত হা/২১৭৭)। হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল যে, যারা আল্লাহর যিকির করে আল্লাহ তাদের সাথে থাকেন। অর্থাৎ তার সাহায্য, দয়া ও রহমত সর্বদা তার উপর বর্ষিত হতে থাকে।