একথা সঠিকভাবেই বলা হয়েছে যে, ভ্রমণ উদ্বিগ্নতা ও দুশ্চিন্তা বিতাড়িত করে। রামহারমুযি তার “The Noble Scholar of Hadeeth (المحدث الفاضل)” নামক কিতাবে ইলম তলবের উদ্দেশ্যে ভ্রমণের উপকারিতার কথা ধারাবাহিক বর্ণনা করেছেন। পৃথিবী ভ্রমণ করে কোনো বোধগম্য উপকারিতা নেই- একথা যারা বলে তিনি তাদের যুক্তি-তর্ক খণ্ডন করতেছিলেন।
তিনি বলেছেন- “নতুন নতুন ভূমি ও ঘর-বাড়ি দেখে, সুন্দর সুন্দর বাগ-বাগিচা, মাঠ-ঘাট দেখে, ভিন্ন ভিন্ন মুখ দেখে এবং বিভিন্ন ভাষা ও বর্ণের সান্নিধ্যে এসে এবং বিভিন্ন দেশের নানান আশ্চর্য জিনিস প্রত্যক্ষ করে অনেক উপকারিতা লাভ করা যায়। বৃহৎ বৃক্ষের ছায়ায় বসে যে শান্তি পাওয়া যায় তা অনুপম। মসজিদে মসজিদে খানা খাওয়া, ঝর্নাধারা থেকে পানি পান করা এবং যেখানে রাত সেখানেই কাত (অর্থাৎ ঘুমানো)- এসব কিছু ব্যক্তির মনে ধীরে ধীরে অমায়িকতা এবং বিনয় ও নম্রতা সঞ্চারিত করে।
ভ্রমণকারী বা পরিব্রাজক আল্লাহর উদ্দেশ্যে যাদের ভালোবাসে সে তাদেরকে তার বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তোষামোদ করার বা কৃত্রিম হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা তার নেই। এসব উপকারিতার সাথে সেসব সুখকে যোগ করে নিন যেসব সুখ ভ্রমণকারী বা পর্যটক তার লক্ষ্যস্থলে পৌছার পর তার অন্তরে অনুভব করে এবং সে শিহরণকেও যোগ করে নিন যে শিহরণ সে পথের সব বাধা অতিক্রম করার পর অনুভব করে। যারা তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে বের হতে নারাজ তারা যদি এসব কথা জানত তবে তারা বুঝতে পারত যে পৃথিবীর সকল স্বতন্ত্র আনন্দ ভ্রমণের মহান বৃত্তির মাঝেই নিহিত। ভ্রমণকারীর নিকট সুন্দর সুন্দর দৃশ্য ও আল্লাহর প্রশস্ত জমিনে ভ্রমণের অংশ আশ্চর্য সব ক্রিয়াকলাপের চেয়ে অধিক উপভোগ্য আর কিছুই নেই। কিন্তু অপরিব্রাজক এসব কিছু থেকে বঞ্চিত।"