আশআরী-মাতুরিদী আলিমগণের মধ্যে অনেকেই ব্যাখ্যমুক্তভাবে বিশেষণগুলো বিশ্বাস করা উত্তম বলেছেন। কেউ ব্যাখ্যার পক্ষে কঠোরতা অবলম্বন করেছেন। মহান আল্লাহর হাত, চক্ষু, আরশের উপর অধিষ্ঠান, অবতরণ ইত্যাদি বিশেষণ তুলনামুক্তভাবে বিশ্বাসকারীদেরকে তাঁরা ঢালাওভাবে ‘মুশাবিবহা’ (তুলনাকারী), ‘মুজাস্সিমা (দেহে বিশ্বাসী) বা কাফির বলে গালি দিয়েছেন। এমনকি এ বিষয়ক আয়াত ও হাদীসের ব্যাখ্যামুক্ত, তুলনামুক্ত ও ‘কাইফ’ বা স্বরূপ সন্ধানমুক্ত অনুবাদ করাকেও তারা একইরূপ বিভ্রান্তি বলে গণ্য করেছেন। এর বিপরীতে সালফ সালিহীনের মত অনুধাবন ও ব্যাখ্যায়ও নানাবিধ প্রান্তিকতা বিদ্যমান। সালাফের অনুসরণের দাবিতে অনেকে আশআরী-মাতুরিদীগণকে ঢালাওভাবে ‘জাহমী’ বলেন। বিশেষণকে ব্যাখ্যামুক্তভাবে গ্রহণ করার পর অতুলনীয়ত্ব ব্যাখ্যায় কিছু বললেও তারা তা বিভ্রান্তি বলে গণ্য করেন।
প্রসিদ্ধ হাম্বালী ফকীহ ও মুহাদ্দিস ইবনুল জাওযী (৫৯৭ হি) উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম হাসান ইবন হামিদ (৪০৩ হি), কাযী আবূ ইয়ালা মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন (৪৫৮ হি), ইবনুয যাগওয়ানী আলী ইবন উবাইদুল্লাহ (৫২৭ হি) প্রমুখ প্রসিদ্ধ হাম্বালী ফকীহ মহান আল্লাহর মুখগহবর, দাঁত, বক্ষ, উরু... ইত্যাদি আছে বলে বিশ্বাস করতেন। ইবনুল জাওযীর বিবরণ থেকে জানা যায় যে, কুরআন, সহীহ হাদীস, যয়ীফ হাদীস, তাবিয়ী যুগের কোনো কোনো আলিমের বক্তব্য সবকিছুকে একইভাবে ‘ওহীর’ মান প্রদানের ফলে তাঁরা এরূপ প্রান্তিকতায় নিপতিত হন। ব্যাখ্যাবিহীন গ্রহণের নামে তাঁরা ওহীর সাথে সংযোজনের মধ্যে নিপতিত হতেন।[1]