নিজ প্রতিবেশীকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্।
যে ব্যক্তি নিজ প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় সে সত্যিকারের মু’মিন নয়।
আবূ শুরাইহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، قِيْلَ: وَمَنْ يَا رَسُوْلَ اللهِ!؟ قَالَ: الَّذِيْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.
‘‘আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন: যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’’। (বুখারী ৬০১৬)
প্রতিবেশীকে কষ্ট দিয়ে জান্নাতে যাওয়া যাবে না।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.
‘‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’’। (মুসলিম ৪৬)
নিজ প্রতিবেশীর প্রতি দয়াশীল হওয়া সত্যিকারের ঈমানের পরিচায়ক।
আবূ হুরাইরাহ্ এবং আবূ শুরাইহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ.
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী সে যেন তার প্রতিবেশীর প্রতি দয়াশীল হয়’’। (মুসলিম ৪৭, ৪৮)
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
قِيْلَ: يَا رَسُوْلِ اللهِ ! إِنَّ فُلَانَةً تُصَلِّيْ اللَّيْلَ وَتَصُوْمُ النَّهَارَ، وَفِيْ لِسَانِهَا شَيْءٌ يُؤْذِيْ جِيْرَانَهَا سَلِيْطَةٌ، فَقَالَ: لَا خَيْرَ فِيْهَا، هِيَ فِيْ النَّارِ.
‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! অমুক মহিলা রাত্রিবেলায় নফল নামায পড়ে এবং দিনের বেলায় নফল রোযা রাখে অথচ সে কর্কশভাষী তথা নিজ মুখ দিয়ে অন্যকে কষ্ট দেয়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত নেই। সে জাহান্নামী’’। (হা’কিম ৪/১৬৬)
জিব্রীল (আঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ প্রতিবেশীর অধিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখতে এতো বেশি তাকিদ দিয়েছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ প্রতিবেশীকে তাঁর ওয়ারিশ বানিয়ে দেয়ার আশঙ্কা পোষণ করেছেন।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَا زَالَ جِبْرِيْلُ يُوْصِيْنِيْ بِالْـجَارِ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ.
‘‘জিব্রীল (আঃ) আমাকে এতো বেশি প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষার অসিয়ত করছিলেন যে, তখন আমার আশঙ্কা হচ্ছিলো হয়তোবা তিনি তাকে আমার ওয়ারিশ বানিয়ে দিবেন’’। (বুখারী ৬০১৫; মুসলিম ২৬২৫)
জিনিস যতই সামান্য হোক না কেন তা প্রতিবেশীকে দিতে লজ্জাবোধ করবেন না। কারণ, কিছু না দেয়ার চাইতে সামান্য দেয়াই ভালো।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন:
يَا نِسَاءَ الْـمُسْلِمَاتِ! لَا تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ.
‘‘হে মুসলিম মহিলারা! কোন প্রতিবেশী তার প্রতিবেশীকে কোন কিছু তা যদিও অতি সামান্য হয় তুচ্ছ মনে করে দেয়া থেকে বিরত থাকবে না এমনকি তা ছাগলের খুরই বা হোক না কেন’’। (বুখারী ৬০১৭; মুসলিম ১০৩০)
জিনিস কম হলে তা নিকটতম প্রতিবেশীকেই দিবে।
‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার দু’জন প্রতিবেশী রয়েছে। অতএব তাদের মধ্য থেকে সর্ব প্রথম আমি কাকে হাদিয়া দেবো? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
إِلَى أَقْرَبِهِمَا مِنْكِ بَابًا.
‘‘নিকটবর্তী প্রতিবেশীকেই হাদিয়া দিবে। যার ঘরের দরোজা তোমারই দরোজার পাশে’’। (বুখারী ৬০২০)