ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
হজ সফরে সহজ গাইড হজ মুহাম্মাদ মোশফিকুর রহমান
১০ যিলহজ: কসর/হলক্ব করা
- হাদী করার পর মাথার সকল অংশ থেকে সমানভাবে চুল ছেঁটে ফেলাকে কসর আর সম্পূর্ণ মাথা মুড়িয়ে বা মুণ্ডন করাকে হলক্ব বলা হয়। তবে মুণ্ডন করাই উত্তম। কুরআনে মাথা মুণ্ডন করার কথা আগে এসেছে আর ছোট করার কথা পরে এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমস্ত মাথা মুণ্ডন করেছিলেন।
- যারা মাথা মুণ্ডন করেছিলেন তাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমত ও মাগফিরাতের দো‘আ করেছেন তিনবার। আর যারা চুল ছোট করেছিলেন তাদের জন্য দো‘আ করেছেন একবার। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ মাথা মুণ্ডন করবে ও কেউ কেউ চুল ছোট করবে।’’ হাদীসে এসেছে, ‘‘আর তোমরা মাথা মুণ্ডন কর, এতে প্রত্যেক চুলের বিনিময়ে একটি ছাওয়াব ও একটি গুনাহের ক্ষমা রয়েছে”।[1]
- রাস্তায় দেখবেন অনেকে হাতে ইলেকট্রিক রেজার বা ট্রিমার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হজের এই সময়ে চুল কাটাতে ২০-৫০ রিয়াল পর্যন্ত দাবি করবে তারা। দু’মিনিটে আপনার মাথার পুরো চুল ফেলে দিবে। নাপিতকে ডান দিক থেকে চুল কাটা শুরু করতে বলুন। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এমনটি করেছেন। নিজেদের কাছে রেজার বা ক্ষুর থাকলে আপনারা একে অপরের চুল ফেলে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে যে ব্যক্তি কারো চুল ফেলবেন তার চুল আগে ফেলা থাকা জরুরী নয়।[2]
- মহিলারা তাদের মাথার সমগ্র চুলের অগ্রভাগ হতে তর্জনী আঙ্গুলের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ কাটবেন (প্রায় এক ইঞ্চি)। নারীদের জন্য হলক নেই। নারীদের মাথা মুণ্ডন করা হারাম।[3]
- এবার আপনি আপনার ইহরামের কাপড় খুলে ফেলুন, গোসল করে সাধারণ কাপড় পড়ুন। ইহরাম থেকে হালাল হওয়া হজের ওয়াজিব কাজ। একে বলে তাহাল্লুল আল আসগার বা প্রাথমিক হালাল। এখন আপনার ওপর থেকে যৌন সঙ্গম ছাড়া ইহরামের সকল নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল। আপনি এখন দেহে সুগন্ধীও ব্যবহার করতে পারেন।[4]
- হালাল হওয়ার পর আপনি ইচ্ছা করলে ১০ যিলহজ মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে ইফাদাহ ও সা‘ঈ করে সন্ধ্যা বা মধ্য রাতের আগেই মিনায় চলে আসুন। আর যদি ঐ দিন বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েন তবে রাতটি মিনায় অবস্থান করতে পারেন এবং ১১/১২ যিলহজ দিনের বেলায় কোনো এক সময় মক্কায় গিয়ে তাওয়াফ করতে পারেন। তাকবীরে তাশরিক পাঠ অব্যাহত রাখুন।
[1] সূরা আল-ফাতাহ, ৪৮:২৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৮
[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৯৮
[3] তিরমিযী (৩/২৫৭)
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৪২
[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৯৮
[3] তিরমিযী (৩/২৫৭)
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৪২