এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপন চাচা আব্বাস (রাঃ)-কে নির্দেশ প্রদান করলেন সাহাবীগণ (রাঃ)-কে উচ্চৈঃস্বরে আহবান জানাতে। (তিনি ছিলেন দরাজ কণ্ঠ বিশিষ্ট)। আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত উচ্চ কণ্ঠে আহবান জানালাম, ‘ওহে বৃক্ষ-তলের ব্যক্তিবর্গ। (বাইয়াত রিযওয়ানে অংশ গ্রহণকারীবৃন্দ) কোথায় আছ? আল্লাহর কসম! আমার কণ্ঠ শ্রবণ করা মাত্র তারা এমনভাবে ফিরে এল বাচ্চার ডাক শুনে গাভী যেমনটি ফিরে আসে এবং উত্তরে বলল, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমরা আসছি’। এ সময় এমন এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যে কোন ব্যক্তি যদি তাঁর উটকে ফিরানোর চেষ্টা করেও ফিরাতে সক্ষম না হলে তিনি নিজ লৌহ বর্ম তার গলায় নিক্ষেপ করে নিজ ঢাল ও তলোয়ার সামলিয়ে নিয়ে উটের পিঠ থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়ত এবং উটকে ছেড়ে দিয়ে এ শব্দের দৌড় দিতে থাকত। এভাবে সমবেত হয়ে যখন নাবী কারীম (ﷺ)-এর নিকট একশ লোকের সমাবেশ ঘটল তখন তাঁরা শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ আরম্ভ করে দিলেন।
এরপর শুরু হল আনসারদের প্রতি আহবান, ‘এসো, এসো আনসারের দল দ্রুত এগিয়ে এসো।’ আনসারদের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত এ আহবান বনু হারিস বিন খাযরাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। এ দিকে মুসলিম সৈন্যগণ যে গতিতে যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করে গিয়েছিলেন[1] ঠিক সে গতিতেই পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে আগমন করতে থাকলেন। দেখতে দেখতে কিছুক্ষণের মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে কালো ধোঁয়ার স্রোতের ন্যায় তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুদ্ধের ময়দানের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন, ‘এখন চুলা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।’ প্রকৃত পক্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে তখন চরম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। অতঃপর তিনি জমিন থেকে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে তা শত্রুদের প্রতি নিক্ষেপ করে দিয়ে বললেন, ‘শাহাতিল উজুহ’ ‘মুখমণ্ডল বিকৃত হোক’। এ এক মুষ্টি মাটি এমনভাবে বিস্তার লাভ করল যে, শত্রুপক্ষের এমন কোন লোক ছিল না যার চক্ষু এ মাটি দ্বারা পরিপূর্ণ হয়নি। এরপর থেকে তাদের যুদ্ধোন্মাদনা ক্রমে ক্রমে স্তিমিত হতে থাকে এবং তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যায়।