আবুল হুক্বাইক্বের দু’ ছেলে এ সন্ধি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে অনেক সম্পদ গোপনে সরিয়ে নেয়। তারা একটি চামড়াও উধাও করে দেয় যার মধ্যে অনেক সম্পদ এবং হুয়াই বিন আখতাবের অলঙ্কারাদি ছিল। হুয়াই বিন আখতাব মদীনা হতে বনু নাযিরের বিতাড়নের সময় এ সকল অলঙ্কারাদি সঙ্গে এনেছিল।
ইবনু ইসহাক্বের বর্ণনায় আছে যে, যখন কিনানাহ বিন আবিল হুক্বাইক্বকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট নিয়ে আসা হল, তখন তার নিকট বনু নাযিরের সম্পদ গচ্ছিত ছিল। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন তখন সে তার জানার ব্যাপারটি সরাসরি অস্বীকার করে বলল যে, এ গচ্ছিত সম্পদের স্থান সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। এরপর একজন ইহুদী এসে বলল যে, ‘আমি কেনানকে প্রতিদিন এ বিজন প্রান্তরের কোন এক স্থানে ঘোরাফিরা করতে দেখি।’
ইহুদীর এ কথার প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কিনানাহকে বললেন, (أَرَأَيْتَ إِنْ وَجَدْنَاهُ عِنْدَكَ أَأَقْتُلُكَ؟) ‘এ কথা বল যে, যদি এ গচ্ছিত সম্পদ আমরা তোমার নিকট থেকে বাহির করে নিতে পারি তাহলে তোমাকে হত্যা করব কি না?’
সে বলল, ‘জী হ্যাঁ’।
সাহাবীগণ (রাঃ) সেই প্রান্তর খননের নির্দেশ দিলেন। অতঃপর সেখান থেকে কিছু সম্পদ পাওয়া গেল।
অবশিষ্ট সম্পদ সম্পর্কে নাবী কারীম (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করলে আগের মতোই সে অস্বীকার করল। ফলে তার শাস্তি বিধানের জন্য তাকে যুবাইরের হস্তে সমর্পণ করা হল এবং এ কথাও বলা হল যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত সম্পদ আমাদের হস্তগত হবে না ততক্ষণ শাস্তিদান অব্যাহত থাকবে।
যুবাইর (রাঃ) চকমকি পাথর দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করতে থাকেন যার ফলে জীবন মরণ সন্ধিক্ষণের অবস্থা সৃষ্টি হল তার। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুহাম্মাদ বিন মাসলামার হস্তে তাকে সমর্পণ করেন। তিনি মাহমুদ বিন মাসলামাহর হত্যার বদলাস্বরূপ তার গ্রীবা কর্তন করে তাকে হত্যা করেন। (মাহমুদ ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে নায়িম দূর্গের দেয়ালের পাশে বসেছিলেন। এমনি সময়ে এ ব্যক্তি তাঁর উপর একটি চাক্কির পাট নিক্ষেপ করে তাঁকে হত্যা করে।)
ইবনুল কাইয়্যেমের বর্ণনা সূত্রে জানা যায় যে, রাসূলে কারীম (ﷺ) আবুল হুক্বাইক্বের দু’জন ছেলেকে হত্যা করেছিলেন। ঐ দুজনের বিরুদ্ধে সম্পদ গোপন করার সাক্ষ্য দিয়েছিল কিনানাহর চাচাত ভাই। এরপর রাসূলে কারীম (ﷺ) হুয়াই বিন আখতাবের কন্যা সাফিয়্যাহকে বন্দী করেন। সে ছিল কিনানাহ বিন আবিল হুক্বাইক্বের স্ত্রী এবং তখনো সে নববধূ ছিল এ অবস্থায় তার বিদায় দেয়া হয়েছিল।