আল্লাহর জমীনে দ্বীন কায়েম করার ব্যাপারে আল্লাহর তরফ থেকে মানুষের উপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তৎসম্পর্কিত বোধকে শক্তিশালী এবং কর্মমুখী করার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম হচ্ছে পরকালীন জীবনে বিশ্বাস। সাহাব কিরাম (রাঃ) এ কথার উপর অটল বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন যে, পরকালীন জীবনে বিচার দিবসে তাদিগকে অবশ্যই রাববুল আলামীনের নিকট নিজেদের কার্যকলাপের সূক্ষ্ণাতিসূক্ষ্ণ হিসাব দিতে হবে। পুণ্যবানগণ অনন্ত সুখশান্তির চিরস্থায়ী আবাস জান্নাতে চিরকাল মহাসুখে বসবাস করতে থাকবেন। পক্ষান্তরে, পাপীতাপীগণ দুঃখ কষ্ট ও যন্ত্রণার আবাসস্থল জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়ে অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকবে। তাই তারা সর্বক্ষণ কল্যাণমুখী কাজকর্মে লিপ্ত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা জান্নাত লাভের আশায় উন্মুখ হয়ে থাকতেন। অন্যদিকে তেমনি মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টি জাহান্নামের আযাবের ভয়ে অস্থির হয়ে থাকতেন। যেমনটি নিম্নোক্ত আয়াতে কারীমায় বর্ণিত হয়েছে।
(يُؤْتُوْنَ مَا آتَوْا وَّقُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلٰى رَبِّهِمْ رَاجِعُوْنَ) [المؤمنون:60]
‘‘যারা তাদের দানের বস্তু দান করে আর তাদের অন্তর ভীত শংকিত থাকে এ জন্যে যে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে।’ (আল-মু’মিনূন ২৩ : ৬০)
এ বিষয়েও তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ, বিত্তবৈভব ও ভোগবিলাস, পরলৌকিক জীবনের সে সবের তুলনায় মশার একটি পাখার সমতুল্যও নয়। তাঁদের এ বিশ্বাস এতই দৃঢ়মূল ছিল যে, এর সামনে পৃথিবীর যাবতীয় সমস্যা দুঃখ কষ্ট জুলম নির্যাতন সব ছিল অত্যন্ত তুচ্ছ ব্যাপার। কাজেই জুলম নির্যাতনের মাত্রা যতই বৃদ্ধি পেয়েছে তাঁদের ইয়াকীন (বিশ্বাস) এবং সহনশীলতাও ততোধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে যা কাফির মুশরিক বিরোধীপক্ষকে হতভম্ব ও হতবাক করে দিয়েছে।