ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম ঈমান শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
প্রশ্ন: (৪৬) দুনিয়ার স্বার্থ হাসিলের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করার হুকুম কী?

উত্তর: দুনিয়ার সম্পদ অর্জনের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করা হারাম। এখানে জানা দরকার যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসাকারীগণ দু’ভাগে বিভক্ত।

১) বাড়াবাড়ি ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করাতে অসুবিধা নেই। অর্থাৎ তাঁর চরিত্রে যে সমস্ত সৎ গুণাবলী রয়েছে, তা বর্ণনা করাতে কোনো দোষ নেই।

২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করা। তিনি এটা নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন,

«لَا تُطْرُونِي كَمَا أَطْرَتِ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ فَقُولُوا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ»

“নাসারা সম্প্রদায় যেমনভাবে ঈসা ইবন মারইয়ামের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছিল, তোমরা সেভাবে আমার প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করো না। আমি একজন আল্লাহর বান্দা। সুতরাং তোমরা আমাকে আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল বল”।[1]

অতএব, যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা এভাবে করবে যে, তিনি আশ্রয় প্রার্থীদের আশ্রয় দাতা, বিপদ গ্রস্থের আহ্বানে সাড়া দানকারী, তিনি দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক, তিনি গায়েবের খবর জানেন ইত্যাদি বাক্য দ্বারা প্রশংসা করা হারাম; বরং কখনো ইসলাম থেকে বহিস্কারকারী শির্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সুতরাং বেশি বাড়াবাড়ি করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করা ঠিক নয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে দুনিয়ার স্বার্থ অর্জন করা হারাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সমস্ত উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী ও প্রশংসিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন, তা বর্ণনা করা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত। আর যে জিনিস ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত তাকে দুনিয়া অর্জনের মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করা জায়েয নয়।

﴿مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيۡهِمۡ أَعۡمَٰلَهُمۡ فِيهَا وَهُمۡ فِيهَا لَا يُبۡخَسُونَ ١٥ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيۡسَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٦﴾ [هود: ١٥، ١٦]

“যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে আমি তাদেরকে দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবেনা। এরাই হলো সেসব লোক, আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া অন্য কিছু নেই। তারা দুনিয়াতে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছে আর যা কিছু উপার্জন করেছিল, সবই বিনষ্ট হয়েছে।” [সূরা হূদ, আয়াত: ১৫-১৬] আল্লাহই সঠিক পথের সন্ধান দাতা।

>
[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: কিতাবু আহাদীসুল আম্বিয়া।