নাজরানের এই প্রতিনিধি দল ১০ম হিজরীতে শাওয়াল অথবা যুলক্বা‘দাহ মাসে মদীনায় আসে। ইতিপূর্বে রবীউল আখের বা জুমাদাল ঊলা মাসে উক্ত অঞ্চলে হযরত খালেদ ইবনে অলীদকে পাঠানো হয় এবং নির্দেশ দেওয়া হয় যুদ্ধের পূর্বে তাদেরকে তিনবার করে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দেওয়ার জন্য। সেমতে খালেদ সেখানে গিয়ে উক্ত সম্প্রদায়ের চারপাশ থেকে সওয়ারী হাঁকিয়ে তাদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেন এবং বলেন, হে লোক সকল! তোমরা ইসলাম কবুল কর। তাহ’লে নিরাপদ থাকবে’। তখন সবাই ইসলাম কবুল করে। অতঃপর তিনি সেখানে কিছুদিন অবস্থান করেন ও তাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেন।
এ খবর জানার পর রাসূল (ছাঃ) তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে মদীনায় নিয়ে আসতে বলেন। সেমতে বনুল হারেছ বিন কা‘ব-এর নেতৃত্বে অত্র প্রতিনিধি দল রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে মুলাক্বাতের জন্য মদীনায় আসে। যাদের মধ্যে ক্বায়েস ইবনুল হুছায়েন(قَيْس بن الْحُصَين) আব্দুল্লাহ বিন কুরাদ(عَبْدُ اللهِ بْنُ قُرَاد) এবং শাদ্দাদ বিন আব্দুল্লাহ(شَدَّادُ بْنُ عَبْدِ الله) অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে রাসূল (ছাঃ) জিজ্ঞেস করেন, জাহেলী যুগে যারাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত, তারাই পরাজিত হ’ত, এর কারণ কি ছিল? জবাবে তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কখনোই আগ বেড়ে কাউকে হামলা করতাম না বা যুলুমের সূচনা করতাম না। কিন্তু যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হ’লে আমরা দৃঢ় থাকতাম, ছত্রভঙ্গ হতাম না’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ঠিক বলেছ। এটাই মূল কারণ’।[1]
[শিক্ষণীয় : (১) সেনাপতি হৌন আর আলেম হৌন, মুসলমান মাত্রই ইসলামের প্রচারক। সেনাপতি খালেদ (রাঃ)-এর ভূমিকা তার অন্যতম প্রমাণ। (২) যুলুমের সূচনাকারী অবশেষে পরাজিত হয়, এটাই বাস্তব। (৩) আক্রান্ত হ’লে সংঘবদ্ধভাবে ও দৃঢ়তার সাথে মুকাবিলা করার মধ্যেই বিজয় লুকিয়ে থাকে।]