ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
বনু নাযীর যুদ্ধ (غزوة بني النضير) (৪র্থ হিজরীর রবীউল আউয়াল মোতাবেক ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট মাস)

ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি চরম বিদ্বেষী মদীনার ইহূদী গোত্রগুলির অন্যতম ছিল বনু নাযীর(بَنُو النَضِيرِ) গোত্র। এরা নিজেদেরকে হযরত হারূণ (আঃ)-এর বংশধর বলে দাবী করত। তারা বায়তুল মুক্বাদ্দাস অঞ্চল থেকে বিতাড়িত হবার পর মদীনায় হিজরত করেছিল। তাদের মধ্যে অনেক পন্ডিত ছিল। তারা তওরাতে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে ঠিকই চিনেছিল। কিন্তু তিনি বনু ইস্রাঈল বংশের না হয়ে বনু ইসমাঈল বংশের হওয়ায় তারা তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং সর্বপ্রকার শত্রুতায় লিপ্ত হয়। হুওয়াই বিন আখত্বাব, সাল্লাম বিন আবুল হুক্বাইক্ব, কিনানাহ বিন রবী‘, সাল্লাম বিন মিশকাম প্রমুখ ছিল এদের নেতা। অর্থ-বিত্তে ও অস্ত্র-শস্ত্রে সমৃদ্ধ হ’লেও তারা কখনো সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হ’ত না। ভীরু ও কাপুরুষ হওয়ার কারণে সর্বদা শঠতা-প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের কূট কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকতো। ২য় হিজরীতে বদর যুদ্ধের এক মাস পরে অন্যতম ইহূদী গোত্র বনু ক্বায়নুক্বার বিতাড়ন ও ৩য় হিজরীর মধ্য রবীউল আউয়ালে ইহূদী নেতা কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের ফলে তাদের মধ্যে সাময়িকভাবে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল। সেকারণ তারা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করেছিল। কিন্তু ৩য় হিজরীর শাওয়াল মাসে ওহোদ যুদ্ধে বিপর্যয়ের ফলে তারা তা কার্যতঃ ভঙ্গ করে। তারা পুনরায় মদীনার মুনাফিক ও মক্কার মুশরিক নেতাদের সাহায্য করার মাধ্যমে চক্রান্তমূলক তৎপরতা শুরু করে দেয়। সব জানা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পূর্বের সন্ধিচুক্তির কারণে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে সবকিছু হযম করতেন। কিন্তু ইতিমধ্যে তারা খোদ রাসূল (ছাঃ)-কেই হত্যার ষড়যন্ত্র করে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে।