ইমামের তকবীর পড়তে শুরু করার পর কেউ জামাআতে শামিল হলে, সে প্রথমে তাহরীমার তকবীর দিবে। অতঃপর বাকী তকবীরে ইমামের অনুসরণ করবে এবং ছুটে যাওয়া আগের তকবীরগুলো মাফ হয়ে যাবে।[1]
ইমামকে রুকূ অবস্থায় পেলে তাহরীমার তকবীর দিয়ে (সময় আছে বুঝলে রুকূর তকবীর দিয়ে) রুকূতে যাবে। যেহেতু তকবীরগুলো শেষ হওয়ার পর সে শামিল হয়েছে এবং তার যথাস্থানও ছুটে গেছে, তাই তা আর কাযা করতে হবে না।[2]
পক্ষান্তরে যদি কেউ কওমায় বা তার পরে জামাআতে শামিল হয়, তাহলে ইমামের দ্বিতীয় রাকআত তার প্রথম ধরে ইমাম সালাম ফিরে দিলে উঠে সে নিজের দ্বিতীয় রাকআত পূরণ করে নেবে এবং ইমাম দ্বিতীয় রাকআতে যেভাবে নামায পড়েছেন, ঠিক সেভাবেই ঐ রাকআত কাযা করবে।[3]
কেউ তাশাহহুদে এসে জামাআতে শামিল হলে ইমামের সাথে তাশাহহুদ পড়ে তাঁর সালাম ফিরার পর উঠে যথা নিয়মে সমস্ত তকবীর সহ ২ রাকআত নামায আদায় করে নেবে।[4]
অনুরূপ যদি কারো জামাআতই ছুটে যায়, তাহলে সেও দুই রাকআত নামায কাযা পড়ে নেবে। ইমাম বুখারী বলেন, ‘বাবঃ কারো ঈদের নামায ছুটে গেলে ২ রাকআত নামায পড়ে নেবে। তদনুরূপ মহিলা এবং যারা ঘরে ও গ্রামে থেকে যায় তারাও। যেহেতু নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘এ হল আমাদের ঈদ, হে মুসলিমগণ!’’ একদা আনাস বিন মালেক (রাঃ) তাঁর স্বাধীনকৃত দাস ইবনে আবী উতবাহকে আদেশ করলেন, তিনি তাঁর পরিবার ও ছেলেদেরকে জমায়েত করে শহরবাসীদের মতই তকবীর দিয়ে নামায পড়লেন।’[5]
অনুরূপভাবে ইমামের সাথে আনাস (রাঃ)-এর ঈদের নামায ছুটে গেলে নিজের পরিবারবর্গকে জমা করে ইমামের মতই সে নামায পড়ে নিতেন।[6] এই মত গ্রহণ করেছেন ইমাম আত্বা,[7] হাসান, ইবরাহীম, আবু ইসহাক, হাম্মাদ প্রমুখ সলফগণ।[8]
পক্ষান্তরে ঈদ হওয়ার খবর সূর্য ঢলার পর জানতে পারা গেলে, রোযা ভেঙ্গে সেদিন নামায না পরে পরের দিন সকালে যথা সময়ে নামায কাযা পড়তে হবে। উমাইর বিন আনাস তাঁর আনসারী চাচাদের কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন, তাঁরা বলেন, ‘একদা শওয়ালের (ঈদের) চাঁদ দেখার দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার ফলে চাঁদ না দেখা গেলে আমরা (তার পর দিন) রোযা রাখলাম। দিনের শেষভাগে একটি কাফেলা এসে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে সাক্ষি দিল যে, তারা গতকাল চাঁদ দেখেছে। তিনি লোকদের সেদিনের রোযা ভাঙ্গতে এবং পরের দিন সকালে ঈদের নামাযের জন্য বের হতে আদেশ দিলেন।’[9]
[2] (ঐ ১১পৃঃ)
[3] (ইবনে আবী শাইবাহ ৫৮১২নং)
[4] (মুগনী ৩/২৮৫)
[5] (বুখারী ১৯৫পৃঃ, ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ ৫৮০২নং)
[6] (ফাতহুল বারী ২/৫৫১, কিন্তু আল্লামা আলবানী এটিকে যয়ীফ বলেছেন। ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬৪৮নং দ্রঃ)
[7] (বুখারী ১৯৫পৃঃ, ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ ৫৮০১নং)
[8] (ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ ৫৮০৬-৫৮০৯নং)
[9] (আহমাদ, মুসনাদ ৫/৫৭, আবূ দাঊদ ১১৫৭, নাসাঈ ১৫৫৬, ইবনে মাজাহ ১৬৫৩, ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, দারাকুত্বনী, সুনান, বাইহাকী ৩/৩১৬, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬৩৪নং)