অল্প-বিস্তর যে কোন খাবার খেলেই সেহরী খাওয়ার বিধি পালিত হয়ে যাবে। এমনকি কেউ যদি এক ঢোক দুধ, চা অথবা পানিও খায় অথবা ২/১টি বিস্কুট বা খেজুরও খায়, তাহলে তারও সেহরী খাওয়ার সুন্নত পালন হয়ে যাবে। আর এই সামান্য পরিমাণ খাবারেই রোযাদার এই বিরাট ফরয রোযা পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর আনুগত্য করতে বল পাবে এবং ফিরিশ্তাবর্গ তার জন্য দুআ করবে।
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘সেহরী খাওয়াতে বর্কত আসে। সুতরাং তোমরা তা খেতে ছেড়ো না; যদিও তাতে তোমরা এক ঢোক পানিও খাও। কেননা, যারা সেহরী খায় তাদের জন্য আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফিরিশ্তা দুআ করতে থাকেন।’’[1]
তিনি আরো বলেন, ‘‘তোমরা সেহরী খাও; যদিও এক ঢোক পানি হয়।’’[2]
আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘মুমিনের শ্রেষ্ঠ সেহরী হল খেজুর।’’[3]
অবশ্য সেহরী খাওয়াতে বাড়াবাড়ি করা উচিৎ নয়। কারণ, বেশী পানাহার করার ফলে ইবাদত ও আনুগত্যে আলস্য সৃষ্টি হয়।
কিছু লোক আছে, যারা গলায় গলায় ভ্যারাইটিজ পানাহার করে এমনভাবে পেট পূর্ণ করে নেয় যে, মনে হয় তার শবাসকষ্ট হচ্ছে। যার ফলে ফজরের নামাযে বড় আলস্য ও শৈথিল্যের সাথে উপস্থিত হয় এবং মসজিদে আল্লাহর যিক্রের জন্যও সামান্য ক্ষণ বসতে সক্ষম হয় না। আর দিনের বেলায় পেটের বিভিন্ন প্রকার কমপে½নের শিকার হয়। অথচ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘উদর অপেক্ষা নিকৃষ্টতর কোন পাত্র মানুষ পূর্ণ করে না। আদম সন্তানের জন্য ততটুকুই খাদ্য যথেষ্ট, যতটুকুতে তার পিঠ সোজা করে রাখে। আর যদি এর চেয়ে বেশী খেতেই হয় তাহলে যেন সে তার পেটের এক তৃতীয়াংশ আহারের জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানের জন্য এবং অন্য আর এক তৃতীয়াংশ শবাস-প্রশবাসের জন্য ব্যবহার করে।’’[4]
[2] (আহমাদ, মুসনাদ, ইবনে হিববান, সহীহ প্রমুখ, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ২৯৪৫নং)
[3] (আবূ দাঊদ ২৩৪৫ নং, ইবনে হিববান, সহীহ, বাইহাকী ৪/২৩৬-২৩৭, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৫৬২নং)
[4] (আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযী ২৩৮০, ইবনে মাজাহ ৩৩৪৯, ইবনে হিববান, সহীহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ৪/১২১, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২২৬৫, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৫৬৭৪নং)