ভন্ড ও মিথ্যুক মুসায়লামা কাজ্জাবের পক্ষ হতে দু’জন দূত রসূল (ﷺ) এর নিকট আগমণ করে বলতে লাগল, আমরা বলি যে, মুসায়লামা আল্লাহর রসূল, তখন রসূল (ﷺ) বললেন- দূত হত্যা করা যদি নীতি বহির্ভূত না হত, তাহলে আমি তোমাদের উভয়কে হত্যা করতাম। নাবী (ﷺ) হতে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, কুরাইশরা যখন আবু রাফেকে তাঁর নিকট দূত হিসাবে প্রেরণ করল, তখন আবু রাফে রসূল (ﷺ)-এর কাছেই থেকে যেতে চাইল এবং কুরাইশদের কাছে ফেরত যেতে অস্বীকার করল। তিনি তখন বললেন- আমি চুক্তি ও অঙ্গিকার ভঙ্গ করতে চাইনা এবং দূত ও প্রতিনিধিদেরকে আটকিয়েও রাখিনা। তুমি ফেরত যাও। ইসলামের প্রতি তোমার অন্তরে এখন যে ভালবাসা আছে, তা যদি স্থায়ী থাকে, তাহলে পুনরায় চলে এসো।
সহীহ হাদীছে আরও বর্ণিত আছে যে, হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্ত মোতাবেক তিনি আবু জান্দালকে কুরাইশদের নিকট ফেরত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কোন মহিলাকে তিনি কাফেরদের নিকট ফেরত পাঠান নি। সুবাইআ আসলামী নামক একজন মহিলা যখন মুসলমান হয়ে নাবী (ﷺ)-এর নিকট আগমণ করল, তখন তার স্বামী তাকে ফেরত নেওয়ার জন্য আগমণ করল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুরআনের এই আয়াত নাযিল হয়।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لا هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ وَآتُوهُمْ مَا أَنْفَقُوا وَلا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ وَلا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ وَاسْأَلُوا مَا أَنْفَقْتُمْ وَلْيَسْأَلُوا مَا أَنْفَقُوا ذَلِكُمْ حُكْمُ اللهِ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ وَاللهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
‘‘হে মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ্ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিওনা। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবেনা। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখোনা। তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়’’।[1] অতঃপর রসূল (ﷺ) তার কাছ থেকে শপথ নিলেন যে, ইসলামের প্রতি ভালবাসার কারণেই তিনি ঘর ছেড়ে চলে এসেছেন। এমনটি নয় যে, তার গোত্রে কোন অপরাধ করে কিংবা স্বামীর সাথে ঝগড়া করে এবং তাকে ঘৃণা করার কারণেই চলে এসেছেন। তিনি এই মর্মে শপথ করলেন। তাই রসূল (ﷺ) ঐ মহিলার স্বামীকে বিবাহের সময় প্রদত্ত মোহরানা ফেরত দিলেন। কিন্তু মহিলাকে তার নিকট ফেরত দেন নি।